একাত্তরলাইভ ডেস্ক: সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে এবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর (শোন অ্যারেস্ট) আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম (এসিএএম) আসাদুজ্জামান নূর এ আবেদন মঞ্জুর করেন।
রাজধানীর গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জিয়াউল ইসলাম ডিজিটাল আইনে করা মামলায় মইনুলকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। আদালতে শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য ছিল।
উল্লেখ্য নারী সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্যের অভিযোগে হওয়া কয়েকটি মামলায় কারাগারে রয়েছেন ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন।
২৪ অক্টোবর ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস সামশ জগলুল হোসেনের আদালতে মইনুলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এ মামলাটি করেন আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া উপ-কমিটির সদস্য সুমনা আক্তার লিলি।
আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করার জন্য গুলশান থানাকে নির্দেশ দেন। ২৬ অক্টোবর গুলশান থানা মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করেন। ২৭ অক্টোবর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত এজাহারটি গ্রহণ করেন।
সুমনা আক্তার মামলার অভিযোগে বলেন, আমি বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত। নারী ও শিশুদের মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করছি। গত ১৬ অক্টোবর নিজ বাসায় বেসরকারি ৭১ টেলিভিশনের টকশো দেখছিলাম। অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে মাসুদা ভাট্টির প্রশ্নের জবাবে আইনজীবী মইনুল তাকে ‘চরিত্রহীন’ বলে মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, মইনুল হোসেন এ মন্তব্য নারী জাতির সম্মানহানি ঘটিয়েছেন। অথচ তিনি ক্ষমা চাননি। বরং গত ২১ অক্টোবর বিকেল ৩টা থেকে ২২ অক্টোবর রাত ৯টার মধ্যে পুনরায় একটি টেলিফোন অডিও রেকর্ড ডিজিটাল ডিভাইসে প্রকাশ করেন। মইনুল হোসেন নিজে অডিও রেকর্ডটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন ইংরেজি দৈনিক নিউ নেশন পত্রিকার প্যাডে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মাসুদা ভাট্টি সম্পর্কিত বিতর্কিত ব্যাখ্যার আড়ালে পুনরায় ফেসবুকে মাসুদা ভাট্টির ব্যক্তিগত চরিত্র জঘন্য বলে মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য, গত ১৬ অক্টোবর একাত্তর টেলিভিশনের টকশোতে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টির এক প্রশ্নে রেগে গিয়ে মইনুল হোসেন বলেন, ‘আপনার দুঃসাহসের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দিচ্ছি। আপনি ‘চরিত্রহীন’ বলে আমি মনে করতে চাই। আমার সঙ্গে জামায়াতের কানেকশনের কোনো প্রশ্নই নেই। আপনি যে প্রশ্ন করেছেন, তা আমার জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর।’
মইনুলের এ ধরনের বাক্য ব্যবহারে সমালোচনা শুরুর পর তার বিরুদ্ধে ঢাকাসহ দেশের বেশ কয়েকটি এলাকায় মানহানির মামলা হয়। এর মধ্যে কয়েকটিতে তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন।
গত ২২ অক্টোবর এ ঘটনায় রংপুরের করা একটি মামলায় মইনুকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। পরে ২৩ অক্টোবর মামলায় ঢাকা মহানগর হাকিম (এসিএমএম) কায়সারুল ইসলাম তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান।