অনলাইন ডেস্ক: বিচারহীনতার সংস্কৃতি দেশকে গ্রাস করে ফেলেছে। আর এই কারণেই ধর্ষণের সংখ্যা বেড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) নির্বাহী পরিচালক শীপা হাফিজা। সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘বস্তিবাসীদের অধিকার ও বাস্তবতা: টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনের বাধা ও করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সামাজিক নিরাপত্তাহীনতার কারণে স্কুল থেকে শিশুরা ড্রপ আউট (ঝরে পরা) হচ্ছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
শীপা হাফিজা বলেন, সাংবিধানিক প্রতিশ্রুতি ও উচ্চ আদালতের স্বীকৃতি থাকা সত্ত্বেও নিম্নআয়ের মানুষের বাসস্থানের ব্যবস্থা নিশ্চিত না করাসহ তাদের নানা ধরনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এর বড় ধরনের উদাহরণ হচ্ছে ঢাকা শহরে বস্তিগুলোতে অগ্নিকা- এবং কোনো রকমের বাসস্থানের ব্যবস্থা না করেই এই নি¤œ আয়ের মানুষকে বসবাসের স্থান থেকে উচ্ছেদ করা। নিম্ন আয়ের মানুষকে মানবেতর জীবনযাপনের মধ্যে রেখে টেকসই উন্নয়নের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব নয়।
ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফিন্যান্স এন্ড ডেভেলপমেন্ট (আইএনএম) এর নির্বাহী পরিচালক ড. মুস্তফা কে মুজেরী বলেন, বস্তিবাসীরা প্রদীপের নিচে অন্ধকারের মতোই। তাদের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করার জন্য কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। শিক্ষা ক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়ন অর্জনের জবাদিহিতা, স্বচ্ছতা ও অংশ গ্রহণ নিশ্চিত করা জরুরি। তিনি আরো বলেন, শিক্ষাকে বাণিজ্যিকীকরণ করা হয়েছে। সরকারি, বেসরকারি কিংবা এনজির মাধ্যমে বস্তিতে যে শিক্ষা দেওয়া হয় তা খুবই অপ্রতুল। বস্তিতে ফুড ফর এডুকেশন কিংবা ক্যাশ ফর এডুকেশনের কার্যক্রম চালুর প্রস্তাব করেন তিনি।
ব্র্যাকের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তন বিভাগের পরিচালক গওহর নাঈম ওয়ারা বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থানার কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না থাকায় গ্রামের মানুষ বাস্তুহীন হয়ে শহরমুখী হচ্ছে। তাই সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে ভাবতে হবে। আর্টিকেল নাইনটিন বাংলাদেশের পরিচালক তাহমিনা রহমান বলেন, বিগত বছরগুলোর তুলনায় ২০১৬ সালে মানবাধিকার ও গণমাধ্যকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। টেকসই উন্নয়নে অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনের বাক স্বাধীনতা ও ন্যায় বিচার প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এডিডব্লিউএলডির প্রোগ্রাম অফিসার সানাম আমীন বলেন, সংখ্যাতত্ত্বের ভিত্তিতে প্রকৃত উন্নয়ন মূল্যায়ন করা সম্ভব না। মানবাধিকার রক্ষায় সচেষ্ট না হলে টেকসই উন্নয়নের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো দুরূহ ব্যাপার।
“