দিনাজপুরে বয়লার বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮

দিনাজপুর প্রতিনিধি : দিনাজপুরে যমুনা অটোরাইস মিলে বয়লার বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮ জনে দাঁড়িয়েছে।

রবিবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই মিলের ব্যবস্থাপক রঞ্জিত বসাক (৫০) ও শ্রমিক দেলোয়ার হোসেন (৩০) মারা গেছেন। এদের মধ্যে রঞ্জিত শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে এবং দেলোয়ার রবিবার দুপুর ১টার দিকে মারা যান।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শুক্রবার তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছিল।

নিহত দেলোয়ার হোসেনের মামা মোশারফ হোসেন জানিয়েছেন, রঞ্জিতের শরীরের ৯০ শতাংশ এবং দেলোয়ারের শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।

এ ছাড়া রবিবার রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শফিকুল ইসলাম ও উদয় কুমার নামে আরও দুই শ্রমিকের মুত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান মারুফুল ইসলাম।

পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্র জানা গেছে, বিস্ফোরণের এ ঘটনায় আহত শ্রমিক রঞ্জনা রায় (৪০) ও মোকসেদ আলী (৪৮) ঘটনার দিনই (গত বুধবার) মারা যান। এ ছাড়া আরিফুল ইসলাম (৩০) বৃহস্পতিবার ও রুস্তম আলী (৪৫) শুক্রবারে মারা যান।

বুধবার (১৯ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে দিনাজপুর সদর উপজেলার গোপালগঞ্জ শেখহাটি এলাকায় সুবল ঘোষের মালিকানাধীন যমুনা অটোরাইস মিলে বয়লার বিস্ফোরণ ঘটলে ৩০ জন দগ্ধ হন। দিনাজপুর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থল থেকে দগ্ধ ৩০ জনকে উদ্ধার করে দিনাজপুরের এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। এদের মধ্যে আশঙ্কাজনক ২১ জনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

রংপুর মেডিকেলের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান মারুফুল ইসলাম জানিয়েছেন, দগ্ধ প্রতিটি রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই মুহূর্তে তাদের শঙ্কামুক্ত বলা যাবে না।

এদিকে রবিবার (২৩ এপ্রিল) জেলার গোপালগঞ্জ হাটে যমুনা অটো রাইস মিলের বয়লার বিস্ফোরণে নিহত ও আহতদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের ও চরম অবহেলার জন্য মালিকের বিচারের দাবিতে জেলা কমিউনিস্ট পার্টি, জাসদ ও বাসদ (মার্কসবাদী) এর ডাকে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা সিপিবির সভাপতি কমরেড মেহেরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান বাদল, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, বাসদ মার্কসবাদী সংগঠক গোবিন্দ রায়। সভা পরিচালনা করেন কৃষক নেতা এস এম চন্দন।

ইতোমধ্যে প্রত্যেক নিহতের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা এবং আহতদের পরিবারকে ৫ হাজার টাকা আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেছেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুর রহমান।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের বরাদ্দকৃত অর্থ নিহত ও আহত পরিবারের মাঝে তুলে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দগ্ধদের সরকারিভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ঘটনা তদন্তে দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমানকে প্রধান করে ৬ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে দিনাজপুর জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে।