মাহাবুবুর রহমান.কক্সবাজার
চাঁদ দেখা হিসাবে চলতি মাসের ২৬ বা ২৭ তারিখে পবিত্র রমজান মাস শুরু হতে পারে। তাই রমজান মাসের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন নিত্যপণ্য থেকে শুরু করে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে রমজান আসার আগেই । বর্তমানে বাজারে চনা ৮৫ টাকা, চিনি ৬৫ টাকা, আর খেসারীর ডাল ৮০ টাকা এবং রসুন ও বেশ চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া সব ধরনের তরিতরকারীর দাম ও বেড়েছে। এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে রোজা আসতে আসতে দাম আরো বাড়তে বলে ধারনা করছেন খুচরা ব্যবসায়িরা। তবে মূল আড়ত থেকে দাম না কমালে এখানে করার কিছুই থাকে না বলেও জানান তারা। একই সাথে কিছু অসাধু চিন্ডিকেট প্রতি বছর এই কাজ করে তারা পণ্য মজুদ থাকা সত্বেও মাল সংকট দেখিয়ে বাজারে দামের উপর প্রভাব ফেলে বলেও জানান তারা।
কক্সবাজার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ পরিচালক খাজা আহাম্মদ মিয়াজী বলেন চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি মাসের ২৬ বা ২৭ তারিখ প্রবিত্র রমজান মাস শুরু হতে পারে। সে হিসাবে সবার উচিত এখন থেকে রমজানের প্রস্তুতি গ্রহন করা। এবং রোজার সম্মান রক্ষার্থে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসা।
এদিকে রমজান আসার আগেই বাড়ছে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম বিশেষ করে রমজান মাসে বিশেষ চাহিদা আছে এমন পণ্যের দাম বেশি বাড়ছে যেমন চনা ১ মাস আগেও ছিল ৭০ থেকে ৭২ টাকা এখন সেটা ৮৫ টাকা কেজীতে বিক্রি হচ্ছে। আর চিনির দাম বেড়েছে কেজীতে ১০ থেকে ১২ টাকা এখন খুচরা বাজারে চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়। দাম বাড়ার তালিকায় আছে আরো বেশ কয়েক টি পণ্য মটর ডাল ৪০ টাকা, খেসারী ডাল ৮০ টাকা, রসুন ভাল মানের ২৩০ টাকা সয়াবিন তৈল ৯০ টাকা কেজী দরে বিক্রি হচ্ছে।
তবে এখনো সহনিয় পর্যায়ে আছে পেয়াজের দাম। এ ব্যপারে কালুর দোকান এলাকার ব্যবসায়ি আবদুল করিম বলেন আমরা খুচরা ব্যবসায়ি পাইকারী দোকান থেকে যা কিনে আনি সেটার উপর সামান্য লাভে খুচরা বাজারে বিক্রি করি।
এখন বেশ কয়েক টি নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে শুনা যাচ্ছে সে সব পণ্যের দাম আরো বাড়তে পারে। বিশেষ করে রোজাকে কেন্দ্র করে প্রতি বছরে কিছু পণ্যের দাম বাড়ে এবারে সেই তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে না। আর সব ছেয়ে বেশি বেড়েছে চালের দাম যেটা সপ্তাহ সপ্তাহে বাড়ছে এখন কেজীতে ৫২ টাকার নীচে ভাল মানের চাল নেই। এতে সাধারণ মানুষ খুব কস্ট পাচ্ছে, কারন অন্যান্য পণ্য না কিনলেও চাল বাধ্যতা মূলক ভাবে কিনতে হচ্ছে।
এদিকে বড় বাজার এলাকার ব্যবসায়ি জসিম উদ্দিন বলেন আমরা চট্টগ্রাম থেকে মাল আনি তারা সেখানে দাম বাড়িয়ে রাখছে এতে আমাদের কিছুই করার নেই। তাদের দামবাড়ার কারন জানতে চাইলে বলে ঢাকাতে বাড়ছে আমরা কি করবো ? আর বেশি কথা বল্লে মাল ও দিতে চায় না। আসলে এগুলো অনেক উপরের সিন্ডিকেট তারা একটি মৌসুম দেখে এগুলো করে যার ফল ভোগ করে সাধারণ মানুষ। আবার সে সব কালো সিন্ডিকেটরা এখন থেকে পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে কারন রোজার কয়েক দিন আগে সরকার পণ্যের দাম ঠিক করে দেবে তাই এখন থেকে বাড়িয়ে রাখছে যাতে তখন বর্ধিত দাম রাখতে পারে। আমরাও চাই কম দামে পণ্য বিক্রি করতে কিন্তু কি করবো পারছি না।
এদিকে বড় বাজারে গিয়ে দেখা গেছে ৪০ টাকার নীচে কোন সবজি নেই। এক সপ্তাহর ব্যবধানে বেড়েছে সব ধরণের তরিতরকারীর দাম। এ সময় আলাপ কালে তরকারি ব্যবসায়ি নজির আলম বলেন ১৫ দিন আগেও তরিতরকারীর দাম কম ছিল হঠাৎ কেন দাম বাড়ছে বুঝতে পারছি না। তবে অনেকে ধারনা করছে সামনে রোজা আসছে তাই এখন থেকে দাম বাড়ছে। যেমন কাঁচা মরিচ এখন কেজী ৪০ টাকাতে আছে সেটা কম বাড়বে বলা যাচ্ছে না।
বেগুন ১০ দিন আগেও ছিল ২৫ টাকা এখন বিক্রি করছি ৪০ টাকায়, তিত করলা ৪০, বরবটি ৪০ মোট কথা সব কিছু এখন দাম বাড়তির দিকে।
এ ব্যপারে কক্সবাজার শহরের টেকপাড়া জামে মসজিদের খতিব মৌলানা মোজাম্মেল হক বলেন সারা বছর পণ্যের দাম কম থাকে আর প্রতি বছর রমজান মাস আসলে পণ্যের দাম বাড়ে সেটা খুবই দুঃখ জনক। আমরা মুসলমান আর আমাদের কাজে কর্মে সেটা প্রকাশ পায় না। যারা রমজান কে কেন্দ্র করে পণ্যের দাম বাড়িয়ে মোনাফা করবে তাদের জন্য কঠিন আজাব অপেক্ষা করছে বলেও জানান তিনি।
কক্সবাজার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ পরিচালক খাজা আহাম্মদ মিয়াজী বলেন রোজা আল্লাহ তালার নিয়ামত কোন রোজাদারকে যে কোন ধরনের সহেযাগিতা করাও সওয়াবের কাজ। তেমনি কোন ভাবে কস্ট দেওয়া গুনাহ, যারা রোজাকে কেন্দ্র করে নিত্যপণ্যের দাম বাড়াচ্ছে তারা কোন ভাবেই ঠিক করছে না। তিনি বলেন আমার জানা মনে অনেক কম মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ট দেশও রমজান মাস কে সম্মান করে সারা বছরের ছেয়ে দাম কমিয়ে দেয়। অথচ সংখ্যা গরিষ্ট মুসলমানের দেশ হয়েও আমাদের এখানে পণ্যের দাম বাড়ে- এটা খুবই দুঃখ জনক।