কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ: প্রকল্পের মেয়াদ শেষ তাই রাতারাতি ১২ কৌটি ৮০ টাকার বিল

মাহাবুবুর রহমান,কক্সবাজার
প্রকল্পের মেয়াদ শেষ তাই রাতারাতি ১২ কৌটি ৮০ লাখ টাকার বিল তৈরি করে তা অনুমদনের জন্য হিসাব রক্ষন অফিসে পাঠিয়েছে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ কতৃপক্ষ। অথচ এত বিশাল অংকের টাকার বিপরীতে যে মালামাল বুঝে পাওয়ার কথা সেটা বুঝে না নিয়েই বিল তৈরি করেছে তারা। তাই বিলে কাগজে কলমে অসংগতি এবং বাজেট অনুমদন আগে না হওয়ায় বিল করেনি হিসার রক্ষন অফিস। ধারনা করা হচ্ছে ঢাকা ভিত্তিক একটি ঠিকাদারী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বষিভুত হয়ে কতৃপক্ষ রাতের আধারে ভুয়া বিল ভাউচার দিয়ে বিল জাম করেছে। তবে মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ বলছে মালামাল অধিকাংশ বুঝে পেয়েছি মূলত প্রকল্পের মেয়াদ শেষ বলেই টাকা ধরে রাখার জন্য বিল জমা দেওয়া হয়েছিল।
একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে নতুন নির্মিত কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজে বিভিন্ন সরাঞ্জাম সরবরাহ করার জন্য  ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দিকে  বরাদ্ব প্রেরন করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রনালয়ের আওতায় স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা, পুষ্টি সেক্টর উন্নয়ন কর্মসূচীর আওতায় বিপুল টাকা ছাড় ও করে। সে অনুযায়ী ঢাকা ও কক্সবাজার কেন্দ্রীক অনেক ঠিকাদার মালামাল সরবরাহ করে। এর মধ্যে ফার্নিচার, আসভাবপত্র, কম্পিউটার, লাইব্রেরীর বই, যন্ত্রপাতী ও কেমিক্যাল, অফিস স্টেশনারী, খেলার সামগ্রী সহ অনেক প্রয়োজনীয় সরাঞ্জাম সে অনুযায়ী কিছু মালামাল সরবরাহও করে ঠিকাদার রা। একই ধারাবাহিকতায় বিলও পেয়েছে তারা। কিন্তু হঠাৎ করে একই প্রকল্পের ১/১১/ ২০১৬ তারিখে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন এবং লাইন ডাইরেক্টর, প্রি সার্ভিস এডুকেশন অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আবদুর রশিদ স্বাক্ষরিত বেশ কয়েকটি বরাদ্ব পত্রে প্রায় ১৩ কৌটি টাকা ছাড় করে। কিন্তু বাধ সাধে অন্য জায়গায় যেহেতু এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে তাই তাই এই বিপুল টাকা হাতে আসতে না আসতেই কোন আইনী প্রকৃয়া শেষ না করেই দরপত্র আহবান করা ছাড়াই ২৯ ডিসেম্বর ৮টি বিলে ১২ কৌটি ৮০ লাখ টাকার বিল হিসাব রক্ষন অফিসে প্রেরন করে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ মোঃ রেজাউল করিম। ৮ টি বিলের মধ্যে যথাক্রমে ৩ কৌটি ৯০ লাখ, ১ কৌটি ৮০ লাখ, ৫০ লাখ, ১ কৌটি ৯০ লাখ, ১ কৌটি ৭০ লাখ, ৫০ লাখ, ২ কৌটি, ৫০ লাখ মোট ১২ কৌটি ৮০ লাখ টাকার বিল রয়েছে।
তবে খোজ নিয়ে নিশ্চিত হওযা গেছে এত বিপুল টাকার মধ্যে বেশির ভাগই মালামাল কলেজে আসেনি। তার পরও রাতারাতি কিভাবে বিল প্রেরণ করা হলো সেটাই এখন আলোচনার বিষয়।
এ ব্যাপারে খোজ নিয়ে জানা গেছে তারা বরাদ্বে কপি পেয়েছে ২৯ ডিসেম্বর তাও বিল দেওয়া হয়েছে রাত ১০ টার সময়। সেই প্রকল্পের মেয়াদ ডিসেম্বরেই শেষ অর্থাৎ ৩০ ডিসেম্বর শুক্র বার ৩১ ডিসেম্বর শনি বার তাই সেই বিল বা বরাদ্ব কপি আমরা অনুমদন করতে পারে না। তাছাড়া সেখানে কাগজে কলমেও অনেক ত্রুটি আছে। তাই বিল অনুমদন করেনি হিসাব রক্ষন অফিস
এ ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা সুব্রত মুৎসুদ্দী বলেন আমার টেবিলে এ ধরনের কোন বিল আসে নি। তবে আমি শুনেছি বিষয় টি। আমরা কাগজ পত্র দেখবো এর বাইরে আমরা কিছু বুঝার কোন সুযোগ নেই। আর প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলে কিভাবে টাকা পাবে।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ মোঃ রেজাউল করিম বলেন এখানে লোকচুরির কিছু নেই। বরাদ্ব এসেছে এটা ঠিত যেহেতু প্রকল্পের মেয়াদ শেষ তাই আমরা টাকাটা ধরে রাখার জন্য চাহিদা পত্র ও বিল জমা দিয়েছি। আর বেশির ভাগ মালামাল আমাদের হাসপাতালে উঠে গেছে সময়ের অভাবে সেটা বুঝে নেওয়া হয় নি। আর এ টাকা চলে গেলে কক্সবাজারের মানুষের বা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের ক্ষতি হতো। তাই চেস্টা করে দেখেছি। আমি কক্সবাজারের সন্তান তাই এই প্রতিস্টানের প্রতি আমার দরদ ভালবাসা অনেক বেশি। এখানে ভিন্ন কিছু খুজা ঠিক হবে না। আর চেক হলে আমি হিসাব রক্ষন কর্মকর্তাকে অনুরোধ করেছি তারাই চেক ধরে রাখুক আমি পরিপূর্ন মালামাল বুঝে নিয়ে সব কাগজ পত্র দিলে তার পর তারা চেক দেবে। মোট কথা টাকাটা কক্সবাজারের উন্নয়নে লাগানোই ছিল আমার মুখ্য উদ্যোশ্য অন্য কিছু নয়।
তবে এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েক জন সংশ্লিষ্ট্যদের দাবী সরকারি টাকা নিয়মের বাইরে মালামাল বুঝে না নিয়ে তড়িঘড়ি করে রাতারাতি বিল করে নেওয়া এটা খারাপ ইঙ্গিত বহন করে। এখানে একটি ঠিকাদার সিন্ডিকেট ও জড়িত ছিল। তাছাড়া সরকার প্রকল্প শেষ হলে নিশ্চই প্রকল্পের মেয়াদ বাড়াবে তখন বিল করবো অসুবিধা কি , সরকার নিশ্চই মেডিকেল কলেজে সরাঞ্জাম না দিয়ে ফেলে রাখবে না হয়তো কয়েক মাস দেরী হবে। তাই বলে যে কোন অনিয়মের আশ্রয় নেওয়া ঠিক নয়।