আগৈলঝাড়া প্রতিনিধিঃ বরিশালের আগৈলঝাড়ায় আমনের বাম্পার ফলনের পরেও বাজারে দাম না থাকায় হাসি নেই কৃষকের মুখে। কৃষকরা এই জন্য ধান চাষে অনিহা প্রকাশ করছে। সরকারের কৃষি মন্ত্রনালয়সহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে কৃষকরা।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে ৭শ ৭০হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে চাষাবাদ করেছে কৃষকরা।
এরমধ্যে ১শ ৭৫ হেক্টর উফসী আমন ও ৫শ ২৫ হেক্টর স্থানীয় উফসী জাতের আমন ধান। তবে লক্ষ্যমাত্রার বেশী আমন আবাদ হয়েছে আগৈলঝাড়া উপজেলায়। চাষীরা ভাল ফলন পেয়ে ধান কাটা শুরু করেছে। উপজেলায় বসুন্ডা গ্রামের চাষী কমলেশ হালদার জানায়, গত বছরের চেয়ে এবছর আমনের ফলন দ্বিগুন হয়েছে। আগে প্রতি ৪ শতক জমিতে ১ মন ধান হলেও এবছর ওই ৪ শতক জমিতেই ২ মনের উপরে ফলন হয়েছে।
বাম্পার ফলন পেয়ে খুশি কৃষকেরা। কমলেশ আরও জানায়, সরকারের কৃষি বিভাগ থেকে কর্মকর্তারা আমন চাষিদের কৃষি উপকরণ দেয়ায় তাদের চাষাবাদে কোন সমস্যা হয়নি।
আমনের বাম্পার ফলন হলেও বাজারে দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন কমলেশসহ অনেক চাষীরা। কারণ, আমনের স্থানীয় বাজার মূল্য মন প্রতি ৫শত টাকা থেকে ৫শত ৫০ টাকা। তাই চাষীরা কৃষি মন্ত্রনালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। উপজেলায় ফুল্লশী গ্রামের চাষী রতন দত্ত জানায়,
এ বছর ধানের বাম্পার ফলনে অনেক খুশি। বর্তমান সরকার বিভিন্ন কৃষি বীজ ও কৃটনাশক ঔষধ দিয়ে এবং কৃষি অফিসারদের ভালো পরামর্শে উন্নত বীজ বপন করে আগের চেয়ে ভালো ফলন পাচ্ছি। আমরা আর বাপ-দাদার মত কৃষি কাজ করি না।
এতে করে কৃষি কাজ করেও আমরা বর্তমানে লাভবান হতে পারছি না। কারন ধানের উৎপাদন খরচের চেয়ে বাজার মূল্য অনেক কম হওয়ায় চাষীরা হতাশাগ্রস্থ হয়ে পরেছে। তাই অনেক কৃষকরা আমন ও ইরি-বোরো চাষবাদ করতে অনিহা প্রকাশ করছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন বলেন, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২শ ৩০ হেক্টর জমি নিয়ে মোট ১হাজার হেক্টর জমিতে এবছর আমন আবাদ করেছেন চাষিরা। এই উপজেলায় আমনের আবাদ খুবই কম ছিল।
আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ব্রি-৭৭ হেক্টর প্রতি ফলন হয়েছে সাড়ে পাঁচ মেট্টিক টন ও ব্রি-৫২ ফলন হয়েছে ৫দশমিক ২টন। ধান কাটার ভরা মৌসুম শুরু হয়েছে।
তবে আমনের স্থানীয় বাজার দর নিয়ে তিনিও অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, গত বছর ও তার আগের বছর বোরো ধানের সময় কৃষক সরকারের কাছে ধান বিক্রি করে লাভবান হয়েছিল।
খাদ্য মন্ত্রনালয় থেকে ধান কিনলেও গুদাম কর্মকর্তার তালবাহানা ও বিভিন্ন কারসাজিতে এবছর সরকারের কাছে কৃষকেরা সরাসরি উল্লেখযোগ্য ধান বিক্রি করতে পারেনি।
আমন ক্রয়ের জন্য সরকারের সিদ্ধান্ত থাকলেও মাঠ পর্যায়ে তা বাস্তবায়নের জন্য নজরদারি বাড়ানোর জন্য কৃষি মন্ত্রনালয়ের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন তিনি।