মাহাবুবুর রহমান,কক্সবাজার
বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ভোগ করা ১৭ বাংলাদেশিকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করেছে মিয়ানমার। বুধবার মিয়ানমারের অভ্যন্তরে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাদের বিজিবির কাছে হস্তান্তর করেন মিয়ানমারের ইমেগ্রশন বিভাগের প্রতিনিধিদল।
ফেরত আসা বাংলাদেশিরা সাড়ে দেড় বছর থেকে ৬ মাস মিয়ানমার কারাগারে মানবেতর জীবনযাপন করেছেন বলে জানান তারা। তারা সবাই সমুদ্র পথে মালয়েশিয়া যাবার সময় আটক হয়েছিল। তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের জন্য টেকনাফ মডেল থানায় সোপর্দ করে বিজিবি।
বিজিবি ভাষ্য মতে, মংডুতে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল আছাদুদ-জামান চৌধুরীর নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল ও মিয়ানমার মংডুর অভিবাসন বিভাগের কর্মকর্তা হটেন লিনেন’র নেতৃত্বে ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দলের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফেরত নাগরিকদের নিয়ে সদর বিওপি চৌকির সংলগ্ন বাংলাদেশ-মিয়ানমার টেকনাফ নতুন ট্রানজিট ঘাট জেটি ঘাটে পৌঁছায়।
বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন, টেকনাফ-২ বিজিবির মেজর মামুনুর রশিদ, স্টাফ অফিসার মোহাম্মদ জোবাইর আহমদ, জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার নুরুল আবছার, জেলা বিশেষ শাখার (ডিএসবি)’র প্রতিনিধি পরিদর্শক এসএম মিজানুর রহমান, পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি টেকনাফ মডেল থানার এসআই বোরহান উদ্দিন ভূইয়া, বিজিবির সুবেদার মোহাম্মদ ইব্রাহীম হোসেন, স্টাফ অফিসার নায়েক সহকারী সরোয়ার আলম, মেডিকেল অফিসার শরীফুল ইসলাম, দোভাসী কবির হোসেন প্রমুখ।
পরে দুপুর ১টায় ওই জেটিতে ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল আছাদুদ-জামান চৌধুরী সংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
তিনি বলেন, এসব ব্যক্তিরা সাগর থেকে মিয়ানমার হাতে আটক হয়েছিল।
বিভিন্ন মেয়াদে সাজাভোগ শেষে এদের ফেরত পাঠানো হয়। পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার পর বৈঠকের মাধ্যমে এদের ফেরত আনা হয়।
ফেরত আনা ব্যক্তিদের থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশ তাদের স্বজনদের কাছে পৌঁছে দেবে।
তিনি আরও বলেন, প্রায় ৮ মাসের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের ফেরত আনা হয়েছে। সেদেশের কারাগারা প্রায় ৫০ জন মতো বাংলাদেশেী রয়েছে বলে ফেরত আসাদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি।
ফেরত আসা আলম বলেন, চলতি মাসে জুন মাসে টেকনাফের শামলাপুর এলাকায় দিয়ে ট্রলার যোগে মালয়েশিয়া যাবার জন্য সমুদ্র পাড়ি।
এসময় ট্রলার নষ্ট হয়ে সাগরে তিন দিন ভাসমানের পর মিয়ানমার সীমানায় পৌছলে সেদেশের আইনশৃঙ্খলাবাহানীর হাতে আটক হয়।
পরে আমাদের ছয় মাসের সাজা প্রদান করে। সেসেময় তার ট্রলারে প্রায় শতাধিক মালয়েশিয়াগামী ছিল।
কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের চেষ্টায় স্বদেশে ফেরত আসতে পেরেছি। এজন্য সরকার প্রধানকে ধন্যবাদ জানায়। তার বাড়ি টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের লাফারগুনা মৃত কালু মিয়ার ছেলে।