নিজস্ব প্রতিবেদক
বিশ্বের সব জাতির সব মানুষের মানবাধিকার সংরক্ষণের নিশ্চয়তা থাকতে হবে- জাতিসংঘের এই সর্বজনীন ঘোষণার কথা উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, আজও বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে মানুষ একদলীয় স্বেচ্ছাচারী শাসন আর গোষ্ঠী-বর্ণ-জাতিগত সংঘাতে অবলীলায় খুন ও গুপ্তহত্যার শিকার হচ্ছে। অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। দেশে এখন মানুষের মানবাধিকার শূন্যের নিচে। ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন খালেদা জিয়া। এবারের মানবাধিকার দিবসে জাতিসংঘে নির্ধারিত প্রতিপাদ্য ‘বছরের ৩৬৫ দিনই মানবাধিকার দিবস’।
বিবৃতিতে খালেদা বলেন, বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বছরের ৩৬৫ দিনই এ দেশের মানুষের মানবাধিকার হরণের দিবস। দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়। শুধু বিরোধী দলের নেতাকর্মীরাই নয়, সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, ছাত্র-শিক্ষক, শ্রমিক, নারী, শিশুসহ কারোরই কোনো নিরাপত্তা নেই। গুম, গুপ্তহত্যা এবং বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হচ্ছে তারা। সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করলে বিরোধী দলের নেতাকর্মী ছাড়াও দলনিরেপক্ষ রাজনৈতিক বিশ্লেষক, টকশো আলোচকদের বিরুদ্ধেও মিথ্যা মামলা করা হচ্ছে। কাউকে কাউকে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশে এখন ভয়াবহ দুঃসময় চলছে বলে দাবি করেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের পূর্বাপর বাংলাদেশকে বধ্যভূমিতে পরিণত করা হয়েছে। বর্তমান অবৈধ ক্ষমতাসীন জোট সীমাহীন রক্তপাত ও বেপরোয়া নিপীড়ন নির্যাতনের মধ্য দিয়ে জনগণের সব গণতান্ত্রিক অধিকারকে হরণ করে নিয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের মানবাধিকার শূন্যের নিচে অবস্থান করছে।
‘বছরের ৩৬৫ দিনই মানবাধিকার দিবস’- জাতিসংঘের এবারের এই স্লোগানের কথা উল্লেখ করে বিএনপি-প্রধান বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে মনে হয় ৩৬৫ দিনই এদেশের মানুষের মানবাধিকার হরণের দিবস। এই নৈরাজ্যকর দুঃশাসনের ছোবল থেকে মুক্তি পেতে আমাদের এই মুহূর্তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য এগিয়ে আসতে হবে।
বিবৃতিতে খালেদা জিয়া আরো বলেন, দেশের মানুষের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তার জন্য জনগণের মিলিত কণ্ঠের আওয়াজ তুলে বর্তমান অপশাসনের অবসান ঘটাতে হবে। জাতিসংঘ ঘোষিত মানবাধিকার দিবসে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের নির্দেশনায় বিশ্বের সকল দেশে প্রতি বছর ১০ ডিসেম্বর পালিত হয় মানবাধিকার দিবস। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক ১৯৪৮ সাল থেকে দিবসটি উদযাপন করা হয়। ১৯৫০ সালের ৪ ডিসেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৩১৭তম পূর্ণ অধিবেশনে ৪২৩(৫) অনুচ্ছেদের মাধ্যমে সদস্যভূক্ত দেশসহ আগ্রহী সংস্থাগুলোকে দিনটি তাদের মতো করে উদযাপনের আহ্বান জানানো হয়।