ফরিদপুরে জামিনে এসে আসামীরা প্রবাসীর স্ত্রীকে ফের হুমকী

কে. এম. রুবেল, ফরিদপুর
ফরিদপুর জেলার মধুখালী পৌরসভার গোন্দারদিয়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী মো. আনোয়ার হোসেনের বাড়ীতে প্রবেশ করে তার স্ত্রী মোছা. হোসনে আরা বেগমের উপর হামলা চালিয়ে মারপিট ও নগদ টাকা লুটসহ আসবাবপত্র ভাংচুরের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার এজাহারভূক্ত আসামীরা জামিনে এসে ফের হত্যার হুমকী দিচ্ছে। তারা মামলার বাদী মোছা. হোসনে আরা বেগমকে মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগ করছে। মামলা তুলে না নিলে হত্যাকরা হবে বলেও হুমকি দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন মামলার বাদী মোছা. হোসনে আরা বেগম। বর্তমানে হোসনেয়ারা বেগম দুটি শিশু নিয়ে নিরাপত্তাহিনতায় ভুগিতেছে।মোছা. হোসনে আরা বেগম জানায়, প্রায় তিন বছর ধরে তারা (বাদী ও তার স্বামী) ওই জমিতে বাড়ী করে বসবাস করে আসছে। তার স্বামী মো. আনোয়ার হোসেন বর্তমানে কর্মের তাগিদে সৌদিতে অবস্থান করছেন। বাড়ী করার শুরু থেকে স্থাণীয় বখাটেরা তাহার (হোসনে আরা) নিকট টাকা দাবী করে আসছিল। হোসনে আরা জানান, বরাবরই তাদের দাবী পরিশোধে অপারকতা প্রকাশ করায় একই এলাকার মো. আলমগীর শেখ, আলীমুদ্দিন শেখ, মোছা. আনোয়ারা বেগম, জসিম শেক, রুহুল শেখ, শহিদ শেখ, মো. হাবিব শেখ ও জব্বার শেখ আমার (হোসনে আরার) উপর ক্ষুব্দ হয়। এরই জের ধরে গত ৭ অক্টোবর উল্লেখিতরা হামলা চালিয়ে বাদী হোসনে আরা বেগমকে মারধর করে আহত করে। এসময় তারা নগদ ৫০ হাজার টাকা লুটে নেয় ও আসবাবপত্র ভাংচুর করে। এঘটনায় প্রবাসীর স্ত্রী হোসনে আরা বেগম বাদী হয়ে মধুখালী থানায় উল্লেখিতদের আসামী করে মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর আসামীরা জামিন পেয়ে যায়। তারা (আসামীরা) জামিন পেয়েই ফের প্রবাসীর স্ত্রীর উপর হামলাও হুমকী দিচ্ছেন। তারা হোসনেয় আরাকে মামলা তুলে নিতেও চাপ প্রয়োগ করছেন বলে অভিযোগ করেছেন হোসনে আরা বেগম।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন স্থানীয় ব্যাক্তি জানান, প্রধান আসামী মো. আলমগীর হোসেন পুলিশের উপর হামলা, মাদক, ছিনতাই, অপহরোনসহ অন্তত ৫/৬টি মামলার আসামী। তার নেতৃত্বে ছাত্রদলের পরিচয়ধারী অন্য আসামীরা এলাকায় সবসময় ত্রাস সৃষ্ঠি করে থাকে। কেউ তাদের সামনে প্রতিবাদ করা সাহসও পায়না। এলাকাবাসীরা আরো জানান, কেউ এই এলাকায় জায়গা কিনে বাড়ীঘর স্থাপন করতে চাইলে উল্লেখিতদের চাঁদা দিতে হয়, অন্যথায় নানাভাবে হয়রানিতে পড়তে হয় তাদের। তারা আরো জানান, ওই যুবকরা অন্যায় কর্ম করতে গিয়ে কোথাও প্রতিকুলতার মধ্যে পড়লে স্থানীয় বয়স্ক ব্যাক্তি জব্বার শেখ মুচলেকা দিয়ে তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে তারা পুনরায় একই ধরনের অপরাধ করতেই থাকে। এপ্রসঙ্গে মধুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মির্জা মনিরুজ্জামান বাচ্চু জানান, ঘটনাটা শুনেছি। অত্যন্ত স্পর্ষকাতর। মামলার আসামীরা এলাকায় সবসময়ই ত্রাস সৃষ্টি করে থাকে। এঘটনার পর প্রতিপক্ষের লোকজন আমার নিকট মিমাংশার জন্যে এসেছিল, কিন্তু বারবার তারা একই ধরনের অপরাধ করায় আমি মিমাংসা করতে পারবোনা বলে দেয়ায় তারা আর যোগাযোগ করেনি।মধুখালী থারার অফিসার ইন চার্জ মো. রুহুল আমিন জানান, এ আসামীকে গ্রেফতার করেছিলাম অন্যদের পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, ফের হুমকী দেয়ার বিষয়টি জানা নেই, এমনটি হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।এদিকে এঘটনার পর ওই নারী তার পরিবারের সদস্য ০৭ বয়সের ছেলে ও ০৩ বছর বয়সের নাবালক মেয়েকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন।