খালেদা জিয়াকে ক্ষমতায় বসানো যাবেনা বিরোধী দলেও রাখা যাবে না -হাসানুল হক ইনু

নরসিংদী সংবাদদাতা ঃ তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, খালেদা জিয়া একজন জঙ্গীবাদী নেত্রী। তিনি কখনো আগুন নেত্রী, কখনো বোম নেত্রী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। তিনি জামায়াত শিবির ও তেতুল হুজুরকে নিয়ে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন। তাকে যেমন ক্ষমতার আসনে বসানো যায় না, তেমনই তাকে বিরোধী দলীয় নেত্রী হিসেবেও মেনে নেয়া যায় না। তিনি ২০০৮ সালের নির্বাচনে হেরে গিয়ে জামায়াত শিবির রাজাকার নিয়ে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। তিনি এখনও জামায়াত শিবিরের সংগ ত্যাগ করতে পারেননি। খালেদা জিয়া তার অপকর্মের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাননি, তওবা করেননি। তিনি সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে বাধার সৃষ্টি করেছেন। সকল ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হবার পরও তিনি রাজাকারদেরকে ছাড়তে পারেননি। তিনি গতকাল বুধবার নরসিংদীর পাঁচদোনায় জঙ্গীবাদ বিরোধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতা এসব কথা বলেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জাসদ’র কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও পলাশ উপজেলা জাসদের সভাপতি জায়েদুল কবির। বক্তৃতা করেন জাসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সম্পাদক শওকত রায়হান, নাট্য ব্যক্তিত্ব নাদের চৌধুরী, জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতি সামসুল ইসলাম সুমন, সাধারণ সম্পাদক এহসানুল হক শামীম, জাসদ নেতা জ্যোতিষী বিকাশ, এড. হাবিবুর রহমান শওকত, জাসদ নেতা শফি উদ্দিন মোল্লা, শাহাদাৎ হোসেন মাসুম, মোঃ কামাল পাশা প্রমুখ।
হাসানুল হক ইনু বলেন, যারা জোটের ভিতর থেকে সরকারের বিরোধীতা করছে, তাদেরকে চোখ বন্দ করে জোট থেকে বের করে দিতে হবে। পাশাপাশি মহাজোটের শরীক দল সমূহের উপর পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধি করতে হবে।
জাতীয় রাজনীতিতে মিউজিক্যাল চেয়ারের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। একবার মুক্তিযুদ্ধের সরকার ক্ষমতায় আসবে, আরেকবার রাজাকার আলবদরদের সরকার ক্ষমতায় আসবে, এই খেলা বন্ধ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী কোন সরকার ব্যবস্থাকে মেনে নেয়া হবে না। জামায়াত শিবির রাজাকাররা এখনও ক্ষমতায় যাবার জন্য গোপন তৎপরতা চালাচ্ছে, ষড়যন্ত্র করছে। বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য হুমকি ও বিপদজনক একজন নেত্রী। জঙ্গী সম্পৃক্ততা ত্যাগ না করলে তাকে ক্ষমতায় বসতে দেয়া হবে না। নিজামী মুজাহিদদের ফাঁসি হলেও খালেদা জিয়া তার কৃতকর্মের জন্য তওবা করেননি। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোটকে আরো শক্তিশালী করে জঙ্গীবাদ বিরোধী ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী দল সমূহকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জোটকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। খালেদা জিয়াকে রাজনীতি ও ক্ষমতার বাইরে রাখার শপথ নিতে হবে।
এদিকে পাঁচদোনা মোড়ে জাসদের জঙ্গীবাদ বিরোধী সমাবেশ ঘোষণার পর থেকেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা সমাবেশের বিরোধীতা শুরু করে। তারা গত রবিবার রাতে জাসদের নেতাকর্মীদের হটিয়ে দিয়ে জাসদের সভামঞ্চ দখল করে নেয়। দুই দিন পর্যন্ত জাসদের সভামঞ্চ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের দখলে ছিল। এতে পাঁচদোনার মোড়ে জাসদের জঙ্গীবাদ বিরোধী সমাবেশ অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। পরে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও স্থানীয় জাসদ নেতাকর্মীরা স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় ঘোষিত পাঁচদোনা মোড়ে সমাবেশ করতে সক্ষম হয়। এক কড়া পুলিশী নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে সমাবেশ চলাকালেও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা শ্রমিক লীগের ব্যানারে মিছিল করে। মোটরসাইকেল বহর নিয়ে পুলিশের সামনেই মহড়া দেয় এবং ‘এ্যাকশন এ্যাকশন, ডাইরেক্ট এ্যাকশন’ বলে শ্লোগান দেয়। পরে তারা আলাদা স্থানে সমাবেশও করে। এই অবস্থায় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু নরসিংদীসহ দেশের ৬৪ জেলার ডিসি এসপিদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা গুন্ডাদেরকে প্রশ্রয় দিবেন না। চোর গুন্ডা দিয়ে নির্বাচনে জয় লাভ করা যায় না। এসব চোর গুন্ডাদের প্রশ্রয় দিলে প্রশাসনের ভাবমুর্তি নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়।