শাহআলম শফি ,কুমিল্লা প্রতিনিধি
দেশের অন্যতম সবজি বাজার হিসেবে পরিচিত কুমিল্লার বুড়িংয়ের নিমসার বাজার হতে সরকার প্রতি বছর কয়েক কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করলেও উন্নয়ন হয়নি বাজারের। সঠিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় অল্প বৃষ্টিতেই বাজারের অলি-গলিতে জমে থাকে ময়লাযুক্ত পানি। ফলে দূর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয় বাজারে আসা ক্রেতা বিক্রেতারা।
সরজমিনে পরিদর্শন ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জেলার বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে অবস্থিত নিমসার বাজার। এ বাজারে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ট্রাকে করে বিপুল পরিমান সবজি আসে। এই সবজি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাজারগুলিতে যোগান দিয়ে আসছে।
তাছাড়া, বুড়িচং উপজেলার মোকাম, ময়নামতি, ভারেল্লা উত্তর, ভারেল্লা দক্ষিন ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম, দেবিদ্বার উপজেলার ব্রাহ্মণখাড়া, প্রেমু, ছোটনা, এলাহবাদ, চান্দিনা উপজেলার পিহর, গোবিন্দপুর, গুমুড়া, বেলাশর, ছাইকট, বড়–রা উপজেলার কেমতলী, আগানগর, মৌগুজি, ঘোষবাস, সদর উপজেলার কালিরবাজার, কমলাপুর, ছৈয়দপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের কৃষক তাদের উৎপাদিত সবজি নিমসার বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে আসে। এই বাজারে রয়েছে কৃষি ব্যংক, অগ্রনী ব্যাংক, গ্রামীন ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্ট্রার্ড ব্যাংক, ডাচ ব্যাংলা ব্যাংকসহ বিভিন্ন এনজিও এর শাখা।
বাজারের একশত গজের মধ্যে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী নিমসার জুনাব আলী ডিগ্রি কলেজ, নিমসার উচ্চ বিদ্যালয়, নিমসার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নিমসার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ প্রায় ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বজারের মধ্যে শতাধিক সবজির আরদসহ প্রায় ৫ শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কিন্তু এই বাজারে নেই সঠিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা, নেই কোন নির্দিষ্ট ময়লা ফেলার স্থান। ফলে জমে থাকা ময়লা আবর্জনা বৃষ্টির পানিতে ভেসে বাজারের অলি-গলিতে জমে থাকে।
বৃষ্টি শেষ হওয়ার দু’একদিন পর পর্যন্ত বাজারের দক্ষিন-পশ্চিমাংশে জমে থাকে ময়লা পানি। তছাড়া বাজারের মধ্যেই রয়েছে চার-পাঁচটি খাবারের হোটেল এই হোটেলগুলির ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থান না থাকায় ড্রেনের মধ্যে ফেলছে ময়লা আবর্জনা। ফলে সরু ড্রেনগুলি দিয়ে বৃষ্টির পানি সরতে পারছে না।
এদিকে দীর্ঘদিন ধরে ড্রেনগুলি সংস্কার কিংবা পরিস্কার না করায় আবর্জনায় ভর্তি হয়ে আছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একাধিক আবেদন করেও কাজ হচ্ছে না বলে ব্যবসায়ীরা জানান। তাছাড়া বাজারের মধ্যে দু’টি গন-শৌচাগার থাকলেও একটি সম্পূর্ন বন্ধ ও অন্যটি ব্যবহারের অনুপযুগী হয়ে আছে। ব্যবসায়ীদের বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য নেই কোন পাম্প, দু’একটি টিউবওয়েল থাকলেও সেগুলি বেশি সময় অকেযো থাকে। ফলে দূর-দূরান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ীরা অসুবিধার মধ্যে পরে। তাই ব্যবসায়ীদের দাবী বাজারে পানি নিস্কাশন, ময়লা ফেলার স্থান ও গণ-শৌচাগার করা হউক।
এ বিষয়ে স্থানীয় আ’লীগ নেতা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক শেখ আব্দুল ওহাব মাষ্টার জানান, বাজারের দক্ষিন অংশ কিছুটা নিচু থাকায় বৃষ্টির পানি জমে থাকে, দক্ষিন অংশ থেকে পূর্বদিক পর্যন্ত বড় আকারে একটি ড্রেন নির্মাণ করে পাশ্ববর্তী খালে পনি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করলে বাজারের মধ্যে বৃষ্টির পানি জমবেনা।
প্রতিটি গলিতে ছোট ড্রেন তৈরী করে মহাসড়কের পার্শ্বে বড় ড্রেন সংযুক্ত করে দিলে সহজে পানি নিস্কাশন হবে। এসকল বিষয় নিয়ে গত ৩ মাসে বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলুল জাহিদ পাভেল এর নিকট দু’টি আবেদন করা হলের কোন কাজ হয়নি।
নিমসার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সেক্রেটারী ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক মোঃ সামসুল আলম বলেন, বর্ষাকালে বাজারের মধ্যে ময়লা-আবর্জনা বৃষ্টির পানিতে মিশে গিয়ে চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পরে। ময়লা-আবজনা থেকে দূর্গন্ধ ও রোগ-জীবাণু ছড়াচ্ছে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে বাজারে ড্রেন নির্মাণ করা হউক। এ বিষয়ে বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ব্যবসায়ীদের আবেদন পেয়েছি, বাজারের মধ্যে ড্রেন নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে।