নিজস্বপ্রতিবেদক:সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ করতে বদ্ধপরিকর বলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক যে বক্তব্য রেখেছেন তার সমালোচনা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, ‘প্রতিদিনই আমরা দেখছি, বিনা বিচারে মানুষ হত্যা করে ফেলে রাখা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, ক্রসফায়ারে মারা হচ্ছে। কোনো বিচার নেই। হত্যা-গুম করা হচ্ছে। জঙ্গির নামে গ্রেপ্তার করে ক্রসফায়ার দেওয়া হচ্ছে। অথচ তিনি (আইনমন্ত্রী) বলছেন, বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ করতে বদ্ধপরিকর।’
রবিবার ( ১১ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির ‘সাগর রুনি’ মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এ সব কথা বলেছেন। ‘১৯৭৩ সালে ১১ ডিসেম্বর তানোরের শহীদদের স্মরণে’ এর আয়োজন করে বিএনপি জোটের শরিক দল সাম্যবাদী দল।
শনিবার এক আলোচনা সভায় আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছিলেন, ‘দেশের কোথাও আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বা অত্যাচারের অভিযোগ পাওয়া গেলে সরকার কঠোর হস্তে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ করতে বদ্ধপরিকর। যেখানে এর ব্যত্যয় ঘটবে, সেখানেই সরকার শক্ত হাতে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
আইনমন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মির্জা ফখরুল বলেছেন, ‘স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যেভাবে মতপ্রকাশের অধিকার কেড়ে নিয়ে দেশ পরিচালনা হয়েছে, এখনো সেভাবেই সরকার দেশ পরিচালনা করছে। যারা সেদিন শেখ মুজিব ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিল, তাদের অনেকেই এখন এই সরকারের মন্ত্রীসভায় আছেন।’
সরকার ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে সংবিধানকে কাঁটাছেঁড়া করে তাদের উপযোগী করে ‘অলিখিত শাসন ব্যবস্থা’ ধরে রাখতে চাইছে বলেও এ সময় মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেছেন, ‘জনগণকে বোকা বানাতে এই সরকার সত্য লুকিয়ে যেতে চাইছে। অবৈধ ক্ষমতা লিপ্সা সরকারকে অন্ধ করে রেখেছে। কিন্তু ইতিহাস বলে, এতে শেষ রক্ষা হয়না।’
ক্ষমতায় যেতে নয়, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সংগ্রাম করছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেছেন, ‘এই জোটের আন্দোলন ক্ষমতায় কিংবা সরকারের যেতে নয়, জনগণের অধিকার এবং গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে আন্দোলন করছে। সেজন্য যারা মৌলিক অধিকার, ভোটাধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।’
সংগ্রামের মাধ্যমেই সব দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে সরকারকে বাধ্য করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ফখরুল।
সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাঈদ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, এনএনপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামন ফরহাদ, জাগপার সাধারণ সম্পাদক ড. খন্দকার লুৎফর রহমান প্রমুখ।