অনলাইন ডেস্ক: আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেছে গণফোরামের সভাপতি প্রবীণ রাজনীতিবিদ ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর লক্ষ্যে বুধবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ সিলেটে সাধক পুরুষ হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার জিয়ারত করেন। মাজার জিয়ারত শেষে মাত্র ২ মিনিটের পথসভায় করেন ঢাকা থেকে আসা নেতৃবৃন্দ।
পথসভায় মাত্র ৪৫ সেকেন্ড বক্তব্য দেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড.কামাল হোসেন।
যদি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সিলেট সফরকে ঘিরে পূর্ণ প্রস্তুতি ছিল সিলেট বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনগুলোর। পাশাপাশি ঐক্যফ্রন্টের সাথে থাকা অন্য সংগঠনগুলোও ছিল মাঠে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জনসভা করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে ঐক্যফ্রন্ট।
বুধবার হযরত শাহজালাল মাজারের প্রধান ফটকে পথসভার জন্য লাগানো মাইক ও ২/৩টি চেয়ার ও টেবিল বিএনপির পক্ষ থেকে রাখা হলেও পুলিশি বাধায় মাইকগুলো খুলে নেওয়া হয়। পথসভার কোন অনুমতি নেই এমন অজুহাতে পুলিশ মাইকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। এমন অভিযোগ বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের।
এদিকে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতৃবৃন্দের ১২টার দিকে আসার কথা থাকলেও পরবর্তীতে জানানো হয় ২টার দিকে সিলেট এসে পৌছাবেন। কিন্তু ফ্লাইট বিলম্বের কারণে সিলেট এসে নেতৃবৃন্দের পৌছাতে পৌছাতেই হয়ে যায় প্রায় সাড়ে চারটা। পরবর্তীতে মাজার জিয়ারত শেষে ২ মিনিটেরও কম সময়ের সংক্ষিপ্ত পথসভায় বক্তব্য দেন ড.কামাল হোসেন। ৪৫ সেকেন্ডের বক্তব্যে তিনি জনগণকে দেশের মালিক উল্লেখ করে তিনি সবাইকে এই দেশ পাহারা দিয়ে দেশের মালিকানা রক্ষা করার আহবান জানান। তিনি নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা অনেক বিজয় ছিনিয়ে এনেছি। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে গণতন্ত্র, সংবিধান ও দেশের মালিকানা রক্ষায় কাজ করার আহবান জানান।
এর আগে সিলেট শাহজালাল মাজারে পৌছেই জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন ড.কামাল হোসেন। শুরুতেই তিনি নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই বলে অভিযোগ করেন। তিনি জানান, প্রতিদিনই ঐক্যফ্রন্টের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের ব্যপক ধরপাকড় করছে পুলিশ। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি জানান, বর্তমান সরকারের অসৎ উদ্দেশ্য সফল হতে দেওয়া হবে না। তাদের অসৎ উদ্দেশ্য ব্যর্থ করতে নেতাকর্মীদের সজাগ থাকার আহবান জানান তিনি।
জনগণকে দেশের মালিক উল্লেখ করে তিনি সবাইকে এই দেশ পাহারা দিয়ে দেশের মালিকানা রক্ষা করার আহবান জানান। দেশের ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে ১০-১২কোটি ভোটার রয়েছেন। তারা ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিবেন। ভোট না দিলে দেশের মালিকানা রক্ষা হবে না। ভোট দিয়ে কেন্দ্র পাহারা দিতে হবে।স্বল্প সময়ে ঐক্যফ্রন্ট অসাধারণ সাড়া পেয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট খুব কম সময়ে অভাবনীয় সাড়া পেয়েছে। দেশের সর্বস্তরের মানুষ ঐক্যফ্রন্টের পক্ষেই আছে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কি কোন অবস্থাতেই নির্বাচন বর্জন করতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচন বর্জনের কোন সম্ভাবনা নেই। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ছিলো, আছে, থাকবে। চূড়ান্ত বিজয় না হওয়া পর্যন্ত ঐক্যফ্রন্ট মাঠ ছাড়বে না।
উল্লেখ্য, নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করতে আজ বুধবার বিকাল চারটার দিকে সিলেট এসে পৌছান ড. কামাল হোসেন, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, ড. জাফরুল্লাহ, নজরুল ইসলাম খানসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সিলেট শাহজালাল মাজার জিয়ারত শেষে ঐ এলাকায় সিলেট-১ আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী খন্দকার মুক্তাদিরের সমর্থনে গণসংযোগ ও পথসভা করেন তারা। এর আগে গত ২৪ অক্টোবর সিলেট থেকেই নির্বাচনী যাত্রা শুরু করেছিলো জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।( ফাইল ছবি)