নারায়ণগঞ্জপ্রতিনিধি: নির্বাচন হবে কি হবে না, তা নিয়ে নানা সন্দিহানের সৃষ্টি হলেও অবশেষে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল আলোচিত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। জানাগেছে, আগামী ২১ ডিসেম্বর নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন। আর আগামী নভেম্বর মাসে ঘোষণা করা হবে তফসিল।সূত্রমতে, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর। আর প্রথম সভা হয় ওই বছরের ২৭শে ডিসেম্বর। সেই অনুযায়ী, এই সিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হবে চলতি বছরের ২৬শে ডিসেম্বর। সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিধিমালা অনুযায়ী, মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পূর্ববর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। সেই হিসেবে, পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময়সীমা আগামী ২৯শে জুন থেকে ২৬শে ডিসেম্বর।এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নির্বাচন কমিশনার জানান, কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদ নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের জন্য এটাই শেষ বড় কোনো নির্বাচন। ডিসেম্বরের মধ্যেই যেহেতু নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন করার ব্যাপারে বাধ্যবাধকতা রয়েছে, সেহেতু এই সময় অতিক্রম করার সুযোগ নেই। তাই আগামী নভেম্বর মাসে তফসিল ঘোষণা আর ডিসেম্বর মাসের ২১ তারিখ সিটির নির্বাচন অনুষ্ঠান করার ব্যাপারে পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।এদিকে, দলীয় প্রতীকে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে বেশ তোড়জোড় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে মহানগর আওয়ামীলীগ সভাপতি আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেনের নাম ইতিমধ্যেই মেয়র প্রার্থী হিসেবে সাংসদ শামীম ওসমান ঘোষণা দেয়ায় ‘নৌকা’ পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বর্তমান মেয়র নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সদ্য নির্বাচিত সহ-সভাপতি ডা: সেলিনা হায়াত আইভী। কেননা, তার মতে ‘নৌকা’র মালিক শেখ হাসিনা। তিনিই নির্ধারন করবেন প্রতীক কাকে দিবেন।অন্যদিকে, বিরোধী দল জাতীয়পার্টি নিশ্চুপ থাকলেও কম যায়না বিএনপি। মেয়র প্রার্থী হওয়ার প্রকাশ্যে অনীহা প্রকাশ করলেও এখনো ঘোষণার অপেক্ষায় আছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি এড. তৈমূর আলম খন্দকার ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সাংসদ এড. আবুল কালাম। তবে ধানের শীষ প্রত্যাশায় মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন বিএনপির সম্ভাব্য দুই জন মেয়র প্রার্থী নগর বিএনপির সাধারন সম্পাদক এটিএম কামাল ও নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এড. সাখাওয়াত হোসেন খান। এছাড়াও বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টি মেয়র প্রার্থী হিসেবে প্রচারনা শুরু করে দিয়েছেন গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশন সভাপতি এড. মাহবুবুর রহমান ইসমাইল।অপরদিকে, বসে নেই কাউন্সিলর প্রার্থীরাও। সদর, বন্দর, সিদ্ধিরগঞ্জে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীরা।প্রসঙ্গত নির্বাচন কমিশনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, নারায়ণগঞ্জ সিটিতে সাধারণ ওয়ার্ড রয়েছে ২৭টি। সংরক্ষিত ওয়ার্ড রয়েছে ৯টি। গত নির্বাচনের হিসেব অনুযায়ী, এই সিটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৩ হাজার ৭০৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছে ২ লাখ ৩ হাজার ৯৬ জন। মহিলা ভোটার রয়েছে ২ লাখ ৬১০ জন।