সাভার প্রতিনিধি:
আশুলিয়ার তৈরি পোশাক শিল্পে অরাজক পরিস্থিতি তৈরিতে সহায়তা আর শ্রমিকদের উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে বেসরকারি টিভি চ্যানেল একুশে টেলিভিশনের ও দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাভার প্রতিনিধি নাজমুল হুদাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল শুক্রবার রাতে আশুলিয়ার বাইপাইল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে নেওয়া হয় গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে।
এ সময় জব্দ করা হয় তার মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও ব্যক্তিগত গাড়িটি।
আশুলিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) নাজমুল হাসান ফিরোজ জানান, গতকাল রাতেই আশুলিয়া থানায় পুলিশ বাদী হয়ে নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা করেছে। মামলায় তার বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন ও ফেসবুকে ভুয়া আইডি খুলে মিথ্যা তথ্য প্রচারের অভিযোগ আনা হয়।
তিনি আরো জানান, একাধিক নাশকতা মামলার পলাতক আসামি বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ সরকার গত ১৩ ডিসেম্বর নাজমুল হুদাকে মালয়েশিয়ায় নিয়ে যান। ফিরে আসেন ১৮ ডিসেম্বব। সেখান থেকে ষড়যন্ত্র করে বহুবার গার্মেন্টস শ্রমিকনেতা রফিকুল ইসলাম সুজন ও শামীমের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন নাজমুল। কি বিষয়ে এতো কথা বলেছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
খোঁজ করা হচ্ছে পলাতক আসামি বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ সরকারকে।
এদিকে অব্যাহত শ্রমিক অসন্তোষের মুখে শিল্প মালিকদের অনির্দিষ্টকালের জন্যে কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত গড়িয়েছে চতুর্থ দিনে।
শিল্প এলাকায় যে কোন ধরনের অরাজক পরিস্থিতি মোকাবেলায় কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। জোরদার করা হয়েছে র্যাব, পুলিশ এবং বিজিবির টহল।
আশুলিয়ায় শ্রমিক অসন্তোষে এখন পর্যন্ত সাংবাদিক, সাভার উপজেলার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মিনি আক্তারসহ ২৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে ১১ জনকে।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা ছাড়াও রয়েছেন একাধিক ঝুট ব্যবসায়ি।পুলিশের পক্ষ থেকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে আটককৃতদের সাতদিনের পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়।
তবে আটককৃতদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়ে আগামী সোমবার শুনানির দিন ধার্য্য করেছেন আদালত।
এছাড়াও আশুলিয়ায় পোশাক শ্রমিকদের উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য ডা. দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবুসহ দেড় হাজার শ্রমিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ঢাকার পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমান বলেছেন, পোশাক শিল্প অসন্তোষের নেপথ্য নায়কদের কোন ছাড় নয়। আগের চেয়ে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়া সত্বেও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।