ডিসিসি মার্কেটে আগুনে ৬শ’ কোটি টাকা ক্ষতি!

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর গুলশান ১ নম্বরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সব মালামাল পুড়ে অন্তত ৬শ’ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা।
সোমবার গভীর রাতে আগুন লাগার পর ভবনের বড় একটি অংশ ধসে পড়ে। মার্কেটের পূর্ব পাশের ওই অংশটি বিধস্ত হয়ে চ্যাপ্টা হয়ে গেছে। আর মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত মার্কেটের অপর অংশটি ব্যবসায়ীদের চোখের সামনেই পুড়ে ছাই হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা অভিযোগ তুলেছেন, এ আগুন নাশকতার। তাদের উচ্ছেদের জন্যই ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মার্কেটে আগুন লাগানো হয়েছে। তবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক বলেছেন, বৈদ্যুতিক গোলযোগে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা অভিযোগ তুলেছেন ফায়ার সার্ভিসের বিরুদ্ধেও। তারা বলছেন, ইচ্ছে করেই ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভাতে সময় নষ্ট করেছে। এতে তাদের সব মালামাল পুড়ে অন্তত ৬শ’ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
অবশ্য সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস বা সরকারি কোনো সংস্থা। তবে এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ নিশ্চিত করেছে।
সোমবার রাত ২টা থেকে সোয়া ২টার দিকে ডিএনসিসি মার্কেট কম্পাউন্ডের পূর্ব পাশে কাঁচাবাজার ও সুপার মার্কেট অংশে আগুনের সূত্রপাত। এরপর মঙ্গলবার দিনভরই পুড়েছে পাকা মার্কেটের বিশাল অংশটি। সন্ধ্যা ৬টার দিকে প্রায় ১৬ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলেও তা পুরোপুরি নেভাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।
ফায়ার সার্ভিসের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের পরিদর্শক আতিকুর রহমান বলেছেন, ২৩টি ইউনিটের চেষ্টায় সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে তা পুরোপুরি নেভাতে আরও সময় লাগবে।
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্কেটটিতে অগ্নিনির্বাপনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল না। মার্কেটের দোকানগুলোতে থাকা অতি দাহ্য পদার্থের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়েছে।
গুলশান ১ নম্বর গোলচত্বরের পাশেই অন্তত ৭ বিঘা জায়গার ওপর অবস্থিত ডিসিসি দোতলা মার্কেটটি। একই কম্পাউন্ডের ভেতরে পূর্ব অংশে কাঁচাবাজার ও সুপার মার্কেট অবস্থিত। এরপর বিশাল এলাকা জুড়ে পাকা মার্কেট। ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, পুরো মার্কেটে ৬০৫টি দোকান রয়েছে। এর মধ্যে পাকা মার্কেটে দু’তলা মিলে দোকান সংখ্যা ২৩৪টি। এসব দোকানে বিদেশি আসবাবপত্র, গহনা, জুতা-কাপড়সহ বিভিন্ন পণ্য রয়েছে। কাঁচাবাজার ও সুপার মার্কেট মিলিয়ে দোকান রয়েছে আরও ৩৭১টি। এর প্রায় সব দোকানই পুড়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন) মেজর শাকিল নেওয়াজ জানিয়েছেন, তাদের ২২টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে। তবে ভেতরে প্রচুর দাহ্য পদার্থ থাকায় দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি।