কক্সবাজার পৌর মার্কেটের সামনে অবৈধ সিএনজি ষ্টেশন : বাড়ছে যানজট

কক্সবাজার রিপোর্ট : কক্সবাজার শহরের বড় বাজার এলাকার পৌরসভা সুপার মার্কেটের পাশে অবৈধ যত্রতত্র সিএনজি পার্কিংএর কারনে দিন রাত যনজট লেগে থাকে। এতে চরম অসুবিধার সম্মুখিন হচ্ছে সাধারণ মানুষ। দৈনিক ১০০ বেশি সিএনজি এখানে বিভিন্ন সময় পার্কিং করার কারনে অন্যান্য গাড়ী চলাচলতো দূরের কথা মানুষ পায়ে হেটে রাস্তায় চলতে পারেনা। মাঝে মধ্যে অভিযান চালিয়ে এসব অবৈধ সিএনজি রাস্তা থেকে উঠিয়ে দিলেও আবারো পার্কিং করে তারা। আর স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী এসব সিএনজি থেকে দৈনিক ২০০০ টাকা আদায় করে বলে জানান সিএনজি চালকরা। এতে মারাত্বক হুমকীর মুখে পড়েছে স্থানীয় ব্যবসায়িরা।

তাদের দাবী দ্রুত এসব অবৈধ সিএনজি পার্কিং বন্ধ করে রাস্তা সচল রাখা সহ ব্যবসার পরিবেশ নিশ্চিত করা না হলে আন্দোলনে যাওয়ার কথা জানান ব্যবসায়িরা। ফুলবাগ সড়কের বাসিন্দা নুর জাহান ৪ মাসের গর্ভবতি যাচ্ছিলেন সদর হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে কিন্তু রিক্সা নিয়ে বড় বাজারের পৌরসভা সুপার মার্কেটের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দীর্ঘক্ষন অপেক্ষা করে যেতে না পেরে শেষে পায়ে হেটে মসজিদ সড়ক দিয়ে প্রধান সড়কে এসে আরেক টি রিক্সা নিয়েছে। তিনি বলেণ,দিন রাত ২৪ ঘন্টা আরো কোথাও যানজট না পেলে এখানে পাওয়া যাবে। কারন এখানে খুরুশকুল,চৌফলদন্ডি,ঈদগাও যাওয়ার জন্য লাইন করে দাড়িয়ে থাকে অসংখ্য সিএনজি।

এমনিতেই রাস্তাতে জায়গা নেই তার উপর সিএনজি দাড়িয়ে থাকে,আবার কিছু সময় সিএনজি একটা একদিক থেকে গেলে আরেকটি অন্যদিক থেকে আসে এসে রাস্তা সম্পূর্ন বন্ধ হয়ে পড়ে। কয়েক বছর ধরে এই সমস্যায় মধ্যে আছি। স্কুল ছাত্রী তাসনুভা নওরিন বলেন,আগে বাসার সামনে থেকে রিক্সা নিতাম এখন বড় বাজার এবং পৌর মার্কেটের সামনে যানজটের ভয়ে সে গুলো পার হলে রিক্সা নি। সেখানে সব সময় বেশ কয়েক টি সিএনজি থাকবেই এবং সেই সব সিএনজির চালকরা আবার মাঝে মধ্যে ইভটিজিংও করে। তার দাবী শুধু সিএনজি নয় অনেক দোকনের সামনে জিনিস পত্র রেখেও রাস্তা বন্ধ করে রেখেছে।

আসলেকি এসব অনিয়ম বন্ধ করার কোন কতৃপক্ষ নেই ? টেকপাড়া এলাকার মোহাম্মদ হোসেন বলেন,আমাদের চলাচলের জন্য অন্যতম সড়ক এটি কিন্তু এই রাস্তা দিয়ে স্বাভাবিক ভাবে চলাচলের কোন সুযোগ নেই সব সময় গাড়ী রাখার কারনে সেটি গাড়ীর ষ্টেশনে পরিনত হয়েছে। তবে আমার মতে যেহেতু রাস্তা আছে গাড়ী চলবে যদি সেখানে ৩ টির বেশি সিএনজি দাড়াতে না দেওয়া হয় তাহলে সাধারণ মানুষের জন্য অনেক উপকার হবে। আলাপ কালে স্থানীয় ব্যবসায়ি আবদুস সাত্তার বলেন,আমরা কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে দোকান করছি।

 

নিয়মিত পৌরসভাকে ভাড়াও দিচ্ছে এছাড়া সব ধরনের সরকারি টেক্স ভ্যাট কোনটি বাদ নেই। কিন্তু আমরা ঠিকমত ব্যবসা করতে পারছি না। দোকানের সামনে সব সময় সিএনজি দাড়িয়ে থাকে ফলে আমাদের দোকানে কোন গাড়ী আসতে পারেনা। এসমকি মালামাল বিক্রি করে সেই গাড়ী দোকানের সামনে আনলে সিএজি চালকরা উল্টো আমাদের ঝামেলা করতে চাই। গতকাল আমাদের পাশের দোকান মোস্তফা হার্ডওয়্যারের মালিক রাশেদুল মোস্তফা তার দোকানের বিক্রিত মালামাল নিতে আরেকটি গাড়ী ঢুকার জন্য একটি সিএনজিকে সরে যেতে বল্লে টাকা আদায়কারীরা পেশকার পাড়ার কাদের সহ এসে উল্টো ঝামেলা তৈরি করতে চেয়েছে।

এবং বলেছে তাদের ইচ্ছামতই সব চলবে। স্থানীয় ব্যবসায়ি রতন ও সঞ্জয় বলেন,দোকানে কোন গ্রাহক আসতে পারছে না সিএনজির কারনে,আমাদের কোন মটর সাইকেল রাখার জায়গা রাখেনা। মনে হচ্ছে তাদের বাস টার্মিনালে আমরা ব্যবসা করতে এসেছি। আগে কয়েক বার অভিযোগ দিলে পরে লোকদেখানো অভিযান হলেও পরে আবার একই চিত্র হয়ে যায়। নতুন পৌর মেয়রের কাছে আমাদের দাবী থাকতে দোকানের সামনে থেকে যেন সব ধরনের অবৈধ পার্কিং তুলে দেওয়া হয়।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে প্রতি দিন ১০০ টির বেশি সিএনজি এই রুটে চলাচল করে আর সে সব সিএনজি থেকে রাস্তার উপর পার্কিং করানোর জন্য প্রতি সিএনজি থেকে ২০ টাকা করে আদায় করে একটি প্রভাবশালী মহল। সরজমিনে টাকা আদায়কারী সিহাবের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,টাকা তুলা আমার কাজ,আর আমাকে পেশকার পাড়ার কাদের টাকা তুলতে দিয়েছে। তবে কাদেরটাকা আদায়ের কথা অস্বীকার করে। আর এখানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ অনেক প্রভাবশালীরা জড়িত।
এদিকে অনেক মুসল্লিদের দাবী বড় বাজারের ডাব বিক্রির দোকান এবং পৌর সুপার মার্কেটের সামনে সব সময় সিএনজি পার্কিং এবং যাত্রি উঠানামার কারনে ঠিক সময়ে নামাজ পড়তে যেতে পারি না। দ্রুত এসব অবৈধ পার্কিং তুলে দেওয়ার দাবীজানান তারা। অন্যদিকে দ্রুত এরএকটি বিহিত ব্যবস্থা না হলে দোকান বন্ধ করে রাস্তা অবরোধ সহ কঠোর আন্দোলনে যাবেন বলে হুশিয়ারী দিয়েছেন ব্যবসায়িরা।