একাত্তলাইভ ডেস্ক: নিজেকে সুস্থ রাখার জন্য দৈনিক পর্যাপ্ত পানি পান করা দরকার। একজন সুস্থ মানুষের প্রতিদিন অন্তত আট গ্লাস পানি পান করা উচিত। অনেক সময় কাজের ব্যস্ততার কারণে আমরা পানি পান করতে ভুলে যাই। পরে একসঙ্গে অনেকখানি পানি পান করি। এটা ঠিক নয়। এতে করে পানি পান করা হয় ঠিকই কিন্তু শরীরে পানির সমতা বজায় থাকে না।অনেক সময় পানি পান করতে বিরক্ত লাগে। প্রথম গ্লাসের পর দ্বিতীয় গ্লাস পানিটি পান করা খুব কষ্টসাধ্য মনে হয়। শরীরে পানির সমতা বজায় রাখার জন্য যে আপনাকে সরাসরি শুধু পানিই পান করতে হবে, ব্যাপারটি আসলে তেমন নয়। পানিতে পরিপূর্ণ এমন খাবার অর্থাৎ ফল খেয়েও আপনি আপনার শরীরের পানির চাহিদা পূরণ করতে পারেন।আর যদি গদবাঁধা নিয়মে পানি পান করতে ইচ্ছা না করে তাহলে নিচের পদ্ধতিগুলো একবার হলেও অনুসরণ করে দেখুন।
১) গ্লাস পরিবর্তন
আপনি আপনার পানি পান করার গ্লাসটি পরিবর্তন করতে পারেন। আপনার অফিসে বা বাসায়, যে ধরনের ছাপা ওয়ালা গ্লাস আপনি পছন্দ করেন সেটি রেখে দিন। তাহলে পছন্দের গ্লাসে পানি পানের নতুন আগ্রহ তৈরি হবে।
২) কফি পরিহার করুন
এক কাপ কফি অথবা এক গ্লাস কোলা খেলে পানির তৃষ্ণা মেটে কিন্তু তাতে পানির সমতা ঠিক থাকে না। কফিতে প্রচুর ক্যাফেইন থাকে যা শরীরের জন্য ভালো নয়। তাই কফি বা কোলার পরিবর্তে এক গ্লাস পানি পান করুন। তবে গ্রীন টি পান করতে পারেন। এতে তুলনামূলক ক্যাফেইন নেই বললেই চলে আর এটি শরীরের জন্য বেশ উপকারী।
৩) স্ট্রয়ের ব্যবহার
মাঝে মাঝে পানি পান করার জন্য স্ট্র ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে পানিও পান করা হবে। আবার পানি পান করতে বিরক্ত লাগবে না।
৪) ফলের জুস
বাসায় বা অফিসে আমরা কাজের ফাঁকে ফাঁকে স্ন্যাক্স খেতে পছন্দ করি। এর বেশির ভাগই থাকে ফাস্ট ফুড। এই ক্ষতিকর খাবারগুলোকে এড়ানোর জন্য আপনি স্ন্যাক্সের পরিবর্তে ফলের জুস খেতে পারেন। এতে করে হালকা খাওয়া হবে, শরীরে পানির সমতা ঠিক থাকবে।
৫) স্মার্টফোন ট্রিক্স
এখন প্রায় সবার হাতেই রয়েছে স্মার্টফোন। এই স্মার্টফোনের মাধ্যমে আপনি হিসাব রাখতে পারেন কত টুকু পানি আপনি পান করেছেন এবং এখন কতটুকু পানি পান করতে হবে আপনাকে পুরো দিনে। আপনি চাইলে অ্যালার্ট সিস্টেম চালু করে নিতে পারেন। যার ফলে একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর আপনার স্মার্টফোন আপনাকে মনে করিয়ে দেবে আপনার পানি পান করার কথা।
৬) অভিনব বোতল
আপনি চাইলে বাড়িতে বা অফিসে অভিনব বোতল ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে পানি পান করার প্রতি অরুচি আসবে না।
৭) বড় গ্লাসের ব্যবহার
পানি পান করার জন্য বড় গ্লাস ব্যবহার করুন। আমরা সাধারণত যেসব গ্লাস ব্যবহার করি তা ২৫০ মিলি এর হয়ে থাকে। এর পরিবর্তে আপনি ৩৫০ বা ৫০০ মিলি এর গ্লাস ব্যবহার করুন পানি পান করার জন্য। এবং প্রত্যেক বার গ্লাস ভরে পানি পান করুন। তাহলে শরীরে পানির চাহিদা পূরণের জন্য বার বার পানি পান করার দরকার পড়বে না।
৮) স্বচ্ছ পানি
পানি এমন পাত্রে রাখুন যাতে তা দেখা যায়। তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন আপনি কতটুকু পানি পান করেছেন। অথবা স্বচ্ছ জগে পানি রেখে তাতে কয়েক টুকরা লেবু অথবা মাল্টা কেটে দিতে পারেন। এতে পানির স্বাদ পরিবর্তন হবে আর পানি পান করতেও বিরক্ত লাগবে না।
৯) আইস কিউব
গরমের সময় আপনি আপনার প্রিয় ফলের আইস কিউব বানিয়ে রাখতে পারেন। প্রত্যেক বার পানি পান করার সময় একটি করে আইস কিউব দিয়ে দিন পানির গ্লাসের ভেতর। এতে করে বিরক্তি ছাড়াই পানি পান করা যাবে।
১০) পানি পানের নিয়ম
আপনার শরীরের ভালোর জন্য আপনাকে পানি পান করতে হবে। নিজেকে প্রতিজ্ঞা করুন যে আপনি নিয়মিত পর্যাপ্ত পানি পান করবেন। নিজেই নিজের পানি পানের একটি নিয়ম তৈরি করুন। প্রতিদিন সেই নিয়ম ধরে পানি পান করুন অন্তত নিজের ভালোর কথা চিন্তা করে।সুস্থ অবস্থায় বেশি পানি পান করলে কোনো সমস্যা হয় না। তবে যদি কোনো সমস্যা দেখা দেয় তাহলে তাড়াতাড়ি ডাক্তারের পরামর্শ নিন। দিনে বেশি পানি পান করুন। রাতে কম পানি পান করবেন, তা না হলে আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটবে।