অনলাইন ডেস্ক: ব্যাটসম্যানরা তাদের কাজ সূচারুভাবেই সম্পন্ন করেছিলেন। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে গড়েছিলেন রান পাহাড়। সেই পাহাড়ের শক্তি নিয়ে দ্বিগুণ তেজে জ্বলে ওঠার কথা ছিল বোলারদের। কিন্তু না, দেখা গেল তার বিপরীত চিত্র। বেদম মার খেলেন মুস্তাফিজ-সাইফ উদ্দিনরা। অভিষিক্ত নাজমুল-আফিফ তুলে নিলেন উইকেট। ৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে ২ উইকেট নেওয়া নাজমুলই সবচেয়ে কৃপণ। বাকীদের ব্যর্থতায় ৬ উইকেটে হারল বাংলাদেশ। দাশুন শানকা আর থিসারা পেরেরা অর্ধশতাধিক রানের জুটিতে ১৬.৪ ওভারেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে গেল অতিথিরা।
বাংলাদেশের দেওয়া ১৯৪ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ সূচনা করেন শ্রীলঙ্কা। দুই ওপেনার কুশল মেন্ডিস এবং দানুশকা গুনাথিলাকা ৫৩ রানের জুটি গড়েন। ১৫ বলে ৩০ রান করা গুনাথিলাকাকে দারুণ দ্রুততায় স্টাম্পড করে দেন মুশফিক। অভিষেক ম্যাচেই প্রথম উইকেট পেয়ে যান স্পিনার নাজমুল ইসলাম। ২৫ বলে বিধ্বংসী হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন অপর ওপেনার কুশল মেন্ডিস। এর আগে টি-টোয়েন্টিতে তার সর্বোচ্চ রান ছিল ২২।
এরপর মঞ্চে আসেন অপর অভিষিক্ত অল-রাউন্ডার আফিফ হোসেন ধ্রুব। তার বলে সৌম্য সরকারের তালুবন্দি হন ২৭ বলে ৫৩ রান করা বিধ্বংসী ওপেনার কুশল মেন্ডিস। শ্রীলঙ্কার তৃতীয় উইকেটের পতন ঘটান নাজমুল। বিপজ্জনক উপুল থারাঙ্গাকে (৪) আফিফ হোসেনের তালুবন্দি করেন নিজের দ্বিতীয় শিকার ধরেন তিনি। কিন্তু লঙ্কানদের রানের গতি থামানো যাচ্ছিল না কোনোমতেই।
এমন সময় উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান নিরোশান ডিকাভিলাকে (১১) সাইফ উদ্দিনের তালুবন্দি করে রাশ টেনে ধরেন রুবেল হোসেন। দানুশ শাঙ্কা আর থিসারা পেরেরার ব্যাটে এগিয়ে যেতে থাকে শ্রীলঙ্কা। ৬৫ রানের অবিচ্ছিন্ন এই জুটিতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় শ্রীলঙ্কা। শানকা ২৪ বলে ৪২ আর পেরেরা আ১৮ বলে ৩৯ রানে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার সিরিজের প্রথম ম্যাচে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৯৩ রান তোলে বাংলাদেশ। দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন বিধ্বংসী ওপেনার সৌম্য সরকার। অভিষিক্ত জাকির হোসেনের সঙ্গে ৪ ওভারে ৪৯ রানের উদ্বোধনী জুটি উপহার দেন তিনি। গুনাথিলাকার বলে জাকির (১০) বোল্ড হয়ে গেলে ভাঙে এই জুটি। ৩০ বলে ৬ চার ১ ছক্কায় ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন সৌম্য। অবশ্য ২ বল পরেই ৫১ রানে জীবন মেন্ডিসের বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি। এটাই টি-টোয়ন্টিতে সৌম্যর ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকটা ভালো হলো না অল-রাউন্ডার আফিস হোসেন ধ্রুবর। সৌম্য আউট হওয়ার এক বল পরেই ডিকাভেলার গ্লাভসবন্দি হয়ে ফিরলেন তিনি। অভিষেক ম্যাচে ‘গোল্ডেন ডাক।’ তিন বলে দুই উইকেট হারানোর পর মুশফিকের সঙ্গী হন তার ভায়রা ভাই এবং অধিনায়ক মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ। দুজনেই হাত খুলে খেলতে থাকেন। ৩৭ বলে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মুশফিক। দুজনের ৭৩ রানের দুর্দান্ত জুটি ভাঙে উদানার বলে অধিনায়ক মাহমুদ উল্লাহ ক্যাচ দিলে। আউট হওয়ার আগে ৩১ বলে ২ চার ২ ছক্কায় ৪৩ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন রিয়াদ।
সাব্বির রহমান যথারীতি ব্যর্থ। ২ বলে ১ রান করে শেষ ওভারের তৃতীয় বলে পেরেরার বলে বোল্ড হয়ে যান। মুশি অপরাজিত থাকেন ৬৬ রানে। ৪৪ বলের ইনিংসে তিনি হাঁকিয়েছেন ৭টি চার এবং ১টি ছক্কা। শ্রীলঙ্কার হয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নিয়েছেন জীবন মেন্ডিস।
শ্রীলঙ্কার কাছে টানা দুই সিরিজ হারের পর তারুণ্যে ভরপুর একাদশ নিয়ে আজ মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। অভিষেক হয়েছে চার ক্রিকেটারের। তারা হলেন অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার আফিফ হোসেন ধ্রুব, উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান জাকির হাসান, বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম এবং অল-রাউন্ডার আরিফুল হক। চারজনই বয়সভিত্তিক দল এবং বিপিএলে নজরকাড়া পারফর্মেন্স দেখিয়েছেন।
বাংলাদেশ দল: সৌম্য সরকার, মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, সাব্বির রহমান, সাইফউদ্দিন, রুবেল হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, জাকির হোসেন, আফিফ হোসেন, নাজমুল হক অপু, আরিফুল হক।