সম্পাদকীয়
অসুখ সারাতে অনেক অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার হয়েছে। কিন্তু কোনোটাতেই কাজ হয়নি। ডাক্তার বলেছেন, রোগ নির্ণয়ে ভুল হয়েছে। অ্যান্টিবায়োটিকে এ রোগ সারবার নয়। এ রোগের জন্য চাই রেডিওথেরাপি, কেমো অথবা সার্জারি। আমাদের শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সে পথে যেতে চাননি। তিনি চিকিৎসা ব্যবস্থাকে অ্যান্টিবায়োটিকে আটকে রেখে রোগ আরো জটিল করে তুলেছেন। কিন্তু কেন? কারণটি অজ্ঞাত।
এদিকে দুর্নীতিতে জরাগ্রস্ত ক্যানসারাক্রান্ত শিক্ষাব্যবস্থার বিরতিহীন প্রশ্ন ফাঁসের তালিকায় এবার ইংরেজি প্রথম পত্র। বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয়পত্রের পর এবার যুক্ত হলো ইংরেজি প্রথম পত্র। গত কয়েক বছর ধরে প্রশ্নপত্র ফাঁস যেন মহামারীর আকার ধারণ করেছে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে করতে দেশের প্রায় প্রতিটি মানুষ যখন অতিষ্ঠ ও হাল ছেড়ে দেওয়ার অবস্থায় উপনীত, ঠিক তখনই যেন ঘুম ভাঙল কুম্ভকর্ণের।
গত সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে শিক্ষামন্ত্রীকে ব্যর্থতা, দুর্নীতি ও অনিয়মের কথা স্বীকার করে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। অন্যথায় মন্ত্রীকে বরখাস্ত করে নতুন মন্ত্রী নিয়োগ দিতে প্রধানমন্ত্রীকে পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ করেন সংসদ সদস্য বাবলু। তার বক্তব্য শেষে ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া বলেছেন, নিশ্চয়ই প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি শুনেছেন। তিনি তার বিবেক বিবেচনায় জাতির স্বার্থে যতটুকু প্রয়োজন, অবশ্যই তা করবেন।
ডেপুটি স্পিকার যে আশ্বাসবাণী শুনিয়েছেন তাতে জাতি কতটা আশ্বস্ত হতে পেরেছে জানা না গেলেও এটুকু বলা যায়, শিক্ষামন্ত্রী গোটা শিক্ষাব্যবস্থাকে পাতালের যে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছেন এ দায় তাকেই বহন করতে হবে। আর এ দায় কাঁধে নিয়ে পদত্যাগ করলে জাতি তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে। কৃতজ্ঞ থাকবে এ কারণে যে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে ব্যর্থতার দায় কাঁধে নিয়ে মন্ত্রিসভার একজন পদত্যাগ করলেন। ভবিষ্যতে এটি একটি উদাহরণ হয়ে থাকার সুযোগ পাবে।
তবে এ কথাও সত্য, শুধু মন্ত্রী পদত্যাগ করলেই যে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, সে কথাও হলপ করে বলা যাবে না। নতুন মন্ত্রী নিয়োগের সঙ্গে সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে একটি বড়মাপের সার্জারির প্রয়োজন হবে। আর সার্জারিতে সফল হওয়ার ওপরই নির্ভর করছে শিক্ষাব্যবস্থার ভবিষ্যৎ। আমরা আশা করি, সফল অস্ত্রোপচারের মধ্য দিয়ে গোটা শিক্ষাব্যবস্থা ফিরে পাবে তার পরিপূর্ণ সুস্থতা।