কক্সবাজারের ৪ টি আসনে ভোটার ১৩ লাখ ৬৫ হাজার, প্রতিদ্বন্ধিতা হবে ৯ জনের মধ্যে

মাহাবুবুর রহমান,কক্সবাজার : কক্সবাজারের ৪ টি আসনে প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীদের অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ, হামলা-মামলা, বিক্ষিপ্ত ঘটনার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা।
শুক্রবার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে। এখন অপেক্ষা ভোটের। প্রার্থী ও ভোটারদের অপেক্ষা করতে হবে আজ শনি বার বহুকাঙ্খিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে রবি বার সকাল ৮ টা থেকে ।
জেলার চারটি আসনে শেষ দিনে জম্পেশ প্রচারণা চালিয়েছেন প্রার্থীরা। জেলার বিভিন্ন স্থানে টানটান উত্তেজনার পারদ ছড়িয়ে ভোট টানতে ব্যস্ত দেখা গেছে প্রার্থীদের।
প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, বিএনপির পাশাপাশি জামায়াত এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের প্রচারণা ও বেশ উপভোগ্য ছিল।
প্রশাসনের কড়াকড়ির কারনে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শেষ দিনে প্রার্থীরা পথসভা এবং শেষ নির্বাচনী অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেছে বলে দাবি প্রশাসনের।
তবে, কক্সবাজার শহরের কালুর দোকান, খুরুশকুল,পিএমখালী বাংলাবাজার,কালুরদোকান,কলাতলী মোড় এলাকাসহ কয়েকটি এলাকায় শেষ নির্বাচনী পথসভায় বিএনপির নেতাকর্মীদের পথে পুলিশের বাধা দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। তবু বড় ধরনের ঘটনা ছাড়াই শেষ হয়েছে একাদশ জাতীয় সংসদের শেষ প্রচারণা।
কক্সবাজার জেলার ৪টি পৌরসভা ও ৭১ ইউনিয়নের ৫১২ ভোটকেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ২০৪ জন। সেখানে ৭ লাখ ৭ হাজার ৮৩১ জন পুরুষ এবং ৬ লাখ ৫৭ হাজার ৩৭৩ জন মহিলা। ভোট কক্ষের সংখ্যা ২ হাজার ৭৩৮টি।
জেলার চারটি সংসদীয় আসনেই আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, ববি হাজ্জাজের দল এনডিএম ও চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীসহ মোট প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ২৯ জন কাগজে কলমে থাকলেও মুল প্রতিদ্বন্ধিতা হবে আওয়ামীলীগ বিএনপি প্রার্থীর মধ্যে এর মধ্যে

কক্সবাজার-২ মহেশখালী কুতুবদিয়া আসনে জামায়াত নেতা হামিদুর রহমান আযাদকে ঐক্যফ্রন্ট থেকে মনোনয়ন নিলেও উচ্চ আদালত থেকে রায় নিয়ে ধানের শীষ প্রতিকে নির্বাচন করছেন আগের ২ বারের সংসদ আলমগীর ফরিদ তাই তাকেও হিসাবে রাখতে হচ্ছে সে জন্য ৯ জনের মধ্যেই হবে মূল প্রতিদ্বন্ধিতা।
কক্সবাজার-১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী সালাহ উদ্দীন আহমদের স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমদ এবং চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, জাফর আলম। শুরু থেকে নানা কারনে উত্তপ্ত পরিস্থিতির কারণে এই আসনটি জেলায়

বেশ আলোচনায় রয়েছে। দুই প্রার্থী মাঠে নামলেও মাঝপথে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বাধার মুখে বিএনপি প্রার্থী হাসিনা আহমদ শেষ পর্যন্ত প্রচারণা চালাতে পারেননি বলে অভিযোগ তাঁর। তবে এরমধ্যে দু’পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকটি পাল্টাপাল্টি হামলা ঘটনার ঘটে গেছে।

তবুও সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ হলে এই আসনে তুমুল লড়াই হওয়ার আভাস রয়েছে। কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন তিন প্রার্থী। আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, ২০ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী

কারাবন্দী জামায়াত নেতা এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ ও ধানের শীষের প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য আলমগীর ফরিদ। এই আসনে শুরুতে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন- আশেক উল্লাহ রফিক, হামিদুর রহমান আযাদ ও ড. আনসারুল করিম। প্রথমে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে কাগজপত্র জমা দিতে না পারায় আলমগীর ফরিদের মনোনয়ন বাতিল হয়েছিল।

পরে তিনি কয়েক দফা আইনী লড়াই করে ধানের শীষের প্রতীকসহ প্রার্থীতা ফিরে পান। কিন্তু তিনি মাঠে নামার দু’দিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহবানে সরে দাঁড়িয়ে আশেক উল্লাহর রফিকের জন্য মাঠে নেমেছেন ড. আনসারুল করিম। শেষ মুহূর্তে তিন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তিন প্রার্থীই শক্তিমান হওয়া এই আসনে ভোটে ত্রিমুখী লড়াই হওয়ার আভাস রয়েছে।
কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাইমুম সরওয়ার কমল ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজল। পর্যটন নগরীর এই আসনে মাত্র এই দু’প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকায় প্রচারণার যুদ্ধ বেশ জমজমাট ছিলো।

তবে লুৎফুর রহমান কাজলের প্রচারণায় শুরু থেকে বাধা দেয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। এই কারণে দু’পক্ষের মধ্যে কয়েক টি সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।
কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছে আওয়ামী লীগ ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী।বর্তমান সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির স্ত্রী শাহীন আকতার ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী মূল প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী।