সম্পাদকীয়
আজ নির্বাচন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। মানুষের দৃষ্টি এখন ভোটবাক্সের দিকে। অপেক্ষা করছে একটি নতুন সূর্যের আলোকে স্পর্শ করার জন্য। যে আলো তাদের নিয়ে যাবে নতুন একটি সরকার গঠনের দ্বারপ্রান্তে।
তফসিল ঘোষণার আগে ও পরে রাজনৈতিক দলসমূহের মাঝে বাকবিতণ্ডা হয়েছে, ঝগড়া-বিবাদ হয়েছে। অল্পবিস্তর রক্তপাতের ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু নির্বাচনের গতিতে এক বিন্দুও আঁচড় লাগেনি। পালে হাওয়া লাগলে নৌকার গতিটা যে রকম বৃদ্ধি পায়, নির্বাচনের পালে বাতাসের সে রকম গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, মানুষ এবার একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন প্রত্যক্ষ করবে।
এবারের নির্বাচনে দেশের প্রায় প্রতিটি দল অংশগ্রহণ করছে। অর্থাৎ এটি যে সব দলের অংশগ্রহণে একটি নির্বাচন হতে যাচ্ছে, সে কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়। সিইসি কে এম নুরুল হুদা বলেছেন, ব্যাপকসংখ্যক ও সর্বাধিক প্রার্থী এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। তবে নির্বাচন মাঠে অভিযোগের শেষ নেই।
বিশেষ করে বিএনপি ও বিরোধী পক্ষের অভিযোগ অনেক। কমিশন তাদের সব অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণের জন্য সময়ের অপেক্ষায় রয়েছেন। ভোটগ্রহণ ও ফলাফল ঘোষণার পর সব অভিযোগের চাদর অপসারিত হবে। আমরা প্রমাণ করব, ভুল তথ্যের ওপর এত দিন অভিযোগগুলো দাঁড়িয়েছিল। নির্বাচন কমিশন প্রস্তুত এবং ভোটাররা সবাই উৎসবমুখর ও আনন্দঘন পরিবেশে ভোট দেবেন।
এদিকে নির্বাচনে বিবদমান পক্ষগুলোর শঙ্কা-সংশয় দূর করতে ইতোমধ্যেই নির্বাচনের মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী। ক্ষমতাসীন দলের বাইরে নির্বাচনে থাকা বিএনপিসহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলো সেনাবাহিনীকে নির্বাচনে নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে যুক্ত করার দাবি করে এসেছে। শেষ দিকে এসে হলেও নির্বচন কমিশন তাদের এ দাবির যথাযথ মূল্যায়ন করেছে।
আইএসপিআর জানিয়েছে, সারা দেশে ৩৮৯ উপজেলায় সেনাবাহিনী থাকবে ভোট গ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশের সময়। সেনাবাহিনী নামানোর প্রশ্নে নির্বাচনের দুই পরাশক্তি পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করে। আওয়ামী লীগ সমর্থিত জোট বলেছে না। আর বিএনপি সমর্থিত জোটের দাবি ছিল সেনাবাহিনী চাই। তবে নির্বাচনের নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে নির্বাচন কমিশন বাহিনী নামানোর পক্ষে রায় দেয় এবং পরবর্তিতে তা কার্যকর করা হয়।
তবে এ কথা সত্য, নির্বাচন নিয়ে মানুষের মনে যেমন কৌতূহল আছে, ঠিক একইভাবে শঙ্কার উপস্থিতিও কম নয়। আমরা মনে করি, আজ সূর্যোদয়ের সূর্যালোকের সঙ্গে সঙ্গে সব শঙ্কা দূরীভূত হয়ে একটি শঙ্কামুক্ত পরিবেশ তৈরি হবে। মানুষ একটি উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিয়ে বাড়ি ফেরবেন। আর গণতন্ত্র জয়যুক্ত হবে।