কে. এম. রুবেল, ফরিদপুর
আজ ১৭ ডিসেম্বর ফরিদপুর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর শক্রমুক্ত হয় ফরিদপুর জেলা। বিশেষ করে পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগী বিহারিরা তখন পর্যন্ত তাদের পরাজয় স্বীকার না করে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে থাকে। সারা বাংলাদেশে চুড়ান্ত বিজয়ের একদিন পর ১৭ ডিসেম্বর ফরিদপুর শক্রমুক্ত হয়।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিজয় অর্জিত হয়। কিন্তু ফরিদপুর জেলার মানুষদের বিজয়ের আনন্দ উপভোগ করার জন্য একদিন বেশী অপেক্ষা করতে হয়। ফরিদপুরে পাকিস্তানী বাহিনী আত্মসমর্পণ করে ১৭ ডিসেম্বর।
১৭ ডিসেম্বর সকালে মুক্তিবাহিনী ফরিদপুরে অবস্থানরত পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর যশোর ক্যন্টনমেন্টের রিজিওনাল হেড কোয়াটারের প্রধান ব্রিগ্রেডিয়ার মঞ্জুর জাহানজের আরবার কাছে আত্মসর্পণের জন্য বার্তা পাঠায়। কিন্তু তিনি ভারতীয় বাহিনীর নিকট আত্মসমর্পণ করবেন বলে জানান।
সকাল ১০টায় চার্লি সেক্টরের অধীনে ঝিনাইদহ, মাগুরা, ফরিদপুর অঞ্চলের মিত্র বাহিনীর বাহিনীর অধিনায়ক ব্রিগেডিয়ার ব্রজেন্দ্রনাথ ফরিদপুরে আসেন। স্থানীয় ময়েজ মঞ্জিল লনে পাকিস্তানি বাহিনীর কর্মকর্তারা বেলা ১১টায় সমবেত হন। এ সময় পাকিস্তানি ব্রিগেডিয়ার ভারতীয় ব্রিগেডিয়ারের হাতে অস্ত্র তুলে দেন। এরপর পাকিস্তানি সেনারা একে একে অস্ত্রসমর্পণ করে।
নারী নেত্রী ও সাংস্কৃতিক কর্মী নাজমা আক্তার বলেন, স্বাধীনতার ৪৫বছর অতিবাহিত হলেও এখন ও অনেক যুদ্ধ স্থান অরখিত অবস্থায় পড়ে আছে। দ্রুত এই সকল যুদ্ধ স্থানে শহীদদের নাম সম্বলিত স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণ করার দাবী জানান। তিনি আরর বলেন, আগামী প্রজন্মকে স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস জানাতে হলে যুদ্ধক্ষেত্রের প্রতিটি স্থানে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মান করতে হবে।
পরে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা সার্কিট হাউসে বাংলাদেশের পতাকা উত্তলন করেন বিজয়ের উল্লাস করেন।
তরুন প্রজন্মের সাজ্জাত বাবু বলেন, যে কয়টি স্থানে স্মৃতি সৌধ নির্মান করা হয়েছে তাও রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে নষ্ট হতে চলেছে। ২৬মার্চ, ১৬ডিসেম্বর আসলে ঔসকল স্থানের কদর বাড়ে। দিবস শেষে হলে কেউ আর খোজ রাখেনা। আমি চাই সারা বছর স্মৃতি সৌধগুলোর খেয়াল রাখতে হবে এবং যে সকল স্থানে স্মৃতি সৌধ নির্মান হয়নি সেখানে দ্রুত স্মৃতি সৌধ নির্মান করতে হবে।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা, সাংস্কৃতিক কর্মী ও তরুন প্রজন্মরা মনেকরেন আগামী প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হলে প্রত্যেকটি প্রত্যেকটি গণকবর ও বদ্ধভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করতে হবে এবং সঠিক ভাবে রক্ষনা বেক্ষণ করতে হবে।