নিজস্ব প্রতিবেদক:
সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদের রাডার ক্রয় সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় অবশিষ্ট সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্টের রায় প্রকাশিত হয়েছে। রায়ে আদালত বলেছেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদের দুর্নীতি মামলা পরিচালনায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) চরম গাফিলতির পরিচয় দিয়েছেন। তার এই গাফিলতি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।
বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের ডিভিশন বেঞ্চের দেয়া রায়ে এই পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে। গত রোববার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েব সাইটে এ রায় প্রকাশিত হয়।
ওই রায়ে বলা হয়েছে, এ মামলায় অভিযুক্তরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজেদের লাভের জন্য রাষ্ট্রের ৬৪ কোটি টাকা ক্ষতি করেছেন। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে রাষ্ট্রের স্বার্থে এ মামলার বাদী পক্ষকে পুনরায় সাক্ষ্য দেয়ার সুযোগ দেয়া হচ্ছে। কারণ এই আর্থিক দুর্নীতির শিকার দেশের প্রত্যেক নাগরিক।
রায়ে আদালত বলেন, এ মামলায় পুনরায় সাক্ষ্য নেয়া হলে অভিযুক্তপক্ষ কোনভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না। কারণ তারা সাক্ষীকে জেরা করার সুযোগ পাবেন।
১৯৯২ সালের ৪ মে তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো এরশাদের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করে। ফ্রান্সের থমসন সিএসএফ কোম্পানির অত্যাধুনিক রাডার ক্রয় না করে বেশি দামে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্টিন কোম্পানির রাডার কিনে রাষ্ট্রের ৬৪ কোটি ৪ লাখ ৪২ হাজার ৯১৮ টাকা আর্থিক ক্ষতি সাধনের অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে।
১৯৯৪ সালের ২৭ অক্টোবর এরশাদসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ১৯৯৫ সালের ১২ আগস্ট এরশাদসহ চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হলেও ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম উচ্চ আদালতের আদেশে স্থগিত ছিল।
১৮ বছর পর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হলে ২০১০ সালের ১৯ আগস্ট বাদীর সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে মামলার বিচার কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়। এরপর ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে যুক্তিতর্ক শুনানির জন্য দিন ধার্য রাখে আদালত। কিন্তু এই সাক্ষ্য পর্যাপ্ত নয় উল্লেখ করে অবশিষ্ট সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আবেদন করে দুদক। ওই আবেদন গত ৭ নভেম্বর খারিজ করে দেয় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত।