চাঁপাইনবাবগঞ্জে ‘৪ জঙ্গি আত্মঘাতী’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি : চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের ত্রিমোহনী শিবনগর গ্রামে জঙ্গি আস্তানায় সোয়াটের ‘অপারেশন ঈগল হান্ট’ সমাপ্ত হয়েছে। অভিযানে জঙ্গি আবু কালাম ও তার তিন সহযোগী আত্মঘাতী হয়েছেন। তবে নিহত অন্য তিন জনের পরিচয় জানা যায়নি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে ঘটনাস্থলে উপস্থিত রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি খুরশীদ হোসেন এ অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেন। সোয়াটের উপ-কমিশনার প্রলয় জোয়াদ্দার ৪ জঙ্গি আত্মঘাতী হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়াও অভিযানে নিহত জঙ্গি আবু কালামের স্ত্রী সুমাইয়া ও আর মেয়ে সাজিদাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সুমাইয়া তিন মাসের গর্ভবতী।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, সোয়াটের অপারেশন শেষে এখন বাড়িটিতে কাজ করছে বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল। এরপরই পুলিশের ক্রাইম সিন ইউনিট সদস্যরা তাদের প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করবে।
অভিযানের সংশ্লিষ্ট পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, সর্বশেষ ৪টা ২৫ মিনিটে আবারো আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হয় জঙ্গিদের।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া নয়টায় ২য় দিনের মত শুরু হয় ‘অপারেশন ঈগল হান্ট’। এর আগে ঢাকা থেকে আসা সোয়াট সদস্যরা বুধবার সন্ধ্যায় জঙ্গি আস্তানায় অভিযান শুরু করেন। পরে রাত ৯টার দিকে অভিযান স্থগিত করা হয়।
বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে ঘটনাস্থলে এসে দেখা যায়, পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে পুলিশ। এরপর পুলিশ সদস্যদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়। ৭টা ৩৫ মিনিটে একটি গুলির শব্দ শোনা যায়। এর কিছুক্ষণ পর থেকে আবারো থেমে থেমে কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা যায়।
এরপর সকাল সোয়া ৯টার দিকে কয়েক মিনিট অনবরত গুলির শব্দ শোনা যায়। সেই সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম রাতে স্থগিত হওয়া অভিযান আবারো শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন।
১০টা ১০ মিনিটে ৩টি মাইক্রোবাসে করে আরো সোয়াট সদস্যদের অভিযান স্থলের দিকে যেতে দেখা যায়। অভিযানস্থলে বোমা নিস্ক্রিয়করণের একটি দলকেও যেতে দেখা যায়। এছাড়াও সকাল থেকেই পুলিশের ক্রাইম সিন ইউনিটের সদস্যদের অবস্থান লক্ষ্য করা যায়।
এরপর ১২টা ৯ মিনিটের দিকে হ্যান্ড মাইকে আত্মসমর্পণের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়। তবে এ সময় আস্তানার ভেতর থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এরপর ১২টা ২৫ মিনিটে ২-৩টি বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের আস্তানার দিকে যেতে দেখা গেছে। এরপর দুপুর ২টার দিকে আবারো অন্তত ৩-৪ মিনিট ধরে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়।
এদিকে বিকেল ৪ টা ৫৫ মিনিটের দিকে একজন নারীকে আস্তানার ভেতর থেকে উদ্ধার করে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর কিছুক্ষণ পর ৫.২৫ মিনিটে একজন শিশুকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যায় দুই জন নারী পুলিশ সদস্য।