অনলাইনডেস্কঃবহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় মামলার রায় হয়েছে বুধবার। ১৪ বছর ১ মাস পর এ মামলার রায় ঘোষণা করা হলো। আর এই মামলার রায় বাংলাদেশের গণমাধ্যমে যেমন প্রাধ্যন পেয়েছে, তেমনি বিশ্বমিডিয়ার নজরও বাদ যায়নি। আল-জাজিরা, বিবিসি, দ্য গালফ টুডে, রয়টার্স, হিন্দুস্তান টাইমস, এপি এবং আনন্দ বাজার পত্রিকাসহ বিশ্বের অনেক নামি-দামি গণমাধ্যম গুরুত্বসহ প্রতিবেদন করেছে এই রায়ের।
আল-জাজিরার তাদের প্রতিবেদনে শিরোনাম করেছেন, ‘২০০৪ সালের হামলার ঘটনায় ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে বাংলাদেশের আদালত।’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ঢাকার একটি আদালত সাবেক দুই মন্ত্রীসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং বিরোধী দলের শীর্ষস্থানীয় একজন নেতার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে। ২০০৪ সালে বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর হামালার ঘটনায় এই রায় দেওয়া হয়।
বিবিসি তাদের প্রতিবেদনে শিরোনাম করেছেন, ‘২০০৪ সালে র্যালিতে মারাত্মক হামলায় বাংলাদেশে ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড।’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানী ঢাকায় ২০০৪ সালে ২১ আগস্টে র্যালিতে একটি মারাত্মক গ্রেনেড হামলার জন্য বাংলাদেশের একটি আদালত দেশটির ১৯ জনকে মৃতুদণ্ড দিয়েছেন।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ১৯ জন মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে রয়েছেন দেশটির সাবেক দুই মন্ত্রী। অন্যদিকে যাবজ্জীবন আসামিদের তালিকায় রয়েছেন দেশটির বিরোধী দল বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান।
২১ আগস্ট ওই গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগের ২১ জন কর্মী নিহত হয়েছেন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
দ্য গালফ টুডে’র প্রতিবেদনে শিরোনাম করা হয়েছে, ‘ ২০০৪ সালের হামলায় বাংলাদেশে ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড।’ প্রতিবেদনে তারা বলেছেন, বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর ২০০৪ সালে গ্রেনেড হামলার জন্য বাংলাদেশের আদালত ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন।
প্রতিবেদনে বিরোধী দলী বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের কথাও বলা হয়েছে।
ভারতের আনন্দ বাজার পত্রিকা তাদের শিরোনাম করেছেন, ‘হাসিনার উপর হামলা: মৃত্যুদণ্ড ১৯, খালেদাপুত্র সহ যাবজ্জীবন ১৭ জনের।’ প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে খুনের চেষ্টার দায়ে তদানীন্তন খালেদা জিয়া সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিনটুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
প্রতিবেদনে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন খালেদা-পুত্র তারেক রহমানের যাবজ্জীবনের কথাও বলা হয়েছে।
এছাড়া রয়টার্স, হিন্দুস্তান টাইমস, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) তাদের প্রতিবেদনেও বাংলাদেশে ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ১৯ জনের যাবজ্জীবন হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ করেছে। সেখানে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত দুই সাবেক মন্ত্রীর কথা বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের যাবজ্জীবনের কথা। এছাড়া ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট র্যালিতে প্রধানমন্ত্রীর উপর হামলার ঘটনার কথা বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দায়ের করা দুই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। এ ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবনের আদেশ দেয়া হয়েছে।
গ্রেনেড হামলায় এই ঘটনায় আসামি সংখ্যা ৫২ জন হলেও আগেই তিন জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় এই মামলা থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়। তাই এখন আসামির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৯ জন। এর মধ্যে তারেক রহমানসহ ১৮ জন পলাতক রয়েছেন। বাকি আসামিদের মধ্যে কারাগারে রয়েছেন ৩১ জন। ছবি: সংগৃহীত