ডিএনডি খাল থেকে পুলিশ সোর্সের গলিত লাশ উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানাধীন একটি খাল থেকে নিখোঁজের ৯ দিন পর কাজল ওরফে রনি নামে এক পুলিশ সোর্সের গলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার দুপুরে যাত্রাবাড়ির মাতুয়াইল কাউন্সিল অফিস সংলগ্ন ডিএনডি বাঁধের খাল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে ডুবুরিরা। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তুহিন ও সুমন নামে দুই মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহতের ছোট ভাই শাওন জানান, কাজলের বাবার নাম মৃত খলিল মিয়া। গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ বিক্রমপুরের হাসেরায়। স্ত্রী ময়না ও সাড়ে ৪ বছরের মেয়ে মিমকে নিয়ে মাতুয়াইল স্কুল রোডের সম্রাটের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন তিনি। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন কাজল। বলাকা পরিবহন চালনার পাশাপাশি যাত্রাবাড়ি থানার পুলিশকে তথ্য দিয়েও (সোর্স) সহায়তা করতেন তার ভাই।

তিনি আরও জানান, গত ২৪ ডিসেম্বর রাত থেকে নিখোঁজ ছিলেন কাজল। বিষয়টি জানানো হয়েছিলো থানা পুলিশকে। গত মঙ্গলবার রাতে স্থানীয়দের সহায়তায় ঘটনায় জড়িত স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী তুহিন ও সুমনকে পুলিশে সোপর্দ করেন তারা। এরপর ওই দুজনের স্বীকারোক্তিনুযায়ী দুপুর ১২টার দিকে কাউন্সিল অফিস সংলগ্ন ডিএনডি বাঁধের খাল থেকে তার ভাইয়ের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।

আটকদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে শাওন জানান, ২৪ তারিখ রাতে আটক তুহিনের বাসায় (মাতুয়াইল কাউন্সিল অফিসের অদূরে খান কমিউনিটি সেন্টারে পাশে) যায় কাজল। সেখানে আর্থিক দ্বন্দ্বে তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয় তুহিন, সুমন ও জসিমের। এর জের ধরে গভীর রাতে কাজলকে নিয়ে তারা ডিএনডি খাল পাড়ে যায়। সেখানেও তাদের মধ্যে হাতা-হাতি হয়। বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেন স্থানীয় এক নৈশ প্রহরী। একপর্যায়ে অভিযুক্ত ৩জন ফিরে এলে নৈশ প্রহরী তাদের সঙ্গে যাওয়া কাজলের বিষয়ে জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যায় ওই ৩জন। এতে সন্দেহ হয় ওই প্রহরীর।

এদিকে দুই দিনেও বাসায় না ফেরায় কাজলের সন্ধানে এলাকায় খোঁজ শুরু করেন কাজলের বন্ধু রাজু ও স্বজনরা। একপর্যায়ে ওই নৈশ প্রহরীর মাধ্যমে কিছুটা ক্লু পেয়ে গত মঙ্গলবার রাতে স্থানীয়দের সহায়তায় তুহিন ও সুমনকে তারা ধরতে পারলেও পালিয়ে যায় জসিম। আটকরা জানিয়েছেন, তারাই কাজলকে খুন করে লাশ গুমের উদ্দেশ্যে খালের কচুরীপানার নীচে লাশ ফেলে পালিয়ে গিয়েছিলো সেদিন। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন শাওন ও তাদের মা নুর জাহান বেগম।

যাত্রাবাড়ী থানার ওসি আনিসুর রহমান জানান, কাজলের বন্ধুরা তাকে মারধর করে ডিএনডি বাঁধের পানিতে ফেলে দিয়েছিলো বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। এই ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের পাশাপাশি ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।