নিজস্ব প্রতিবেদক
তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) এর দেওয়া টাকার অবমূল্যায়নের প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল দেখা করেন। এ সময় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা রাজি উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র জানায়, ডলারের সঙ্গে টাকার অবমূল্যায়ন করা হলে রপ্তানি আয় অনেক বেড়ে যাবে। এ যুক্তি দেখিয়ে বিজিএমইএ নেতারা টাকার অবমূল্যায়নের দাবি জানান। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে রপ্তানি বস্ত্রের মূল্যের ওপর নগদ সহায়তা প্রদান করা হয়। কিন্তু পোশাক খাতের তিনটি সংগঠন দাবি করেছে রপ্তানী মূল্যের (এফওবি) উপর নগদ সহায়তা দেওয়া হোক। এতে তাদের নগদ সহায়তা প্রাপ্তি বাড়বে শূণ্য দশমিক ৮০ শতাংশ।
জানা গেছে, রফতানিকারকদের উৎসাহিত করতে রফতানি আয়ের ওপর ৩ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত নগদ সহায়তা দিয়ে থাকে সরকার। অর্থাৎ ১০০ টাকার রফতানি আয় দেশে এলে রফতানিকারকদের সর্বোচ্চ ৩ টাকা থেকে ২০ টাকা নগদ সহায়তা দেয়া হয়। নগদ সহায়তা পেতে রফতানিকারকদের রফতানি আয় দেশে আনাসংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র উপস্থাপন করতে হয় ব্যাংকের কাছে। ব্যাংক তা যাচাই-বাছাই করে সংশ্লিষ্ট রফতানিকারকদের অনুকূলে অর্থ ছাড় দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সুপারিশ করে। ব্যাংকের সুপারিশের ভিত্তিতে রফতানিকারকদের অনুকূলে ছাড় দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
জানা গেছে, কিছু রফতানিকারকের বিরুদ্ধে রফতানি বিল দেশে আনা সংক্রান্ত কাগজ পত্র ব্যাংকের কাছে দাখিল করার ক্ষেত্রে জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়ার অভিযোগ পায় বাংলাদেশ ব্যাংক। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এর সাথে ব্যাংকের কিছু অসাধু কর্মকর্তা জড়িত থাকে। এভাবে ভুয়া কাগজপত্র দাখিলের মাধ্যমে নগদ সহায়তার কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় অসাধু রফতানিকারকেরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুসন্ধানে একাধিক ঘটনার প্রমাণ পেয়েছে।
সূত্র জানায়, অর্থমন্ত্রী তাদের দাবিগুলো শোনেন। তিনি নগদ সহায়তার নীতিমালা পরিবর্তনের বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও নগদ সহায়তার বকেয়া অর্থ পরিশোধের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। চলতি অর্থবছরের বাজেটে রপ্তানি আয়ের ওপর বিভিন্ন খাতে নগদ সহায়তা দেওয়ার জন্য জন্য প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে।