নিজের বাল্য বিয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করা অদম্য সাহসী নিলীমা

বরিশাল প্রতিনিধিঃ
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় নিজের বাল্য বিয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানো হামলার শিকার আহত এসএসসি পরীক্ষার্থীর বাবা ও জোর করে বিয়ে দেয়ার জন্য ঠিক করা পাত্রকে জেল জরিমানার দণ্ড প্রদান করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। বাল্য বিয়েতে স্কুল ছাত্রী রাজি না হওয়ায় তাকে বাধ্য করতে চাচা ও চাচীদের বিরুদ্ধে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয়ার ঘটনায় স্কুল ছাত্রী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও মামলা রেকর্ড করেনি পুলিশ।

স্কুল ছাত্রীকে বাল্য বিয়ে দেয়ার অপরাধে তার বাবা নিপুল কর ও পাত্র অমর সরকারকে বুধবার এসআই মোশারফ হোসেন ভ্রাম্যমান আদালতে হাজির করেন। ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজী তারিক সালমন বাল্য বিয়ে নিরোধ আইন ২০১৭ এর ৮ ধারায় ছাত্রীর বাবা নিপুল করকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং পাত্র অমর সরকারকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ প্রদান করেন।

এ দিকে নিজের বাল্য বিয়েতে নিলিমা রাজি না হওয়ায় সোমবার রাতে তার চাচা বিপুল, রনি ও চাচী অনিতা, শিক্ষার্থী নিলীমা, তার মা ও বোনকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয়। এ ঘটনায় মঙ্গলবার বিকেলে নিলীমা বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও গতকাল বুধবার বিকেল পর্যন্ত মামলা হিসেবে রেকর্ড করেনি পুলিশ। ওসি মনিরুল সাংবাদিকদের জানান,

বিবাদীদের গ্রেফতার করে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বিচার করা হবে। তবে মারধরের ঘটনায় তিনি মামলা রেকর্ড করবেন কিনা তার কোন সদোত্তর দেননি। উল্লেখ্য, উপজেলার রতœপুর ইউনিয়নের বারপাইকা গ্রামের নিপুল করের মেয়ে ও বারপাইকা স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী নিলীমা করকে তার অমতে তার কাকা একই বাড়ির বিপুল কর, রনি কর ও বিপুলের স্ত্রী কাকী অনিতা কর জোরপূর্বক একই উপজেলার মোল্লাপাড়া গ্রামের আদিত্য সরকারের ছেলে ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল চালক অমর সরকারের সাথে ২৭ এপ্রিল বাল্য বিয়ের দিন ধার্য করে।

নিলীমাকে মারধরে বাঁধা দিতে গেলে মা ও ছোট বোন স্কুল ছাত্রী ঈশিতাকেও মারধর করে আহত করে কাকি ও দুই কাকা। ওই রাতেই আহত নিলীমা, তার মা অনিতা ও বোন ঈশিতাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

মঙ্গলবার আগৈলঝাড়া প্রেসক্লাবে আহত নিলীমা তার বোন ঈশিতাকে নিয়ে ঘটনার বর্ননা দিয়ে প্রতিকারের জন্য আইনগত সহায়তা চাইতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে যাবার পথে বিয়ের পাত্র অমর সরকার তার গতিরোধ করে উপজেলা পরিষদ চত্তর থেকে নিলীমাকে জোর করে তুলে নিতে চাইলে তাদের ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে অমরকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। আহত মা ও মেয়েরা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।