যদি তুমি ঘুরে দাঁড়াও, তবেই বাংলাদেশ

অনলাইন ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘ঐক্যফ্রন্টের ভোট বর্জনের’ শঙ্কা কাটিয়ে দিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘কোনোভাবেই নির্বাচন থেকে সরে যাব না।’

শনিবার বিকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, বহুবার বলেছি। আমরা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকবো।

নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে কোনো দ্বিধা আছে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোনো দ্বিধা নেই।

লিখিত বক্তব্যে ড. কামাল হোসেন বলেন, রাত পোহালেই ভোট। দেশে এখন উৎসবের আবহ থাকার কথা। কিন্তু মানুষের মনে এখনো সংশয় সন্দেহ। এ সংশয় দূর করা খুবই জরুরি।

ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি ভোটারদের অনুরোধ করবো আপনারা সকাল সকাল কেন্দ্রে যান। ভোট দিন। আপনারা ভয় পাবেন না। আপনারা ভোটকেন্দ্রে গেলে দুর্বৃত্তরাই ভয় পেয়ে পালিয়ে যাবে। জনগণের শক্তির সাথে তারা পারবে না।

তরুণ ভোটারদের উদ্দেশে ড. কামাল বলেন, তরুণ সমাজ তোমরা যারা প্রথমবার ভোট দেয়ার সুযোগ পেয়েছো তারা সময় মতো ভোট দিতে যাবে। মনে রাখবে যদি তুমি ভয় পাও তবে তুমি শেষ, যদি তুমি ঘুরে দাঁড়াও, তবেই বাংলাদেশ।

প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের উদ্দেশে ড. কামাল বলেন, যারা ভোটগ্রহণের দায়িত্বে আছেন আপনারা সম্মানিত মানুষ। আপনার ওপর যে দায়িত্ব তা সততার সাথে পালন করলে আপনাদের সম্মান বাড়বে। ভোটারের মুখের হাসির ওপরই নির্ভর করছে আপনাদের দায়িত্ব পালনের সফলতা ও তৃপ্তি।

সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার, ভিডিপি, টিডিপি, কোস্টগার্ডসহ আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে জড়িতদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল বলেন, আপনারা অতীতের মত গৌরবময় ভূমিকা পালন করুন। বিশ্বব্যাপী শান্তি রক্ষায় আপনাদের ভূমিকা প্রশংসিত হচ্ছে। সেই প্রশংসার ফলে সারা বিশ্বে আপনাদের সুযোগ বেড়েছে। কোনো অবস্থাতেই যাতে তা ব্যাহত না হয়, সে ব্যাপারে আপনারা সতর্ক থাকবেন।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন, এর কর্মকর্তারা-কর্মচারী ও রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার আপনারা জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করুন। যদি কারও অধিকার হরণ করেন তাহলে মনে রাখবেন, অন্য কেউ আপনার মা-বাবা, স্ত্রী, সন্তানের অধিকার হরণ করছে। এটা করলে জনগণ ইতিহাস, আইন আপনাদের ক্ষমা করবে না।

তিনি বলেন, সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বলব আপনারা কোনো দলের নয়, আপনারা জনগণের সেবক। জনগণ দেশের মালিক। দেশের মালিকদের তাদের ভোটের আনন্দ থেকে বঞ্চিত করবেন না। কোনো অন্যায় নির্দেশ মানবেন না।

প্রবাসীদের উদ্দেশে ড. কামাল হোসেন বলেন, প্রবাসী ভাই-বোনেরা এবং নির্বাচনী দায়িত্বপালনের জন্য যারা ভোট দিতে পারবেন না, আপনারা আপনাদের স্বজনদের ভোট দিতে যেতে বলুন। তারা যদি ভোট দিতে পারেন তাহলে সেই আনন্দের অংশীদার আপনারাও হবেন।

লিখিত বক্তব্যে সর্বশেষ তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আসুন আমরা ভোট দেই। আপনার ভোট খুবই মূল্যবান। কেননা আপনি দেশের মালিক।

নির্বাচন বর্জন প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, উনি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) তো আমাদের নেত্রী না। উনি কি বললেন না বলেন সেটা আমাদের বিষয় না।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, মানুষ ভয় পেলে বেপরোয়া হয়ে উঠে। সরকার ভয় পেয়েছে। যে কারণে তারা বিরোধীদলের ওপর হামলা নির্যাতন করছে, গুণ্ডামি করছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু, কেন্দ্রীয় নেতা জগলুল হায়দার আফ্রিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।