এখন অপেক্ষা শুধু ভোটের

নিজস্ব প্রতিবেদক:
সব প্রচার-প্রচারণা শেষ। প্রস্তুত ভোটকেন্দ্র। রাতের নীরবতা ভেঙে টহল দিচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। কে কাকে ভোট দেবেন অধিকাংশ ভোটাররা নির্ধারণও করেছেন। তাই এখন শুধু ব্যালট পেপারে সিল মারার অপেক্ষা। রাত পোহালেই বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে তা শুরু হবে। সকাল ৮টা থেকে টানা ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। একের ভোট অন্যরা যাতে সিল মেরে নিতে না পারে তা ঠেকাতে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে দাবি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
প্রথমবারের মত দলীয়ভাবে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ দেশের প্রধান দল বিএনপিও অংশ নিচ্ছে। এজন্য শুধু নারায়ণগঞ্জবাসীই নয়, পুরো দেশবাসীর দৃষ্টি এখন নারায়ণগঞ্জের দিকে।
জানা যায়, এখানে ভোটার ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯৩১। মেয়র পদে সাতজন, ৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৩৮ জন এবং ২৭টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ১৫৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ১৭৪ কেন্দ্রের ১৩০৪টি কক্ষে এসব ব্যালটে রায় জানাবেন ভোটাররা। তিন পদের জন্য ব্যালট ছাপানো হয়েছে ১৪ লাখ ২৪ হাজার ৭৯৩টি।
ভোটের দায়িত্বে রয়েছেন প্রায় চার হাজার কর্মকর্তা। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাড়ে ৯ হাজার সদস্য রয়েছেন ভোটের নিরাপত্তায়। নাসিক নির্বাচনে ১৩৭টি ভোটকেন্দ্রে বিশেষ নজর  রাখছে ইসি। এসব কেন্দ্রে ওই এলাকার ১৭৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩৭টিকে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকাকে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে দেখে সেখানে বাড়তি ফোর্স মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যে ২২ প্লাটুন বিজিবি সদস্যদের নারায়ণগঞ্জে দায়িত্ব পালনের কথা রয়েছে, তার মধ্যে ১০ প্লাটুনই থাকবে সিদ্ধিরগঞ্জে। তারা দুটি স্থানে অবস্থান নিয়ে টহল দেবেন। এছাড়া শহর এলাকায় সাত প্লাটুন ও বন্দর এলাকায় পাঁচ প্লাটুন বিজিবি থাকবে।
নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে রোববার নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে রুদ্ধদার বৈঠক করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন কৌশল নির্ধারণ নিয়ে মূলত এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
নগরীতে সোমবার মাঠে আছে ২২ প্লাটুন বিজিবি। অন্য এলাকার বাসিন্দাদের নারায়ণগঞ্জে অবস্থানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে সোমবার মধ্যরাত থেকে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান তালুকদার বলেন, সুষ্ঠু ভোট আয়োজনে পুরো শহর নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলেছেন তারা।
জানা গেছে, মঙ্গলবার  থেকে র্যা বের ২৭টি মোবাইল টিম মাঠে নামবে। প্রতিটি দলে থাকবেন ১২ জন করে সদস্য। প্রতিটি ওয়ার্ডে পুলিশের তিনটি করে মোট ৮১টি টিম টহলে রয়েছে। প্রতিটি টিমের সদস্য সংখ্যা হবে ১২ জন। নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বৈঠকে পুলিশের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। ভোটের সময় শিল্প পুলিশের ২০০ জন সদস্য জেলা পুলিশের সঙ্গে যোগ দেবেন বলে ইসি কর্মকর্তারা জানান।
এ নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ে ইসি সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বুধবার বিকেলে সাংবাদিকদের জানান, প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠানে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে।
তিনি বলেন, কারো ব্যর্থতার জন্য ভোট বিঘ্নিত হলেই দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।