‘বিদেশিদের তুষ্ট করতেই রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র’

একাত্তলাইভ ডেস্ক: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিদেশি প্রভুদের তুষ্ট করে শুধুমাত্র ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্যই সরকার রামপালে সুন্দরবন ধ্বংসকারী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।তিনি শনিবার দুপুরে খুলনা মহানগরীর একটি অভিজাত হোটেলে ‘দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়ন ভাবনা ও সুন্দরবন’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের মানুষ যতই বলছে, সুন্দরবনের কাছে বিদ্যুৎকেন্দ্র করতে দেওয়া হবে না, ততই সরকার বলছে ওখানেই বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে। সুন্দরবন ধ্বংস হলে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে। এজন্য আমরা আমাদের প্রিয় সুন্দরবনকে ধ্বংস হতে দিতে পারি না। আর সে কারণেই সুন্দরবনের কাছে পরিবেশ ও প্রকৃতি বিধ্বংসী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র রুখে দিতে হবে।খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যাশনালিস্ট টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন (এনটিএ) এ সেমিনারের আয়োজন করে।মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমানে দেশ অত্যন্ত কঠিন সময় পার করছে। সচেতন মানুষ দেশের অস্তিত্ব নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে। বর্তমান অনির্বাচিত সরকার দেশের ১৬ কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছে না।তিনি ইউনেসকোর সাম্প্রতিক একটি রিপোর্ট উল্লেখ করে বলেন, ইউনেসকোও চাচ্ছে না বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের কাছে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হোক। তাদের রিপোর্টে বলা হয়েছে, রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে। বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরাও এ প্রকল্প বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। তারপরও প্রভুদের খুশি করার জন্য এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে।তিনি বলেন, শুধুমাত্র রাজনীতির কারণেই রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হচ্ছে। এটা শুধুই ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। জোর করে ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। সরকার গণতন্ত্র এবং উন্নয়নে বিশ্বাস করে না। ব্যাংকিং সেক্টর, শেয়ার বাজার, নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগসহ সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা হয়েছে। দেশের অর্থনীতি আজ ধ্বংসের পথে। উন্নয়নের নামে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে।ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের বিদ্যুতের প্রয়োজন। কিন্তু যে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আমাদের সুন্দরবন, জীববৈচিত্র্য, পানি ও মাটি ধ্বংস হয়ে যায়, সে বিদ্যুৎকেন্দ্র আমরা চাই না।তিনি দেশ, সুন্দরবন, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এবং পরবর্তী প্রজন্মকে রক্ষার জন্য দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশবিরোধী এ বিদ্যুৎ প্রকল্প রুখে দেওয়ার আহ্বান জানান।সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যাশনালিস্ট টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এনটিএ) প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শেখ মাহমুদুল হাসান।বক্তব্য রাখেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি নিতাই রায় চৌধুরী, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, আইইবির প্রাক্তন সভাপতি আ ন হ আখতার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. মো. ওবায়েদুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন চৌধুরী, ব্যারিস্টার শেখ মো. জাকির হোসেন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও নগর বিএনপি সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, কেসিসি মেয়র ও নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনি।আলোচনায় অংশ নেন গাজী আব্দুল বারী, অধ্যাপক ডা. সেখ মো. আক্তারুজ্জামান, ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম, সাংবাদিক শেখ দিদারুল আলম, ড. নাজমুস সাদাত প্রমুখ।সভাপতিত্ব করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ন্যাশনালিস্ট টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম। পরিচালনা করেন এনটিএ-এর সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. খসরুল আলম।