রেজাউল করিম বাদল, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি: দেশের একমাত্র সাংস্কৃতিক বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নৈতিক স্খলনের অভিযোগে বাংলা বিভাগের বহিস্কৃত শিক্ষক প্রফেসর একেএম শামসুদ্দিন চৌধুরীকে পুর্নবহাল করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এ শিক্ষক স্বপদে যোগদান করার পর ফের তোলপাঁড় শুরু হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে।শিক্ষকদের অভিযোগ, ২০১০ সালের ২২জুলাই রাতে নারী কেলেংকারীর ঘটনায় ঘটিত একাধিক তদন্তে প্রফেসর একেএম শামসুদ্দিন চৌধুরী দোষী প্রমাণিত হওয়া তাকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়। এরপর অভিযুক্ত শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের বিরুদ্ধে আদালতে দুটি মামলা দায়ের করে। এর মধ্যে সম্প্রতি ভিসির সাথে লাভজনক সমাঝোতায় তিনি একটি মামলা প্রত্যাহার করলেও আরো একটি এখনো মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। কিন্তু আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকার পরও সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে বিশ্ববিদ্যায়ের ভিসি একটি মহলের কারসাজিতে শামসুদ্দিন চৌধুরীকে পুর্নবহাল করেছে। যা আইনগত ভাবে প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করেন অনেকে।বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড.সাহাবুদ্দিন বাদল বলেন, ২২জুলাই রাতের ঘটনায় দফায় দফায় ৪টি তদন্ত কমিটি গঠিত হলে প্রথম দুটি তদন্তে তিনি দোষি প্রমাণিত হন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি কর্তৃক গঠিত দুটি তদন্ত কমিটি নৈতিকস্খলনের অভিযোগটি পাশ কাটালেও শামসুদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে আচরনগত মারাত্মক সমস্যা আছে বলে প্রতিবেদনে দাবী করেন। কিন্তু সম্প্রতি ভিসি সিন্ডিকেট সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে নিজস্ব ক্ষমতাবলে শামসুদ্দিন চৌধুরীকে পুর্নবহাল করেছে।বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আহম্মেদুল বারী জানান, আদালতে বিষয়টি বিচারাধীন থাকা অবস্থায় শামসুদ্দিন চৌধুরীর পুর্নবহাল অবৈধ।বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার আমিনুল ইসলাম বলেন, বিভাগীয় তদন্তে নৈতিকস্খলনের অভিযোগ প্রমানণিত হয়নি। পরে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তক্রমে ভিসি স্যার বাংলা বিভাগের শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডীন, ট্রেজারার, প্রক্টর, প্রক্টর বডি ও বিভাগীয় প্রধানদের সাথে আলোচনা করলে সবাই পুর্নবহালের পক্ষে মত দেয়। সে কারনেই বহিস্কৃত শিক্ষক শামসুদ্দিন চৌধুরীকে স্বপদে পুর্নবহাল করা হয়েছে।তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মাহাবুবুর রহমান এবং আনন্দ মোহন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ জাকির হোসাঈন বলেন, সিন্ডিকেট সভায় পুর্নবহালের ক্ষমতা দেয়া হয়নি। তবে ভিসিকে বলা হয়েছিল সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী সভায় সিন্ডিকেটকে বিষয়টি অবহিত করতে। জাকির হোসাঈন আরো জানান, পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় বিষয়টি নিয়ে বিস্তর আলোচনা করা হবে।
নৈতিকস্খলনের অভিযোগে বহিস্কৃত শিক্ষক পুর্নবহাল, প্রশাসনে তোলপাঁড়
November 1, 2016