খালীমাস্টার রুলে স্বাক্ষর নিয়ে বেতন চাইলে মারধর করে বিএডিসি কর্মকর্তা সুমন চাকমা

মাহাবুবুর রহমান: খালী মাস্টাররুলে স্বাক্ষর নেওয়া বেতন চাইলে না দিয়ে উল্টো মারধর করা, বেতন থেকে কমিশন নেওয়া সহ ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতি ও সেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে কক্সবাজার ঝিলংজা বীজ উৎপাদন খামারের দায়িত্বে থাকা সিনিয়র সহকারী পরিচালক সুমন চাকমার বিরুদ্বে। এর আগে নানান অনিয়ম দূর্নীতির অভিযোগে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত হওয়া এই কর্মকর্তা আবারো অনিয়মের স্বর্গরাজ্য পরিনত করছে তার প্রতিস্টানকে। এছাড়া সরকারি সমস্ত কোয়াটার ভাড়া দিয়ে বছরে ৬ লাখ টাকা। তার এস অপকর্মের প্রতিবাদ করলে তাকে সাথে সাথে চাকরীচ্যুতি করছে। সংশ্লিষ্ঠ্যদের দাবী ৮৩ একর জমির উপর গড়ে উঠা এই সরকারি প্রতিস্টান বাচাঁতে দ্রুত তার অপসারন দাবী করেছে সব্র্স্থরের কর্মকর্তা সহ শ্রমিকরা।
কক্সবাজার পৌরসভার পূর্ব বড়–য়া পাড়ার বাসিন্দা ঝিলংজা বীজ উৎপাদন খামারের শ্রমিক মাঝি সুকুমার বড়–য়া বলেন আমি ৪০/৫০ বছর ধরে খামারে কাজ করছি গত বছর বর্তমান সহকারী পরিচালক সরকারি জমি বিক্রি করে কৌটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া পায়তারা করছিল আমি তাতে বাধা দেওয়ায় তিনি এবং তার কিছু সাঙ্গপাঙ্গ আমাকে মারধর করেছিল সেই থেকে আমি খামারে যাইনি। পরে সে সব নিউজ প্রত্রিকাতে আসলে সে সময় পরিচালক সুমন চাকমাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। বর্তমানে আবারো তিনি যোগদান করার পর থেকে পুর খামারকে দূর্নীতির স্বর্গরাজ্য পরিনত করেছে। তার প্রতিবাদ করায় তিনি স্থানিয় সব শ্রমিককে বাদ দিয়ে রাজশাহী নোয়াখালী থেকে শ্রমিক এসে কাজ করাচ্ছেন এতে স্থানিয় শ্রমিকরা অসহায় হয়ে পড়েছে।
খামারের শ্রমিক সুজত বড়–য়া বলেছেন সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী আমাদের দৈনিক মজুরী ৪৫০ টাকা কিন্তু আমাদের বেতন দেয় ৪০০ টাকা তাও আমাদের খালী মাস্টাররুলে স্বাক্ষর নেয় কিন্তু বেতন চাইলে দেয়না। যেমন ৫/৬ মাস ধরে আমাদের বেতন বাকি অথচ আমাদের কাছ থেকে সব স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে আমরা টাকা চাইলে তিনি মারধর করে । উক্ত কর্মকর্তা সুমন চাকমা ৫ দিন আগেও আমাকে বেতন চাইতে গেলে মারধর করেছে। এতে আমি কয়েক দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম।
শ্রমিক কাজল বড়–য়া বলেন আরো আর্শ্চয্য জনক বিষয় হচ্ছে মাসে ৩০ দিন আমরা কাজ করলেও তিনি আমাদের বেতন দেন ২৫ দিনের বাকি টাকা তিনি আত্বসাৎ করেন। অথচ মাস্টাররুলে আমাদের স্বাক্ষর ঠিকই আগে নিয়ে নেয়। আসলে আমাদের এখানে বহু বছর ধরে কাজ করছি তাই কাজের প্রতি মমতা থাকায় কাজ করি না হলে অনেক আগেই চলে যেতাম। আমরা শ্রমিকরা এর প্রতিবাদ করলে কর্মকর্তা সুমন চাকমা নিজেকে শান্তি বাহীনির নেতা এবং মন্ত্রীদের ঘনিস্ট বলে আমাদের শাষিয়ে দেয়। এবং কথায় কথায় মারধর করে।
ছৈয়দ আলম বলেন কেমন কর্মকর্তা হলে ঈদের বেতন বোনাসও দেয় না। তিনি আমাদের গত ২ ঈদের বেতন বোনাসও দেন নি। অথচ আগের সব কর্মকর্তারা আমাদের ঈদের এক সপ্তাহ আগেই ঈদের বেতন বোনাস দিয়ে দিত। তিনি বলেন আমার জানা মতে সরকারি সব কোয়াটার তিনি বাইরের লোকজনদের ভাড়া দিয়ে বছরে ৬ লাখ টাকার মত আত্বসাৎ করে এছাড়া শ্রমিকদের বেতন ভাতা খাত থেকে মাসে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা আত্বসাৎ করে। ২ মাস আগে অফিসের আরেক কর্মকর্তা আমাদের কাছ থেকে ২ দিনের প্রশিক্ষনের নামে খালী খাতায় স্বাক্ষর নিয়েছিল সে বিষয়ে তাদের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় তাকে অন্যত্র বদলী করেছে এখন সুমন চাকমার নিজস্ব লোকদিয়ে অফিসের কাজ করে। কয়েক দিন আগে আমাদের আইডি কার্ড নিয়ে সংগঠনের নামে বিপুল টাকা নাকি হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়া গাড়ী মেরামতের নামেও বিপুল টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
জয়সেন বড়–য়া বলেন আমাদের মতে সুমন চাকমা একজন মাদকসেবী তার কাছে সব সময় মাদকসেবীদের আনাগুনা থাকে তার সাথে ভাল কথাও বল্লেও তিনি মারতে আসে মেজাজ সব সময় গরম থাকে। আগে আমরা ৫৭ জন শ্রমিক ছিলাম এখন ৩০ জনের মত আছে। আমরা তার সব অনিয়ম দূর্নীতির প্রতিবাদ করায় সে বাইরের জেলা থেকে শ্রমিক এনে কাজ করাচ্ছে এতে আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি। আসলে খামারে কাজ না করলে যে ভাত খেতে পারবো না সেটা নয় । একটি সরকারি প্রতিস্টান কিভাবে একজন স্বঘোষিত দূর্নীতিবাজের হাতে চলে যাবে সে জন্য আমরা প্রতিবাদ সভা করছি। আর বিষয় টি আমরা কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি ফোন করায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের লাথি মারতে উদ্যোত হয়েছে। একই সাথে মুজিব চেয়ারম্যান সব সব আওয়ামীলীগ নেতাদের বিরুদ্বে তীব্র গালিগালাজ করেছে যা ভাষায় বুঝা যাবে না।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা শ্রমিক লীগের সাধারন সম্পাদক শফিউল্লাহ আনচারী বলেন এসব শ্রমিকদের কথা শুনে আমি স্বরজমিনে ঝিলংজা বীজ উৎপাদন খামারে গিয়ে কর্মকর্তা সুমন চাকমার সাথে কথা বলে বুঝতে পারলাম তিনি স্বাভাবিক নয়, তিনি একজনবিকারগ্রস্থ মানুষ। জেনেছি তিনি নাকিএর আগেও বরখাস্ত হয়েছিল। কক্সবাজারের স্থানিয় শ্রমিকদের বাদ দেওয়া কারন জানতে চাইলে তিনি আজে বাজে মন্তব্য করেন পরে আমি সরকারের শুনামক্ষুন্য হবে বলে কোন প্রতিবাদ না করেই চলে এসেছি।
যার বিরুদ্বে এত পাহাড়সম অভিযোগ সেই সহকারী পরিচালক সুমন চাকমা বলেন আমি যা করেছি সরকারের ভালর জন্যই করেছি। আর কোন কথা বলতে রাজি হয় নি তিনি।
এদিকে দ্রুত এই দূর্নীতি বাজ কর্মকর্তার অপসারন দাবী করেছে খামারের সাথে সংশ্লিষ্ঠ্য সবাই।