ইলিশ নিয়ে দিনভর নাটকীয়তা

একাত্তরলাইভডেস্ক: বরিশালের বাবুগঞ্জে ইউএনও ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের মধ্যে ইলিশ নিয়ে দিনভর নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে।ইউএনও আফরোজা বেগম পারুলের বিরুদ্ধে অভিযান থেকে উদ্ধার করা ইলিশ নিজ বাসায় নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রিফাত জাহান তাপসী।অন্যদিকে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের অনুরোধে তার পরিচিত জেলেকে ইলিশসহ আটকের পর ছেড়ে না দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানান ইউএনও।এ নিয়ে আজ সোমবার দিনভর উপজেলাজুড়ে নানান নাটকীয়তার সৃষ্টি হয়।সবশেষে জেলা প্রশাসক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামানের হস্তক্ষেপ ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে ‘ইলিশ-বিরোধের’ উত্তেজনা প্রশমিত হয়েছে।উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রিফাত জাহান তাপসী জানান, অভিযানে জব্দ করা ইলিশ ইউএনও তার বাসভবনে আনেন- এমন বিষয়টি জানতে পেরে জেলা প্রশাসক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামানকে অবহিত করেন। পরে থানা পুলিশ সঙ্গে নিয়ে ইউএনও’র বাসার সামনে গিয়ে দেখতে পাই ইউএনও পারুল এবং তার দুই কর্মচারী বড় একটি বস্তা এবং দুটি ব্যাগ ভর্তি ইলিশ নিয়ে বের হয়েছেন।এ ব্যাপারে ইউএনও আফরোজা বেগম পারুল জানান, রোববার দিবাগত রাতে অভিযানের পর একটু বিশ্রাম নিতে সোমবার সকালে আমি বাসায় আসি। এরপর উদ্ধার হওয়া ইলিশ এতিমখানায় বিতরণের জন্য বের হই। কিন্তু সে মুহূর্তে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অপবাদ নিয়ে হাজির হন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান।তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের অনুরোধ থাকা সত্ত্বেও তার পরিচিত এক জেলেকে ছেড়ে না দেওয়ায় তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত।এলাকাবাসী জানান, রোববার দিবাগত রাতে মা ইলিশ রক্ষায় অভিযানে বের হন ইউএনও। অভিযান শেষে আজ সকালে বাসায় ফেরেন তিনি। এ সময় একটি বস্তা ও দুই ব্যাগ ভরা ইলিশ ছিল। সকালে রহস্যজনকভাবে ইউএনও’র বাসার সামনে পুলিশ নিয়ে হাজির হন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান। এ সময় ইলিশ নিয়ে ইউএনও ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের সঙ্গে বাগবিত-া হয়।এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, নদীতে অভিযান চলাকালে এলাকার একাধিক দলীয় নেতা কিংবা জনপ্রতিনিধি অথবা প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে এক শ্রেণির জেলে ইলিশ শিকার করে যাচ্ছে। সরকারের ওই নিষেধাজ্ঞা রক্ষার্থে অভিযান পরিচালনা করছেন ইউএনও আফরোজা বেগম পারুল।বাবুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুস সালাম জানান, ইউএনওর বাসার সামনে থেকে ইলিশ উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু ইলিশগুলো আত্মসাৎ করা হয়েছে কিনা তা এখনই কিছু বলা যাবে না।বরিশালের জেলা প্রশাসক ড. গাজী সাইফুজ্জামান জানান, ঘটনা তদন্তে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনকে।অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেন জানান, ইউএনও’র সঙ্গে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের বিরোধ থাকায় বিষয়টিকে অতিরিক্ত রূপ দেওয়া হয়েছে। ইউএনও’র বাসায় কোনো ইলিশ পাওয়া যায়নি। তবে তার গাড়িতে ছিল।