ঈদকে সামনে রেখে মৌসুমী অপরাধীদের তৎপরতা বেড়েছে

মাহাবুবুর রহমান.কক্সবাজার
ঈদ বাজারকে সামনে রেখে মৌসুমী অপরাধিদের তৎপরতা বেড়েছে। প্রশাসনের কঠোর নজরদারী সত্বেও কিছু ছিনতাইকারী, ছিঁচকে চোর এবং বখাটে প্রতিনিয়ত ছোড় বড় অপরাধ মূলক কর্মকান্ড করছে। ব্যবসায়িদের অভিযোগ এসব অপরাধিদের অনেক সময় ধরলেও কিছু রাজনৈতিক বা সামাজিক ব্যাক্তি বর্গ তাদের ছাড়িয়ে নিতে আসে। আবার অনেক সময় কিছু সম্মানী মানুষের নামও তারা ব্যবহার করে। এদের হাল্কাভাবে নিলে হবে না, আস্কারা পেলে তারা বড় বড় অপরাধ করতে পারে। এদিকে সব ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রনে পুলিশ প্রশাসন সতর্ক আছে বলে জানিয়েছে পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা।
কক্সবাজার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম মুকুল জানান প্রতি বছর ঈদ বাজার কে সামনে রেখে কিছু মৌসুমী অপরাধি চক্র বের হয়, এবারও আমরা বিভিন্ন মার্কেটের সামনে তাদের দেখতে পাচ্ছি, যেমন ১৪ জুন হকার্স মার্কেটের ভেতর থেকে এক মহিলা ক্রেতার মোবাইল ছিনতাই করে, পরে ব্যবসায়িরা মিলে ছিনতাইকারীকে আটক করে। মূলত কিছু চিহ্নিত যুবক আছে যারা সারা দিন মার্কেটের সামনে দাড়িয়ে থাকে আর মেয়েদের উত্তক্ত করেআর সুযোগ পেলে ছিনতাই করে। আবার কিছু আছে সংঘবদ্ব প্রতারক চক্র এরা গ্রাম থেকে আসা সহজ সরল মহিলাদের নানান ভাবে ফাদে ফেলে মালামাল বা টাকা হাতিয়ে নেয়। তিনি বলেন বর্তমানে পুলিশ প্রশাসন প্রতিটি মার্কেটের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ দিয়েছে, সার্বিক নিরাপত্তা দিচ্ছে সব ঠিক আছে তবে প্রতারকরাও তৎপর এটাও মানুষ মনে করছে।
এদিকে সালাম মার্কেটের ব্যবসায়ি রফিক বলেন যেখানে ভীড় সেখানেই কিছু অপরাধী থাকে এবারও আছে আমরা মানুষ দেখলেই বুঝি, কে ক্রেতা আর কে ছিনতাইকারী, ৩ দিনআগে আমদের মার্কেটের এক মহিলা ক্রেতা মার্কেটিং করে উনার বাচ্চাকে নিয়ে সামনে পাব করানো জন্য ক্রয়কৃত মালামাল গুলো পেছনে রেখে কাজ করছিল ততক্ষনে পেছন থেকে তার সব মালামাল নিয়ে গেছে। মহিলা বলেছে ছিনতাইকারীরা মটর সাইকেল নিয়ে তার মালামাল নিয়ে গেছে। এরা আসলে মৌসুমী অপরাধী, আবার কিছু আছে চিহ্নিত তাদের পেশায় হচ্ছে এগুলো করা। তিনি বলেন এমনকি কিছু মহিলা ও আছে যারা নানান ভাবে প্রতারনা করে।
কক্সবাজার সাউথ ইস্ট ব্যাংকের ম্যনেজার জাহিদ হোসাইন বলেন ঈদকে সামনে রেথে গ্রাহকরা বড় বড় লেনদেন করে, অনেক সময় টাকা নিয়ে বাইরে যেতে গ্রাহকরা একটু ভয় করে তাদেরকে আমরা নিরাপদে গাড়ী পর্যন্ত পৌছে দেওয়ার ব্যবস্থা করি। বিশেষ করে বিদেশ থেকে যারা টাকা পাঠায় তাদের ছেলে বা স্ত্রীরা টাকা নিয়ে ফিরতে কিছুটা দিধাগ্রস্থ হচ্ছে। তিনি বলেন খুব সম্ভবত কক্সবাজারে কয়েক বছরআগে ঈদের আগেই ইসলামী ব্যাংকের এক গ্রাহক থেকে ১০ লাখ টাকা ছিনতাই করেছিল ছিনতাইকারীরা। আসলে পুলিশ প্রশাসন সতর্ক থাকে তবুও তারা সুযোগ বুঝে অপরাধ কর্মকান্ড করে ফেলে। এ বিষয়ে সবাইকে আরো সতর্ক থাকতে হবে।
আরেক ব্যবসায়ি নাছির উদ্দিন বলেন শুধু যে দোকানের বা মার্কেটের সামনে অপরাধ মুলক কর্মকান্ড হবে তা নয়, অনেক সময় মহিলারা মার্কেটিং করে যাওয়ার সময় অলিগলিতে তাদের ছিনতাই করা হয়। আবার পকেট থেকে মোবাইল ছিনতাই করা হয়। অনেক সময় কোন অন্ধকার গলিতে ছুরিধরে সব টাকা পয়সাও নিয়ে ফেলে। আবার কিছু অজ্ঞান পার্টিও নাকি আছে যারা কিছু খাইয়ে সব কিছু হাতিয়ে নিয়ে ফেলে।
কক্সবাজার ইসলামী ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন সব ছেয়ে বেশি লেনদেন হয় আমাদের ব্যাংকে তাই ছিনতাইকারী বা যে কোন ধরনের অপরাধীদের প্রথম টার্গেট থাকে আমাদের ব্যাংকের গ্রাহক, এখানে বেশি প্রবাসীদের টাকা আসে তারা নিরাপদে যাতে টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারে সে জন্য আমাদের করনীয় আমরা করি। কিন্তু গ্রাহকের সাথে সব সময় সিকিউরিটি রাখা সম্ভব না, অনেক গ্রাহক আছে যারা আমাদের কাছে নিরাপত্তা চায়, আমরা তাদের যতটুকু সম্ভব নিরাপত্তা দিয়ে গাড়ীতে উঠিয়ে দিয়ে থাকি।
এ ব্যপারে কক্সবাজার সদর থানার ওসি রনজিৎ বড়–য়া বলেন ঈদকে সামনে রেখে কোন ধরনের অপ্রিতিকর ঘটনা যেন না হতে পারে সে জন্য আমরা প্রতিটি মার্কেটের সামনে এবং ব্যাংকের কাছাকাছি সার্বক্ষনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছি। তাছাড়া সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে সাথে সাথে তাকে আটক করার নির্দেশ দেওয়া আছে। তুবও কোথাও কোন সন্দেহ ভাজন কাউকে দেখলে দ্রুত বিষয় টি আমাকে জানানোর জন্য আমি ব্যবসায়ি ভাইদের প্রতি আহবান জানাব।
আলাপ কালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরফাজুল হক টুটুল বলেন পুরু জেলায় ঈদকে সামনে রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সাদা পোশাকেও আমাদের পুলিশ কাজ করছে। তিনি বলেন কোথাও কোন ধরনের সন্দেগ মুলক কাউকে দেখলে সাথে পুলিশে খবর দেওয়ার জন্য আমি সবাইকে অনুরোধ জানাচ্ছি।