ক্রীড়া ডেস্ক : চট্টগ্রাম টেস্টে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত হেরে গেছে বাংলাদেশ। তবে প্রায় ১৫ মাস পর টেস্ট খেলতে নেমে যেভাবে ইংল্যান্ডের চোখে চোখ রেখে লড়াই করেছে তাতে বাংলাদেশের প্রাপ্তি নেহাত কম নয়।অভিষেকেই মেহেদী হাসান মিরাজের পাঁচ উইকেট-কীর্তি, প্রথমবার র্যাঙ্কিংয়ে ছয়ের মধ্যে থাকা দলকে দুবার অলআউট করা, প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে অভিষেক টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে সাব্বির রহমানের ফিফটি, ম্যাচ পঞ্চম দিনে টেনে নিয়ে জয়ের কাছাকাছি চলে যাওয়া- চট্টগ্রাম টেস্টের এতসব প্রাপ্তি বাংলাদেশকে আত্মবিশ্বাসের রসদও জুগিয়েছে।সেই আত্মবিশ্বাসে বলিয়ান হয়েই মিরপুরে শুক্রবার সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হচ্ছে মুশফিকুর রহিমের দল। চট্টগ্রামের পর ঢাকাতেও দুই দলের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আরেকটি উপাখ্যান রচনা হবে?মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচ শুরু সকাল ১০টায়।চট্টগ্রাম টেস্টে শেষ দিনে জয়ের জন্য ২ উইকেট হাতে রেখে ৩৩ রানের প্রয়োজনে ২২ রানের হারটি এখনো পোড়াচ্ছে বাংলাদেশকে। বৃহস্পতিবার মিরপুরে ম্যাচ-পূর্ববতী সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম বলেন, ‘হতাশা আছে, আক্ষেপ আছে। কারণ দিন শেষে আমরা ম্যাচটি জিতিনি। তবে সেই ক্ষুধাটা আছে, আত্মবিশ্বাসও আছে। ইংল্যান্ডের মতো দলের বিপক্ষে টানা চার দিন খুব ভালো খেলেছি।’মুশফিকের মতে, হেরে গেলেও চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তিটা হলো আত্মবিশ্বাস, ‘প্রায় ১৫ মাস পর মাঠে নেমে দল হিসেবে আমরা অবশ্যই একটু পিছিয়ে ছিলাম। অবশ্যই ফেবারিট ছিলাম না। ছেলেরা যেভাবে খেলেছে, অবশ্যই তাদের আত্মবিশ্বাস আছে।’তবে ধারাবাহিকতা ধরে রাখাটাকেই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন মুশফিক। চট্টগ্রামে যেখানে শেষ হয়েছে সেখান থেকেই ঢাকায় শুরু করতে চান বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘টেস্টে ভালো দলের বিপক্ষে ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলতে আমরা অভ্যস্ত নই। আমাদের অবশ্যই চ্যালেঞ্জ ধারাবাহিক ক্রিকেট খেলা। আমাদের মূল চ্যালেঞ্জ, দল হিসেবে চার-পাঁচ দিন ধারাবাহিক ভালো খেলা। চট্টগ্রামে যেভাবে শেষ করেছি, সেখান থেকেই এখানে শুরু করতে চাই।’চট্টগ্রামে খেলা হয়েছিল টার্নিং উইকেটে। প্রথম দিন থেকেই তাই বল টার্ন করেছিল, মিলেছিল বাউন্সও। স্পিনাররা তাই দারুণ বোলিং করেছেন। ম্যাচ শেষে মুশফিক বলেছিলেন, ক্যারিয়ারে প্রথমবার চাওয়া অনুযায়ী উইকেট পেয়েছিলেন। কিন্তু মিরপুরের উইকেট চট্টগ্রামের থেকে আলাদা হবে। তবে উইকেট যেমনই হোক সতীর্থ স্পিনাররা সুবিধা পেলে সেটি কাজে লাগাবে বলেই বিশ্বাস মুশফিকের, ‘এখানে উইকেটের মাটি অন্যরকম। জানি না কেমন আচরণ করবে। তবে যেমনই করুক, সুবিধা পেলে আশা করব, আমাদের স্পিনাররা সেটা কাজে লাগাতে পারবে।’ঢাকা টেস্টেও বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণের নেতৃত্ব দেবেন যথারীতি সাকিব আল হাসান। তার সঙ্গী হিসেবে মেহেদী মিরাজ ও তাইজুল ইসলামও প্রায় নিশ্চিত। আরেকজন বাড়তি স্পিনার খেলাতে চাইলে অভিষেক হয়ে যেতে পারে স্পিন অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের। শফিউল ইসলাম আগেই স্কোয়াড থেকে বাদ পড়েছেন। পেস আক্রমণে কামরুল ইসলাম রাব্বির সঙ্গী হিসেবে অভিষেক হতে পারে শুভাশিস রায়ের। সেক্ষেত্রে মোসাদ্দেকের টেস্ট খেলার অপেক্ষা বাড়বে।ইংল্যান্ড দলে যে দুটি পরিবর্তন আসছে, সেটি ম্যাচের আগের দিনই জানিয়ে দিয়েছেন অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক। স্পিনার গ্যারেথ ব্যাটির জায়গায় অভিষেক হতে যাচ্ছে স্পিন অলরাউন্ডার জাফর আনসারির। আর পেসার স্টুয়ার্ট ব্রডের জায়গায় দলে ঢুকছেন আরেক পেসার স্টিভেন ফিন। তবে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠে পারে একটি নাম- বেন স্টোকস! চট্টগ্রাম টেস্টে ব্যাট ও বল হাতে বাংলাদেশকে যে বেশ ভুগিয়েছেন ইংলিশ অলরাউন্ডার।তবে সবকিছু ছাপিয়ে ঢাকা টেস্টে বড় প্রতিপক্ষ হতে উঠতে পারে বৃষ্টি! বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই মিরপুরে বৃষ্টি হয়েছে। মাঝখানে কিছু সময়ের জন্য থেমেছিল। বিকেলে আবার মুষলধারে বৃষ্টি নামে। বৃষ্টি বাগড়া দিতে পারে শুক্রবার সকালেও। এমনকি বৃষ্টি বাগড়া দিতে পারে ম্যাচের প্রথম চার দিনই। এই টেস্টে দুই দলের লড়াইটা তাই বৃষ্টির সঙ্গেও!
ঢাকাতেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই?
October 27, 2016