একাত্তরলাইভডেস্ক: এতিমদের অধিকার রক্ষায় কুরআন ও হাদিসের অনেক জায়গায় সতর্কবাণী উল্লেখ করা হয়েছে। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন : ‘যখন আমি বনি ইসরাইলের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিলাম যে, তোমরা আল্লাহ ছাড়া কারো উপাসনা করবে না, বাবা-মা, আত্মীয়স্বজন, এতিম ও দীন দরিদ্রদের সাথে সদ্ব্যবহার করবে, মানুষকে সৎ কথাবার্তা বলবে, নামাজ প্রতিষ্ঠা করবে এবং জাকাত দেবে, তখন সামান্য কয়েকজন ছাড়া তোমরা মুখ ফিরিয়ে নিলে, তোমরাই অগ্রাহ্যকারী।’ (সূরা-বাকারা, আয়াত : ৮৩)।
সৎকর্ম শুধু এই নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিম দিকে মুখ করবে; বরং বড় সৎকাজ হলো এই ঈমান আনবে আল্লাহর ওপর, কিয়ামত দিবসের ওপর, ফেরেশতাদের ওপর এবং সব নবী-রাসূলের ওপর, আর সম্পদ ব্যয় করবে তারই মহব্বতে আত্মীয়স্বজন, এতিম-মিসকিন, মুসাফির-ভিক্ষুক ও মুক্তিকামী ক্রীতদাসদের জন্য। আর যারা নামাজ প্রতিষ্ঠা করে, জাকাত দান করে এবং যারা কৃত প্রতিজ্ঞা সম্পাদনকারী এবং অভাবে, রোগে-শোকে ও যুদ্ধের সময় ধৈর্যধারণকারী, তারাই হলো সত্যাশ্রয়ী আর তারাই পরহেজগার।’ (সূরা-বাকারা, আয়াত-১৭৭)।
এতিমের সম্পদে অবৈধ ক্ষমতা প্রয়োগকারীদের জন্য ভীষণ শাস্তির হুমকি দিয়ে মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় যারা এতিমদের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে তারা তো তাদের পেটে আগুন ঢুকাচ্ছে, আর অচিরেই তারা প্রজ্বলিত আগুনে প্রবেশ করবে।’ (সূরা নিসা : ১০)
ইবনে জারির (রহ.) বলেন, ‘এতিমের মাল অন্যায়ভাবে ভক্ষণকারী কিয়ামতের দিন এ অবস্থায় উত্থিত হবে যে, তার পেটের ভেতর থেকে আগুনের লেলিহান শিখা মুখ, দুই কান, নাক ও দুই চোখ দিয়ে বের হতে থাকবে। যে তাকে দেখবে সে চিনতে পারবে যে, এ হচ্ছে এতিমের মাল ভক্ষণকারী।’ (ইবনে কাসীর)
এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন এক সমপ্রদায় নিজ নিজ কবর হতে এ অবস্থায় উত্থিত হবে যে, তাদের মুখ থেকে আগুনের উদগীরণ প্রকাশিত হতে থাকবে।’ সাহাবায়ে কিরাম আরজ করলেন, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! এরা কারা?’ তিনি বললেন: ‘তোমরা কি লক্ষ করোনি যে, আল্লাহ তায়ালা বলেন, যারা এতিমের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে তারা তাদের পেটে আগুন ছাড়া আর কিছুই ভক্ষণ করে না।’ (ইবনে কাসীর)