ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে মন্দির ভাঙচুরসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেফতার হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রোববার দুপুরে রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সরাফ উদ্দিন এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
জেলা জজ আদালতের পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) মো. মাহবুবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জাগো নিউজকে জানান, দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) সাতদিনের রিমান্ড আবেদন জানানো হয়। তবে ওইদিন আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় রোববার দুপুরে রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানি হয়। আদালতের বিচারক শুনানি শেষে পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) ঢাকার ভাটারা থানা এলাকা থেকে আঁখিকে আটক করে পুলিশ। এদিন বিকেল ৩টার দিকে আঁখিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে ভাটারা থানা পুলিশ। এরপর ৩০ অক্টোবর নাসিরনগরের গৌরমন্দির ভাঙচুর মামলায় আঁখিকে গ্রেফতার দেখানো হয়। পরে গত শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) দুপুর পৌনে ১টার দিকে আঁখিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমান্ড আবেদন জানিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সরাফ উদ্দিনের আদালতে পাঠায় পুলিশ। এদিন আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বিকেলে আঁখিকে কারাগারে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৯ অক্টোবর ফেসবুকে পবিত্র কাবা শরীফ নিয়ে ব্যাঙ্গচিত্র পোস্ট দেয়ার অভিযোগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) মামলায় গ্রেফতার নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামের জগন্নাথ দাসের ছেলে রসরাজ (৩০) দাসের ফাঁসির দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে নাসিরনগর উপজেলা। পরদিন (৩০ অক্টোবর) মাইকিং করে সমাবেশ ডাকে দুটি ইসলামী সংগঠন। সমাবেশ শেষ হওয়ার পরপরই দুষ্কৃতকারীরা নাসিরনগর উপজেলা সদরে হামলা চালিয়ে অন্তত ১০টি মন্দির ও শতাধিক ঘর-বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এরপর ৪ নভেম্বর ভোরে ও ১৩ নভেম্বর ভোরে দুষ্কৃতকারীরা আবারও উপজেলা সদরে হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্তত ৬টি ঘর-বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এসব ঘটনায় নাসিরনগর থানায় পৃথক ৮টি মামলা দায়ের করা হয়। মামলাগুলোতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাসহ ১০৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।