কুমিল্লায় জোড়া খুনের আসামি গ্রেফতার

শাহআলম শফি, প্রতিনিধি কুমিল্লায়
জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের অভিযানে দাউদকান্দির সাঈদ ও মোহাম্মদ আলীর খুনের মামলার অন্যতম দুই আসামি শুক্কুর আলী ও মাসুদকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গত রবিবার চট্টগ্রাম ও বান্দরবন জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ডিবি পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে।

সোমবার বিকালে তারা হত্যার দায় স্বীকার করে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফরহাদ রায়হান ভূঁইয়ার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্ধী দিয়েছে। গত ১ এপ্রিল বিকালে জেলার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর উত্তর বাজার এলাকায় এ জোড়াখুনের ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, জেলার তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান মনির হোসেন সরকার গত বছরের ৮ নভেম্বর দুর্বৃত্তের হাতে খুন হন।

এ মামলার এজাহারনামীয় আসামি ছিলেন দাউদকান্দি উপজেলার দক্ষিণ পেন্নাই গ্রামের আবদুস সামাদের ছেলে সাঈদ ও একই গ্রামের আবদুস সোবহানের ছেলে মোহাম্মদ আলী।

মামলার পর থেকে তাদের দুইজনের সঙ্গে চেয়ারম্যানের লোকজনসহ পরিবারের বিরোধ চলে আসছিল। গত ১ এপ্রিল বিকালে সাঈদ ও মোহাম্মদ আলী প্রাইভেটকারযোগে দাউদকান্দির গৌরীপুর উত্তর বাজার এলাকা দিয়ে তিতাস যাচ্ছিলেন।

এসময় নিহত মনির চেয়ারম্যানের সমর্থক দাউদকান্দির লক্ষ্মীপুর গ্রামের মৃত আবছার মিয়ার ছেলে শুক্কুর আলী ও একই উপজেলার মাওড়াবাড়ি গ্রামের মৃত অহেদ মিয়ার ছেলে মাসুদসহ সঙ্গীয় লোকজন রাস্তা ঘেরাও করে তাদেরকে প্রাইভেটকার থেকে নামিয়ে এলোপাতারি পিটিয়ে গুরুতর জখম করে।

স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর সাঈদ  ৭ এপ্রিল ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোহাম্মদ আলী মারা যান।

এ ঘটনায় নিহত সাঈদের মা আমেনা বেগম বাদী হয়ে ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে দাউদকান্দি মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পরে মামলাটি জেলা ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়। গত রবিবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শাহ কামাল আকন্দের নেতৃত্বে এসআই শহিদুল ইসলামসহ ডিবি’র একটি দল চট্টগ্রামের পাহাড়তলী এলাকা থেকে মাসুদকে এবং বান্দরবন সদর এলাকা থেকে শুক্কুর আলীকে গ্রেফতার করে রাতে কুমিল্লা ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি’র এসআই শাহ কামাল আকন্দ পিপিএম জানান, গ্রেফতারকৃতরা সাঈদ ও মোহাম্মদ আলী হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার বিষয়ে সোমবার বিকালে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফরহাদ রায়হান ভূঁইয়ার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধী দিয়েছে।

প্রকাশ্য দিবালোকে চাঞ্চল্যকর এ জোড়াখুনের ঘটনার সময় স্থানীয়ভাবে মোবাইল ফোনে ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে গ্রেফতারকৃত ২ আসামিসহ অন্যদের শনাক্ত করা হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।