আগৈলঝাড়া প্রতিনিধিঃ উৎসব মুখর পরিবেশে কোন রকম বিশৃংখলা ছাড়াই জনগনের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহনের মধ্য দিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-১ আসনের আগৈলঝাড়া উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে কোথাও ধানের শীষ ও গোলাপ ফুলের কোন এজেন্ট পাওয়া যায়নি। দুই একটি কেন্দ্রে হাতপাকার এজেন্ট পাওয়া গেছে।
আগৈলঝাড়া ও গৌরনদী উপজেলা নিয়ে গঠিত বরিশাল-১ আসনে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জাতির পিতার ভাগ্নে বর্তমান এমপি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী সাবেক এমপি জহির উদ্দিন স্বপন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী রাসেল সরদার মেহেদী ও জাকের পার্টির মনোনীত গোলাপ ফুল প্রতীকের প্রার্থী বাদশা মিয়া (মুন্সি)সহ চার জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। ভোট কেন্দ্রের পথে পথে সেনা, বিজিবি, র্যাব ও পুলিশ সদস্যদের টহল, কেন্দ্রে আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের নিরাপত্তায় সাধারণ ভোটাররা শীত উপেক্ষা করে সকাল থেকেই ভোট প্রদানের জন্য দাড়িয়েছিল দীর্ঘ লাইনে।
আইন শৃংখলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে রোববার সকাল আটটায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়। উপজেলার সেরাল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে সকাল সাড়ে আটটায় নিজের ভোটা প্রদান করেন বরিশাল-১ আসনে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি। ওই কেন্দ্রেই তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ভোট প্রদান করেছেন।
উপজেলা সদরে ভেগাই হালদার পাবলিক একাডেমী বিদ্যালয়, শ্রীমতি মাতৃ মঙ্গল বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গৈলা সরকারী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রাজিহার মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বাকাল হাই সংলগ্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কোদালধোয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ফেনাবাড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাকুরিতা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, নগরবাড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাজিহার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় নারী ও পুরুষ ভোটারের দীর্ঘ লাইন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কোন কেন্দ্রে ধানের শীষ ও গোলাপফুল মার্কার কোন এজেন্ট দেয়নি সংশ্লিষ্ঠ দলের প্রার্থীরা।
তবে কিছু কেন্দ্রে এজেন্ট দিয়েছেন হাতপাখার প্রার্থী। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রেই নারী-পুরুষ ভোটাদের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিতে দেখা গেছে। উপজেলার নগড়বাড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নাতির হাত ধরে ভোট দিতে আসেন শতবর্ষী আদরমনি (ভোটার নং-৮৩৪)। তিনি বলেন, নির্বাচনী পরিবেশ ভাল থাকায় তিনি তার নাতীর সাহায্য নিয়ে ভোট কেন্দ্রে এসেছেন। বয়সের কারণে তাকে আগে ভোট দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন প্রশাসন। ওই কেন্দ্রসহ কেন্দ্রে গিয়ে নারী ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে।
দুপুর ২টা পর্যন্ত কোথাও কোন সহিংসতা বা অপ্রিতীকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। বরিশাল-১ আসনে মোট ভোটার ২লাখ ৫৭ হাজার ২২০জন। থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আফজাল হোসেন ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস জানান জানান, ১০জন করে পুলিশ সদস্য নিয়ে প্রতি ইউনিয়নে দু’টি করে মোট ১০টি মোবাইল টিমছাড়াও পুলিশের ৭ সদস্যর ২টি ষ্ট্রাইকিং ফোর্স, ২০ সদস্যর বিজিবি’র ২টি ষ্ট্রাকিং ফোর্স, ১৬ জন র্যাব সদস্যর ষ্ট্রাইকিং ফোর্স আইন শৃংখলা রক্ষা ও জনগণের সার্বিক নিরাপত্ত প্রদানে নিয়োজিত রয়েছে।
নির্বাচনী অপরাধে তাৎক্ষনিক বিচারের জন্য ৩ জন নির্বাহী ম্যাজিষ্টেটের মধ্যে ১ জন ম্যাজিষ্ট্রেটেটের নেতৃত্বে সেনা বাহিনী ছিল প্রস্তুত। কেন্দ্রের জন্য পুলিশ ও পর্যাপ্ত আসনার সদস্য দ্বায়িত্ব পালনে নিয়োজিত রয়েছে। মাঠে ছিল সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন।
সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস সাংবাদিকদের জানান, সরকারের আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের সার্বিক নিরাপত্তা প্রদানে অবাধ, নিরপক্ষে, সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে নির্ভয়ে সাধারণ ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত
করেছেন। ৫০টি ভোট কেন্দ্রর মধ্যে ১০ টি ভোট কেন্দ্র ঝুকিপূর্ণ তালিকাভুক্ত করে ওই সকল কেন্দ্রের দ্বায়িত্বে বাড়তি আইন শৃংখলা নিয়োগ করায় এমন উৎসব মুখর পরিবেশ পেয়ে জনগণও খুশি জানিয়ে তিনি নির্বাচনে কোথাও কোন অপ্রিতীকর ঘটনার কথা শোনা যায়নি বলেও জানান তিনি।