বোধোদয়ে ১০ টাকার চাল ফেরত

একাত্তরলাইভডেস্ক: রংপুরের বদরগঞ্জে দুই কাঁচামাল ব্যবসায়ী এক ডিলারের কাছ থেকে ১০ টাকা কেজির দরে ৩০ কেজি চাল উত্তোলন করেন। পরে তারা বুঝতে পারেন এ চাল গরিবের হক।তাই তারা এলাকার হতদরিদ্র দুই নারীকে বাড়িতে ডেকে এনে তাদের হাতে ওই চাল তুলে দেন এবং ইউপি সদস্যকে কার্ড দুটি ফেরত দেন। আজ মঙ্গলবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে চাল ও কার্ড দুটি ফেরত দেওয়া হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম ভ্যাবলসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।ওই দুই ব্যক্তির নাম আমিনুল ইসলাম (৪০) ও জমিদার আলী (৩৮)। তাদের বাড়ি উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের আমরুলবাড়ি আসমতপাড়া গ্রামে। তাদের কোনো আবাদি জমিজমা নেই। বদরগঞ্জ পৌর শহরে তারা কাঁচামালের ব্যবসা করে সংসার চালান।জমিদার ও আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কোনো জনপ্রতিনিধির কাছে কার্ড চাইনি। আমাদের একটা করে কার্ড দেওয়া হয়। ভেবেছিলাম, এ চাল হয়তো আমাদের জন্য। এজন্য গত সপ্তাহে ডিলারের কাছ থেকে চাল উত্তোলন করি। পরে শুনি এটা আমাদের জন্য নয়, হতদরিদ্রের জন্য।’তারা বলেন, গরিবকে বঞ্চিত করে আমাদের এই চাল খাওয়াটা ঠিক হবে না। তাই বিবেকের তাড়নায় এলাকার বঞ্চিত গরিব নারী সেলিনা বেগম (৪৫) ও বুলবুলি বেগমকে (৩৫) ডেকে তাদের হাতে ওই চাল তুলে দেই এবং মেম্বারকে কার্ড ফেরত দেই।তাদের কাছ থেকে চাল পাওয়া বুলবুলি বেগম বলেন, ‘মোর স্বামী খাটো মানুষ। তাকে কেউ কাজোত নিতে চায় না। কোনো জমি-জমাও নেই। মানুষের ভিটায় ঝুপড়ি ঘর তুলে আছি। মোকে কেউ ১০ টাকা কেজি চালের কার্ড দেয় নাই। এই ৩০ কেজি চাল পেয়ে অনেকটা মোর উপকার হইল। আল্লাহ ওদের ভালো করুক।’ ঠিক একই রকম কথা বললেন, সেলিনা বেগমও।দামোদরপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম ভ্যাবল বলেন, তাদের কোনো আবাদি জমিজমা নেই। শুধু ছিল বাড়ি। এ কারণে তাদের নামে কার্ড হয়েছিল। কিন্তু তারা বিবেকের তাড়নায় ওই চাল না খেয়ে তা গরিব মানুষকে দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।’বদরগঞ্জ উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক ও উপজেলা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সদস্য সচিব মো. মকবুল হোসেন বলেন, ‘শুনেছি তারা চাল উত্তোলন করে গরিবদের দিয়েছেন। এটা একটা বিরল দৃষ্টান্ত। এ রকম সচ্ছল যারা কার্ড পেয়ে চাল উত্তোলন করেছেন তাদের উচিত এদের অনুসরণ করে কার্ড ও চাল ফেরত দেওয়া।