মাহাবুবুর রহমান: কক্সবাজার শহরের ঐতিহ্যবাহী কস্তুরাঘাটের জেগে উঠা চর এখন দখলকারীদের কবলে। সম্প্রতী কস্তুরাঘাট এলাকার বেশির ভাগ জমি টিন দিয়ে ঘেরা বেড়া তৈরি করে সেখানে মাছের খামার গড়ে তুলেছে সে সব দখলকারীরা। ইতি মধ্যে এ সব সরকারি খাস জমি তাদের নামে খতিয়ান করার জন্য প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানা গেছে।সচেতন মহলের দাবী এখনি উদ্যেগ না নিলে বাকঁখালীর মত মুল্যবান এসব সরকারি জমি প্রভাবশালীরা স্থায়ি ভাবে দখল করে ফেলবে এবং তাতে পাকা স্থাপনা নির্মান করলে তাদের আর উচ্ছেদ করা যাবে না। তাই দ্রুত কস্তুরাঘাট এলাকার জমি দখল মুক্ত করার দাবী জানান তারা।
সরজমিনে কস্তুরাঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে অল্প কয়েক মাস আগেও যেখানে নদীর পানি ছিল সে সব জমি এখন প্রভাবশালীরা বড় বড় পুকুরের মত করে দখল করে আছে। আর এসব জমিতে অনেকে মাছ চাষের জন্য পানিও জমিয়েছে। আবার বেশির ভাগ জায়গায় প্যরাবন থাকলেও সে সব প্যারাবন সহ দখল করেছে তারা। আর এ সব দখল করা জমিতে যাওয়ার জন্য রাস্তাও করেছে তারা। সব ছেয়ে বড় কথা এখানে কেউ যেন ছবি তুলতে না পারে সে জন্য কেয়ারটেকারকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া আছে। সে জন্য তার হাতে একটি লম্বা করিচি ও দেওয়া আছে। অনেক চেস্টা করেও দখলকারীদের নাম বের করতে না পারলেও আতিক মৌলবি নামের এক জনের নাম বলেছে কেয়ারটেকার।
এ ব্যপারে কক্সবাজার শহরের কস্তুরাঘাট এলাকার সমাজ সেবক খালেদ আজম বলেন বর্তমানে কস্তুরাঘাট এলাকার বেশির সরকারি জমি দখল হয়ে গেছে। খুব অল্প দিনের মধ্যে এসব জেগে উঠা চরে কয়েক ভাগ করে দখল করা হয়েছে। স্থানিয় ভাবে আমরা একবার প্রতিবাদ করলেও তারা প্রভাবশালী হওয়ায় সেটা কর্নপাত করেনি। বর্তমানে কস্তুরা ঘাট দিয়ে কোন ধরনরে লোজনের হাটাচলা না থাকায় এবং কোন ধরনের পণ্য উঠানামার কাজ না থাকায় এটি এথন পরিত্যক্ত হয়ে গেছে সে সুবাধে এখানে বিপুল পরিমান পলি মাটি জমে বিশাল এলাকা জুড়ে চরের সৃস্টি হয়েছে। সামনের দিকে কিছু গাছ থাকলেও পেছনে সব জমি প্রভাবশালীরা দখল করে নিয়েছে। এতে আমরা খুবই হতাশ কারন সরকারি নদীর জমি এভাবে দখল করে নেওয়াতে ভবিষ্যতে নদী রক্ষার চেস্টা করলেও সেটা আর সম্ভব হবে না।
কস্তুরাঘাট এলাকার প্রবীন ব্যবসায়ি আবদুস সালাম বলেন আমি ৪০ বছর ধরে কলার ব্যবসা করছি, প্রায় ১ যুগ আগে আমরা কস্তুরা ঘাট রাস্তার পাশ থেকেই নৌকা দিয়ে মালামাল উঠানামা করেছি, মহেশখালী, খুরুশকুলম সোনাদিয়া সহ অনেক এলাকা থেকে মাল আসতো যেতে হাজার হাজার মানুষ তো ছিলই এক কথায় এসব নদীর জমি। কিন্তু এখন দেখছি সেই কস্তুরাঘাট সংশ্লিষ্ঠ্য সব জমি স্থানিয় কিছু মানুষ দখল করে ফেলেছে শুনেছি তারা নাকি সে সব জমি খতিয়ানও করতে দিয়েছে। আমার মতে টাকা দিলে সব কিছু হয় এটাও হয়তো খতিয়ান ভুক্ত হয়ে যাবে তার সব ব্যাক্তি মালিকানাধীন জমি। এর পর তারাই এ সব জমি প্লট করে বিক্রি করবে। আমার মতে আগে বাকঁখালী নদীও এভাবে দখল করা হয়েছে এখন সবাই বাকঁখালীর মালিক হয়ে গেছে। এভাবে কস্তুরাঘাটের সরকারি জমিও একদিন দখল হয়ে যাবে। কারো কিছু করার থাকবে না। যদি খুব দ্রুত প্রশাসন ব্যবস্থা না নেয় তাহলে ৬ মাসের মধ্যে কস্তুরা ঘাটের সব জমি বেদখল হয়ে যাবে।
আরেক ব্যবসায়ি রফিকুল ইসলাম বলেন আমি ইতি মধ্যে প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তাকে কস্তুরাঘাট রক্ষার কথা বলেছে। এছাড়া পৌরসভার দায়িত্বশীলদেরও কয়েক বার বলেছি কেউ আমাদের কথা কর্ণপাত করেনি। আসলে ভাল কথা কেউ শুনেনা। আমাদের ধারনা এখানে সবাই ম্যানেজ হয়ে আছে না হলে প্রশাসনের নাকের ডগায় এত কাছাকাছি কস্তুরাঘাটের সরকারি জমি কিভাবে কয়েক জন ব্যাক্তি মিলে দখল করতে পারে। দ্রুত যদি প্রশাসন ব্যবস্থা না নেয় তাহলে আগামী ৬ মাসের মধ্যে মহা মুল্যবান এসব সরকারি জমি সরকারের হাতছাড়া হয়ে যাবে। আর আমরা শুনছি এখানেএকটি নান্দনীক ব্রীজ করার পরিকল্পনা আছে, যদি জমিই না থাকে তাহলে ব্রীজ করবে কোথায় ? আমার দ্রুত এসব দখলদারদের উচেছদ করার দাবী জানাচ্ছি।