অনলাইন ডেস্ক : রাজশাহীর তানোরের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের জঙ্গি আস্তানা শিক্ষক বাড়িতে চালানো অভিযান রিবার্থ শেষ হয়েছে। সোমবার রাত ১১টার দিকে তিনটি শক্তিশালী বোমার বিস্ফোরণ ঘটানোর মধ্যে দিয়ে এই অভিযান সমাপ্ত করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি নিসারুল আরিফ।
তিনি সাংবাদিকদের জানান, বাড়ির ভেতরে রাখা সুইসাইডাল ভেস্ট বোমাগুলো উদ্ধার ও নিস্ক্রিয় করার জন্য ডিএমপির বোম্বা ডিসপোজাল ইউনিটকে ডাকা হয়। তারা রাতে আসার পর ১১টার দিকে বাড়ির ভেতরে থাকা তিনটি শক্তিশালী বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এই অভিযানের নাম দেয়া হয় রিবার্থ। তবে বোমা নিস্ক্রিয় করার পরে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে অভিযান সমাপনী ঘোষণা করা হয়।
রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) সুমিত চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, রোববার গভীর রাতে অভিযানের সময় ওই বাড়ি থেকে দুটি সুইসাইডাল ভেস্ট, পাঁচ রাউন্ড গুলিসহ একটি ৭.৬২ মডেলের বিদেশি পিস্তল ও একটি ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়েছে। বাড়ির মধ্যে বিস্ফোরক থাকতে পারে এমন ধারণা থেকে ডিএমপির বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটকে খবর দেয়া হয়। তারা এসে বিস্ফোরক উদ্ধার ও নিস্ক্রিয় করার পর এই অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, রোববার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও রাজশাহী জেলা পুলিশ ইব্রাহিমের বাড়িটি ঘিরে ফেলে। রাত আড়াইটার দিকে এ সময় ওই বাড়ি থেকে সবাইকে বের হয়ে আসতে বলা হয়। পুলিশের আহবানে সাড়া দিয়ে ওই বাড়ি থেকে তিনজন বের হয়ে আসে। পরে সকালে আরও নারী ও শিশুসহ আরও ৯ জনকে বাড়ি থেকে বের করে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়।
এরমধ্যে আগে আটক তিন ছাড়া অন্যরা হলেন ওই বাড়ির মালিক গৌরাঙ্গপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রমজান আলী (৫৪), তার স্ত্রী আয়েশা বিবি (৫০), বড় ছেলে ইব্রাহিম হোসেনের স্ত্রী মর্জিনা বেগম (২৮), তার তিন মেয়ে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী তামান্না খাতুন (৮), তাসকিরা খাতুন (০৪) ছয় মাসের শিশু তানসিরা, ছোট ছেলে ইস্রাফিল আলমের স্ত্রী হারেছা খাতুন (২১), রমজান আলীর মেয়ে হাওয়া খাতুন (২০) ও তার তিন মাসের শিশু। আটককৃত তিনজন হলেন রমজান আলীর ছেলে ইব্রাহিম হোসেন (৩৫) ও ইস্রাফিল আলম (২৬) ও জামাতা রবিউল ইসলাম (২৫)। তারা নব্য জেএমপির সদস্য। তাদের তানোর থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। অভিযান শেষে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আটক তিনজনের মধ্যে ইস্রাফিল আলম মুন্ডুমালা কামিল মাদরাসার ছাত্র ছিলেন। তিনি বর্তমানে গ্রামে হোমিও চিকিৎসা করতেন। ভিন্নমতের কারণে গ্রামের কারো সঙ্গে এই পরিবারটি সেভাবে মিশতেন না। তারা প্রতি বছর সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে তারা একদিন আগেই ঈদ করতেন। বগুড়া গোয়েন্দা পুলিশের তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয় বলেও জানান সুমিত চৌধুরী। তিনি আরও জানান, সোমবার সকাল থেকে ওই বাড়ির এক কিলোমিটার এলাকার মধ্যে জনসাধারণের চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। লাল নিশান দিয়ে আশপাশে অবস্থান নেয় পুলিশ।