একাত্তরলাইভডেস্ক: ভিটামিন ট্যাবলেট সম্পর্কে কম বেশি আমরা সবাই অবগত। এটি একটি সম্পূরক মূলক খাবার বা ওষুধ। যখন আমাদের শরীর অন্যান্য খাদ্য দ্রব্য থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন পায় না, তখন ডাক্তাররা আলাদা ভিটামিন খাওয়ার উপদেশ দেন।তবে ডাক্তার যখন আপনাকে ভিটামিন খাওয়ার উপদেশ দিবেন তখন ভালো করে জেনে নিবেন যে, তিনি ঠিক কোন সমস্যার কারণে আপনাকে কোন ভিটামিন দিচ্ছেন এবং কেন দিচ্ছেন।যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার টালাহাসির এমডিভিআইপি সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ডা. লেস ইমহফ বলেন, মাল্টিভিটামিন এক ধরনের গরিব পুঁজি মাত্র এবং তিনি আরো বলেন, তারা আসলে আপনাকে ব্যয়বহুল মূত্র প্রদান করছেন মাত্র।জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির ২০১৩ সালের বাৎসরিক আন্তর্জাতিক ওষুধ সম্মেলনে বলা হয়, অধিক ভিটামিন ওষুধ সেবন করলে রোগ কমে যায় না বা মারা যাওয়ার ঝুঁকি কমে যায় না। বরঞ্চ সব ধরনের ভিটামিন ও মিনারেল প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা থেকেই পাওয়া সম্ভব। আসুন জেনে নিই ভিটামিন বিষয়ক কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।* অনবরত রকমারি ভিটামিন সেবনএকেক জন মানুষ একেক রকম, তাই তাদের ভিটামিনের বাছাইটাও হতে হবে ভিন্ন। অনবরত বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন সেবন এক ধরনের বোকামি। ডা. ইমকফ বলেন, আমি প্রথমে আমার রোগীদের রক্ত পরীক্ষা করতে দেই এটা জানার জন্য যে তার ঠিক কি ভিটামিন দরকার। যদি ভিটামিন ‘ডি’ অথবা ভিটামিন ‘বি ১২’ এর অভাব থাকে তাহলে তাদেরকে সাধারণত কোনো ওষুধ দেই না বরং খাবারের তালিকা করে দেই। যেখান থেকে তারা পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন পেতে পারে। কারণ এমনও হতে পারে যে আপনি রাতের বেলা পা নাড়াতে ব্যথা অনুভব করছেন তাহলে আপনার অবশ্যই ম্যাগনেসিয়ামের অভাব রয়েছে, পটাশিয়ামের নয়।* পর্যাপ্ত পরিমাণ রোদ ভিটামিন ‘ডি’ এর ভালো উৎসআপনি যদি এমন কোনো স্থানে বসবাস করে থাকেন যেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ রোদ আপনার শরীরে লাগতে পারে তাহলে আপনার আলাদা করে ভিটামিন ‘ডি’ এর জন্য কোনো ওষুধ খাওয়ার দরকার নাই। শীতকালে বা যারা শীত প্রধান দেশে বসবাস করেন তাদের বিশেষ করে ওই শীতের সময়টাতে বেশি করে ভিটামিন ‘ডি’ খাওয়া উচিত। তা সেটা খাবারের মাধ্যমে হোক অথবা ওষুধের মাধ্যমে।* পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম গ্রহণআমাদের শরীরে যে পরিমাণ ক্যালসিয়াম দরকার তার থেকে বেশি খেলে তা ক্ষতিকর। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের নতুন এক গবেষণায় বলা হয় যে, অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার খেলে ধমনীতে সমস্যা দেখা দিতে পারে কারণ অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার বা ওষুধে প্রায় ২২ শতাংশ অথেরোস্ক্লেরোসিস থাকে।* বেশি ভিটামিন খাচ্ছেন না তোযা সামান্য খেলে উপকারী, তা বেশি খেলে নিশ্চয়ই আরো বেশি উপকারী, তাই তো? কিন্তু সব ক্ষেত্রে নয়। অধিক পরিমাণে ভিটামিন ‘ই’ খেলে হার্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে, এমনই বক্তব্য ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের। যেকোনো ভিটামিন বা সহায়ক খাবার ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খান।* অপর্যাপ্ত আয়রন সেবনএকজন সুস্থ মানুষের যে পরিমাণ আয়রন সেবন করা দরকার তিনি যদি তা না করেন তাহলে অ্যামোনিয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। নিতান্ত প্রয়োজন না হলে আয়রনের ওষুধ খাওয়া ঠিক নয়। তার আগ পর্যন্ত আপনি আয়রন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে থাকুন। ব্লাড জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় হয়েছে, প্রতিদিন চাহিদা অনুযায়ী আয়রন গ্রহণ আপনার রক্তের শোষণক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।* সহায়ক খাবার হিসেবে হলুদআপনি কি হলুদের রোগ প্রতিরোধ এবং প্রদাহ নাশকের ক্ষমতা সম্পর্কে জানেন? হলুদ সহায়ক খাবার হিসেবে বেশ শক্তিশালী কারণ এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পিগমেন্ট কারকুমিনে ভরা এবং এটি শরীরে ডেমেন্টিয়া থেকে প্রতিরোধ তৈরি করে। শোষণক্রিয়ার জন্য কারকুমিন খুব ভালো একটি সহায়ক উপাদান। ডা. ইমকফ বলেন, যদি আপনার শরীরে কোনো সমস্যা নাও থাকে তাহলেও আপনি প্রতিদিন হলুদ সহায়ক হিসেবে খেতে পারেন।
তথ্যসূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট