ক্ষমতাধর বটে !

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিঃ কতটা প্রভাবশালী হলে থানার মাত্র একশত গজের মধ্যে পুলিশের এক কর্মকর্তাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত যখম করে মামলা দায়েরের পরও ঘটনাস্থলে এখনো অবস্থান করে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে মামলার আসামী শ্রমিক দলের নেতা সালাউদ্দিনসহ অন্যান্যরা।

ঘটনার এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানার দারোগা এনামুলের দায়ের করা দুটি মামলার আসামী লালপুর রওশান হাউজিং এলাকার এলাহি বক্সের ছেলে সালাউদ্দিন (৪০), পঞ্চবটি এলাকার খোকন (৩৫), শহরের খানপুর ডনচেম্বার এলাকার জুয়েল (৩২)কে আটক করতে পারে নাই পুলিশ। এদের মধ্যে মনিরকে ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে অন্যরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।

এ ঘটনায় ক্ষোভের সৃস্টি হয়েঠে খোদ পুলিশের মাঝেই । (এমন ক্ষোভের অডিও রেকর্ড ও বক্তব্য সংরক্ষনে রয়েছে)ফতুল্লা থানার কয়েকজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, থানার সামন্য অদূরে পুলিশের অনেক কর্মকর্তারাই রুসেন হাউজিংয়ে বাসা নিয়ে বসবাস করে থাকে ।

রুসেন হাউজিংয়ে প্রতিরাতেই মদের আসর বসায় যমুনা তেল চোরদের গডফাদার আফসুর ভাই সালাউদ্দিন। তেল চোর চক্রের হোতারা এমন অপকর্মসহ চাঁদাবাজিসহ সকল অপরাধ চালিয়ে যাওয়ার খবর সকলের জানা থাকলেও কেউ তেমন কিছুবলে না নানা কারণে।

গত ৩০ এপ্রিল রোববার রাতে হঠাৎ  পুলিশের বেতার যত্রে দারোগা এনামুলকে মাদক ব্যবসায়ীরা পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে বলে খবর পেয়ে অনেকেই রুসেন হাউজিংয়ে হাজির হয়ে কথিত যুবলীগ নেতা মনিরকে আটক করে পুলিশ । এ সময় মাতাল অবস্থায় আরো কয়েকজন পালিয়ে গেলেও ঘটনাটি মীমাংশা করতেএগিয়ে আসে যমুনা ডিপোর তেল চোরদের গডফাদার এলাহি বক্ষের ছেলে আফসু।

মাতাল ও মাদক ব্যবসায়ী, তেলচোর পুলিশের উপর হামলাকারী সালাউদ্দিনকে না পেয়ে আফসুকে আটক  করে থানায় আনা হলে শুরু হয় নানা তদ্বির। শেষ পর্যন্ত পরদিন ১ মে বেলা ১১ টায় মোটা অংকের টাকায় আফসুকে থানা থেকে ছেড়ে দেয়া হলেও আটককৃত মনিরকে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করে আদালতে পাঠানো হয়।
ফতুল্লার অনেকের অভিযোগ থেকে জানা যায়, বিএরপির রাজণীতির সাথে জড়িত থাকলেও তেলচোরদের গডফাদার আফসু ও তার ভাই সালাউদ্দিন প্রভাবশালী চক্রের সহায়তায় ফতুল্লার যমুনা ও মেঘনা তেল ডিপোকে কেন্দ্র করে তেল চুরি ছাড়া মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, ভুমিদস্যুতাসহ এমন কোন অপকর্ম নাই যা তাদের দ্বার সংগঠিত হচ্ছে না।

এমন নানা ধরণের অপরাধ করে নগদ অর্থের কারণে প্রতিরাতেই বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের পাশাপাশি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সন্তুস্ট করতে মদের আসর বসিয়ে সারারাত নানা অপকর্মে লিপ্ত থাকে এই চক্রের অনেকে। গত রোববার ৩০ এপ্রিল রাত ২টায় থানা থেকে বেড়িয়ে বাড়ী যাবার পথে মাদক সেবী মনির, সালাউদ্দিন, খোকন ও জুয়েলের হামলার স্বীকার হয়ে গুরুতর আহত হয় দারোগা এনামুল ।
এমন ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলায় মনিরকে গ্রেফতার দেখানো হলেও এখনো প্রকাশ্যে রয়েছে পুলিশ পিটানো অপর আসামীরা ।
ক্ষোভ প্রকাশ করে পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা আরো জানায়, কাকের মাংশ কাক না খেলেও পুলিশ এই মামলাকে নিয়ে যে খেলা চালিয়ে যাচ্ছে তাতে অনেক নগ্নতাই প্রকাশ পাচ্ছে।

শোনা যাচ্ছে মামলা  থেকে বাদ দিতে সালাউদ্দিনের পক্ষে অনেক তদ্বির চলছে। সালাউদ্দিনের পিতার নাম অজ্ঞাত থাকায় তাকে মামলা থেকে বাদ দেয়ার পায়তারা চলছে। তেল চোর আফসুকে আটক করেএকদিন থানায় আটক রাখলেও তার বাবার নামের স্থান অজ্ঞাত থাকে কি করে ?
পুলিশ পেটানো আসামীরা থানার মাত্র কয়েক গজের মধ্যে  শনিবারও অবস্থান করছে কি করে এমন প্রশ্নে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আতাউর রহমান জানান, আমি তো ট্রেনিংয়ে আছি তাই এই মূহুর্তে কিছু বলতে পারছি না । তবে অচিরেই এই মামলার অন্যান্য আসামীরা আইনের আওতায় আসবে।
তদন্ত কর্মকর্তার এমন ধারণায় আদালতের দায়িত্বরত দারোগা শওকত হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ফতুল্লা থানার দারোগা কাজী এনামুলকে মারধর করার ঘটনায় মাদক জাতীয় দ্রব্য বিয়ার বহন (মামলা নং-২) ও সরকারি কাজে বাঁধা সৃষ্টি করায় (মামলা নং-৩) সোমবার পৃথক দুটি মামলা মামলায় একমাত্র আসামী মনির গ্রেফতার রয়েছে । অপর কোন আসামী আদালতে আসে নাই।