অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই তরুণীকে ধর্ষণের মামলায় আপন জুয়েলার্সের কর্ণধার দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
একই সাথে সাফাত আহমেদের বন্ধু নাঈম আশরাফ ওরফে এইচএম হালিমের জামিনেরর আবেদন না মঞ্জুর করেছেন।
বুধবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক মো. খাদেম উল কায়েস এ আদেশ দেন।
এর আগে গত বছরের ২৮ নভেম্বর একই নারী শিশু ট্রাইবুনাল থেকে জামিন পান সাফাত আহমেদ।
এদিন মামলাটিতে ধর্ষণের শিকার এক তরুণীকে জেরার দিন ধার্য ছিল। এজন্য ভিকটিম আদালতে হাজির হন। আর মামলার ৫ আসামি ট্রাইব্যুনালে হাজির ছিলেন।
নাঈম আশরাফের পক্ষে তার আইনজীবী মাসুদ রানা মোহাম্মদ হাফিজ তাকে জেরা করেন। কিন্তু এদিন জেরা শেষ না হওয়ায় আদালত আগামী ৬ মার্চ অবশিষ্ট জেরার তারিখ ধার্য করেন।
এরপর সাফাতের জামিন বাতিলের শুনানি হয়। সাফাতের পক্ষে আইনজীবী এবিএম খায়রুল ইসলাম লিটনসহ কয়েকজন আইনজীবী সাফাতের জামিন স্থায়ী করার আবেদন করেন।
শুনানিতে তারা বলেন, সাফাতের কিডনিতে পাথর জমেছে। ডান পাশেরটা অপারেশন করা হয়েছে। বাম পাশেরটা অপারেশন করতে হবে।
আসামি জামিনের অপব্যবহার করেননি, নিয়মিত হাজিরা দিচ্ছেন। কোনো শর্ত ভঙ্গ করেননি। আর পলাতক হওয়ার সুযোগ নেই। আর হুমকির বিষয় ভিত্তিহীন। আমরা তার জামিন স্থায়ী করার আবেদন করছি।
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু, বাদীপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহম্মেদসহ কয়েক জামিন বাতিলের বিষয়ে শুনানি করেন।
তারা বলেন, তাকে মেডিকেল গ্রাউন্ডে জামিন দেওয়া হয়। বর্তমানে সে সুস্থ। তাকে দেখে অসুস্থ মনে হচ্ছে না। তার জামিন বাতিল করা হোক। তিনি জামিন পাওয়ার হকদার না। আর কারাবিধি অনুযায়ী তার চিকিৎসা করা হোক।
শুনানি শেষ আদালত আসামি সাফাতের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এ মামলায় সাফাত আহমেদের বন্ধু নাঈম আশরাফ ওরফে এইচএম হালিম ও সাদমান সাকিফ কারাগারে রয়েছেন। এছাড়া অপর দুই আসামি সাফাতের গাড়ি চালক বিল্লাল হোসেন ও দেহরক্ষী রহমত আলীও জামিনে আছেন।
গত বছরের ১৩ জুলাই আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে এ মামলায় চার্জ গঠন করেন আদালত।
গত ২৮ মার্চ বনানীর ‘দ্য রেইন ট্রি’ হোটেলে ধর্ষণের শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই তরুণী। এ ঘটনার ৪০ দিন পর ৬ মে রাজধানীর বনানী থানায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন এক তরুণী।
এজাহারভুক্ত অপর ৪ আসামি হলেন-পিকাসো রেস্তোরাঁর অন্যতম মালিক ও রেগনাম গ্রুপের পরিচালক মোহাম্মদ হোসেন জনির ছেলে সাদমান সাকিফ, সাফাতের বন্ধু নাঈম আশরাফ (সিরাজগঞ্জের আবদুল হালিম), গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী আবুল কালাম আজাদ (রহমত)।
পাঁচ আসামিকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে সাফাত আহমেদ, সাদমান সাকিফ, নাঈম আশরাফ ও বিল্লাল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।