বসন্তের হাত ধরে বইমেলায় এসেছে ১৫০টি নতুন বই

অনলাইন ডেস্ক: ঋতুরাজ বসন্তের হাত ধরে আজ মঙ্গলবার মহান একুশে গ্রন্থমেলায় এসেছে ১৫০টি নতুন বই। আজ হাজার হাজার দর্শনার্থীর স্বতঃস্ফূর্ত আনন্দ-উল্লাসে ছিলো উৎসবমুখর, সেজেছিল ভিন্ন রূপে। বইপ্রেমীরা নতুন আমেজে বই কিনে আর আড্ডা দিয়ে পয়লা ফাগুনকে স্বাগত জানালো। আজই প্রথম দর্শনার্থীরা লাইনে দাঁড়িয়ে মেলায় প্রবেশ করলো। আজ মেলা শুরু হয় বিকেল ৩টায়। দুপুর ২টা থেকেই দর্শকরা লাইনে দাঁড়ায়। গেট খোলার পর কিছুক্ষণের মধ্যেই মেলায় মানুষের ভিড় লেগে যায়। মেলার যেদিকে চোখ যায়, কেবল হলুদ, লালসহ নানা রঙের পোশাক পরে দশনার্থীরা পয়লা ফাগুনকে উদযাপন করলো মেলাঙ্গণে। সেই সাথে অনেকের হাতেই দেখা গেছে নুতন বই। নারীরা হলুদ শাড়ি, যুবকরা হলুদ পাঞ্জাবিতে সেজেছিল।
বিকেলের মধ্যে মেলায় মানুষের ঢল নামে। মেলার বাইরে-ভেতরে কোথাও তিলধারণের ঠাঁই ছিলো না। শত শত মানুষ টিএসসি মোড় থেকে দোয়েল চত্বরের আইল্যান্ডে বসে অপেক্ষা করতে থাকে মেলায় প্রবেশের। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমির ভেতরে স্টলগুলোর সামনে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। সব বয়সের মানুষই স্টলে বই পছন্দ এবং কেনায় ব্যস্ত ছিল।
আজ মেলার ত্রয়োদশ দিবসে নতুন বই এসেছে ১৫০টি। এর মধ্যে কবিতার বই সর্বোচ্চ ৬২টি। এরপরই রয়েছে শিশুতোষ ৪১টি, উপন্যাস ২২টি, প্রবন্ধ ৪১টি,গ্রল্পের বই ১০টি। উল্লেখ্যযোগ্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে, প্রেস ইনস্টিটিউটের স্টলে এসেছে ‘সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু, ষাটদশক-দ্বিতীয় পর্ব’ আগামীর স্টলে আরেফিন বাদলের শ্রেষ্ঠ গল্প, রিয়া প্রকাশনীতে লিওনার্দো দা ভিঞ্চি’র ‘মোনালিসা’, ন্যাশনাল পাবলিকেশন্সে অধ্যাপক এম এম আনোয়ারের ‘জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব’ শ্রাবণের আলফ্রেড খোকনের ‘উড়ে যাচ্ছে মেঘ’ সরলরেখার স্টলে আল মাহমুদের ‘জীবন যখন বাঁক ঘোরে’ জোনাকীতে ‘সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর উপন্যাসসমগ্র’ গ্রন্থ কাননে কামাল লোহনীর ‘সংস্কৃতি ভাবনা’।
এবারের মেলায় প্রথমবারের মতো বাংলা একাডেমি প্রতিদিনের নতুন বই একটি স্টলে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করেছে। একাডেমির ভেতরে বর্ধমান হাউজের উত্তর পাশে এই স্টলটি থেকেই দর্শনার্থীরা মেলার সব বইয়ের নাম ও প্রকাশনীর নাম জেনে নিচ্ছেন। একই সঙ্গে প্রতিদিনের বইয়ের প্রচ্ছদ একটি বোর্ডেও লাগিয়ে দেয়া হচ্ছে বটমূলের পাশে। এই ব্যবস্থা নেয়ার ফলে ক্রেতারা সহজেই নতুন বইয়ের সংবাদ জেনে নিতে পারছেন।
মেলার মূলমঞ্চে আজ বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় ‘নারীর নিরাপদ পরিসর ও পরিবেশ’ শীর্ষক সেমিনার। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খুশী কবির। সভাপতিত্ব করেন আয়েশা খানম। আলোচনায় অংশ নেন সুলতানা কামাল, হোসনে আরা শাহেদ, সুভাষ সিংহ রায় ও নুরুন্নাহার মুক্তা। সুলতানা কামাল বলেন, দেশে নারীর ক্ষমতায়ন এগিয়ে চলেছে। সরকারী-বেসরকারী কর্মস্থলে কাজের পরিধি যেভাবে বাড়ছে, তার সাথে নিরাপত্তার অবস্থাটা ততটা সন্তোষজনক নয়। শুধু সরকারের নিরাপত্তার দিকে চেয়ে থাকলে চলবে না, কর্মস্থলে সকল কর্মীদেরও তাদের নিরাপত্তার বিষয়টির দিকে নজর দিতে হবে। সম্মিলিত প্রচেস্টা হলে অবশ্যই সব অনাচার দূর হবে।