নারায়ণগঞ্জপ্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) ও জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে। প্রথমবারের মতো সরকার ঘোষিত সময় অনুযায়ী, আগামী ২৮ ডিসেম্বর জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এর কাছাকাছি সময়ের মধ্যে সম্ভাব্য ২১ ও ২২ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনের ভোট গ্রহণের দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হবে বলে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে।বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে নির্বাচন কমিশনার মো: শাহনেওয়াজ বলেন, ‘নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে জেলা পরিষদের পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিলও একই সঙ্গে ঘোষণা করা হতে পারে।নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সিটি করপোরেশন ও জেলা পরিষদ নির্বাচনের বিধিমালা ও আচরণ বিধির খসড়া চূড়ান্ত করে, তা ভেটিংয়ের জন্য ইতোমধ্যে আইন মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। ভেটিং পেলে এগুলো গেজেট আকারে প্রকাশিত হবে।’তিনি আরো জানান, ‘যেহেতু ডিসেম্বরের মধ্যে আমাদের নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন করতে হবে, সেজন্য নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের দিকে আমরা এর তফসিল ঘোষণা করার প্রস্তুতি নিয়ে এগুচ্ছি।’এর আগে গত ২৪ অক্টোবর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় জেলা পরিষদ নির্বাচনের তারিখ ২৮ ডিসেম্বর নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। পরে তা কমিশনকে জানিয়ে দিয়ে ওই তারিখে নির্বাচন অনুষ্ঠানের অনুরোধ জানায়। আইন অনুযায়ী, কমিশন এখন ২৮ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণের দিন নির্ধারণ করে তফসিল ঘোষণা করবে।গত সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিংকালে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ। এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি জানান, ‘প্রথমবারের মতো নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধান অনুসারে, সরকার ২৮ ডিসেম্বর ওই নির্বাচনের ভোটগ্রহণের তারিখ ঠিক করেছে। ওই তারিখে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আমরা প্রয়োজনীয় বিধি প্রস্তুত করে তা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে তফসিল ঘোষণা করে আমরা নির্বাচনটা করলে ফেলবো।’প্রসঙ্গত, অন্যান্য নির্বাচনের মতো জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল নির্বাচন কমিশনের ঘোষণার কথা থাকলেও আইন অনুযায়ী, প্রথমবারের মতো নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকার তারিখ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করবে বলে জেলা পরিষদ আইনে উল্লেখ করা হয়েছে। সেই হিসেবে সরকার এ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে তা গেজেট আকারে প্রকাশ করে কমিশনকে জানিয়ে দিয়েছে।এদিকে, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের মেয়র প্রার্থী হতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বর্তমান মেয়র ডা: সেলিনা হায়াত আইভী ও মহানগর আওয়ামীলীগ সভাপতি আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন। আর বিএনপির প্রার্থী হিসেবে জেলা বিএনপির সভাপতি এড. তৈমূর আলম খন্দকার ও নারায়ণগঞ্জ-৫ সাবেক সাংসদ এড. আবুল কালাম প্রকাশ্যে কিছু না বললেও ‘ধানের শীষ’ পাওয়ার লক্ষে লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন দলটির অপর দুই মেয়র প্রত্যাশী নগর বিএনপির সাধারন সম্পাদক এটি এম কামাল ও নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এড. সাখাওয়াত হোসেন খান। অপরদিকে, জাতীয়পার্টির পক্ষে এখনো পর্যন্ত কোন মেয়র প্রার্থীর নাম ঘোষণা দেয়া না হলেও প্রয়াত সাংসদ নাসিম ওসমানের স্ত্রী পারভীন ওসমানের নাম শোনা যাচ্ছে। এছাড়াও বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির প্রার্থী হিসেবে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ওয়ার্কাস শ্রমিক ফেডারেশন সভাপতি এড. মাহবুবুর রহমান ইসমাইল ব্যাপক প্রচারনা চালাচ্ছেন।অন্যদিকে, জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীতার বিষয়ে তেমন কাউকে উদ্যোগী হতে দেখা না গেলেও আওয়ামীলীগের প্রার্থী হতে লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন বর্তমান প্রশাসক আব্দুল হাই, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি চন্দন শীল ও ওলামালীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ভন্ড পীর হাবিবুল্লাহ কাঁচপুরী।