ন্যাশনাল ডেস্ক:
নিহত জঙ্গি সাদ্দাম হোসেনের লাশ আনতে যাবেন না পিতা তাজুল আলম ওরফে আলম জোলা। তবে লাশ পাঠালে তা গ্রহণ করে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ঢাকার রায়েরবাজারের বেড়িবাঁধ এলাকায় কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় সাদ্দাম।
শনিবার দুপুরে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চর বিদ্যানন্দ গ্রামে অবস্থিত সাদ্দামের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে মানুষের ভিড়। যারা তাকে ভালো ছেলে হিসেবে জানতেন, তার এই পরিণতি হতবাক করেছে তাদের। বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়াটা কৃতকর্মের ফল বলে মনে করেন এলাকাবাসী।
ওই গ্রামের বাসিন্দা আবদুুস সালাম, শামসুল হক ও নুরুজ্জামান মিয়া জানান, ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত এই এলাকাতে লেখাপড়া করেছে সাদ্দাম। এর পর থেকেই সে বাইরে। তাকে ভালো ছেলে বলে জানতেন সবাই। তবে সে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে প্রেম করে মাদ্রাসাছাত্রী ফারহানা আকতারকে বিয়ে করে। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার গোপালচরণ গ্রামের ফুল মিয়ার কন্যা ফারহানা বিয়ের পর এ গ্রামে মাত্র একবার এসেছিল। সাদ্দাম সুন্দরগঞ্জে শ্বশুরবাড়িতেই থাকত। তারা আরও জানান, শ্বশুরবাড়িতে থাকাকালেই সাদ্দাম জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ে মানুষ হত্যার মতো ঘৃণ্য কাজে লিপ্ত হয়েছে। এ কাজ ধর্মবিরোধী ও নিন্দনীয়। এই কৃতকর্মের ফল পেয়েছে সে।
সাদ্দামের বড় ভাই মিজানুর রহমান বলেন, ‘জঙ্গিবাদ আমরা পছন্দ করি না। সাদ্দাম কীভাবে এমন কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ল, তা বুঝতে পারছি না! তার এই ঘৃণ্য কাজের জন্য আমরা মর্মাহত।’
সাদ্দামের মা সুফিয়া বেগম ওরফে ছোবেদা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘ছেলে কী করেছে জানি না! তার মুখটা দেখতে ইচ্ছা করছে। সরকারের কাছে অনুরোধ- লাশটা যেন পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এখানে কবর দেব। তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করব।’
বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সাদ্দামের জঙ্গি সম্পৃৃক্ততার কথা আমরা জানতাম না। তার এ অপরাধের জন্য এলাকাবাসী সবাই লজ্জিত ও দুঃখিত। এখন থেকে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে সজাগ থাকব, যাতে আর কেউ জঙ্গিবাদে জড়িয়ে না পড়ে।’
কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার মো. মেহেদুল করিম জানিয়েছেন, সাদ্দামের লাশের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।